“নালিশ”
——®সুপ্তোত্থিতা সাথী
সবাই বলে তুই নাকি মা দুগ্গা! জগৎ করিস আলো!
আমার কাছে তবু আমার,মায়ের কোলটা ভালো।
শুনেছি তুই স্বর্গে থাকিস,স্বর্গটা কি মস্ত বড় বাড়ি?
যেমন ঠিক ওই ও পাড়ার রূপকথাদের বাড়ি?
শুনেছি তোর মস্ত ত্রিশূল,যুদ্ধ করিস, অসুর মারিস।
আমার মা-ও যুদ্ধ করে,মায়ের মতোন গতরখাটা- কাজ বুঝি তুই পারিস?
ঘুম ভেঙে রোজ কাজে বেরোয়,রান্না করে,
বড়ো লোকের বাসন মাজে,ঘরও মোছে ধৈর্য্য ধরে।
তুই এসবের বুঝবি কি আর!তোর কাজ তো তাকিয়ে থাকা-
জানিস;আমার মায়ের পায়ের তলায় আস্ত দুটো চাকা!
একের পর এক কাজ করে যায় ঠিকে বাড়ি,
তোর তো কত দামী পোষাক,আমার মায়ের ছেঁড়া শাড়ি,
হাতের তলায় কড়া পড়া……
তার ভেতরেই অনেকখানি সোহাগ ভরা।
বুকের উপর চেপে ধরে,ঝরঝরিয়ে কান্না ঝরে-
দুগ্গা মা তুই বলতে পারিস,মা’রা কেন দুঃখ করে?
পুজো এলেই সবাই কেমন হল্লা করে,জামার বাহার,
ওই যে গো ওই রূপকথারও পোষাক-পাহাড়!
গেলো বছর ওই তো আমায় দিয়েছি একখানা ফ্রক,লাল টুকটুক;
এখন ওটার রঙ চটেছে,নানান সুতোর রকমারি ফোঁড় উঠেছে।
গণেশ দাদা,লক্ষী দিদির জামা,শাড়ি ঝাঁচকচক,
বিদ্যাদিদি,কাতু দাদাও কম যায় না,রঙ ঝকমক।
আমায় এসব মানায় যে,গরীব বলে…
গরীব হলেও, মন খারাপে আস্তানা পাই মায়ের কোলে||
–◆◇◆◇◆◇◆–