ঋতু বদল হয় কর্মময় ব্যস্ত জীবনে বুঝি কয়জনা? আজকাল হুল্লোড়টা একটু বেশি। আনন্দ উপভোগ থেকে যেন একটা দানবীয় উন্মাদনায়ই উৎসাহী। স্নিগ্ধ, শান্তভাবে উৎসবকে উপলব্ধি করা শেখানোর পাঠ উঠে গেছে। আর দিলেও কেউ নেয়না। জীবনে চলার পথে এক চিলতে অন্যরকমকে কীভাবে গ্রহণ করতে হয়
সেটা নিয়ে কেউ আর চিন্তিত নয়। এই ধরুন- বসন্ত এসেছে। কৃষক তাঁর চাষের মধ্যে দিয়ে ঋতুকে বরণ করে, ব্যবসায়ী ঋতু ভিত্তিক ব্যবসায় সকলকে বুঝিয়ে দেয়। আমাদের ছিলেন তুলসী কাকা।
প্রতিবছর রং আর পিচকারীর পশরা সাজিয়ে বসতেন দোলের আগে থেকেই। সবার সাথে কত মজা করতেন, সাবধান করে দিতেন শিশু- কিশোরদের রঙ খেলা সম্পর্কে। নিজে একটা ফতুয়া পরে মাথায় একটা হ্যাট প’রে মুখে রঙ মেখে সঙ সেজে আবীর বিক্রি করতে বসতেন- এটাই ওঁর সাজ। আর আমরাও ওঁকে ওরকম দেখতেই অভ্যস্ত ছিলাম। কিন্তু আজকাল শিশু কিশোরদের তুলসী কাকা নেই। ওরা হয়তো ঘরে বসেই আবীর খেলবে কিংবা ছাঁদ থেকে রঙের বেলুন ছুড়বে পথচারীদের। পাড়ার সবাই মিলে একটা প্রভাতফেরি করে দুপুরে একসাথে পাত পেড়ে মধ্যাহ্ন ভোজের সে আনন্দ আজ আর কেউ চায় না যেন। আসলে কিসে যে কী আনন্দ, আনন্দ কাকে বলে- আজ চিনতে বুঝতে অসুবিধা হয়।
কিন্তু আজও তো পলাশ, শিমুল, কৃষ্ণচূড়া তাদের পশরার ডালি সাজায়। আমরা মানুষ বটে, চেতনার রঙ যেন ক্রমশ ফিকে হয়ে যায়।