ডাক্তার ক্যাম্পবসের সাথে কথা বলে তাকে সাথে নিয়ে গেলেন সুপারিনটেনডেন্টের কাছে।তিনি সব দেখলেন। সব শুনে আর দেরি করতে চাইলেন না।ততক্ষণে গ্যালি থেকে আরও ৩-৪ জন সহকর্মী এসে গেছে।পরিস্থিতি জটিল বুঝতে পেরে অন্যত্র ট্রান্সফার করার চেষ্টা করলেন। তখন রাত অনেক তাই ল্যান্ডে আনা সম্ভব নয়। DLB-332 পোর্ট থেকে অনেক দুরে মাঝ সমুদ্রে ছিল। এমন ইমারজেন্সিতে হেলিকপ্টার ছাড়া ল্যান্ডে আনা সম্ভব ছিল না। তাই যোগাযোগ করলেন তখন কিছুটা দূরে কোম্পানির অন্য একটা বড় শিপে। মুহূর্তের মধ্যেই বোট এসে গেলে তার সঙ্গে গেলেন আরও একজন ডাক্তার। ঐ শীপের ওটিতে অ্যানেসথিতার ঔষধ থাকায় শুরু হল অপারেশন। তখন সে বুঝতে পারল আঙ্গুল চিরে কাঁটা বের করা হচ্ছে। আস্তে আস্তে যন্ত্রণা বাড়তে লাগলো তবুও সহ্য করে চোখ বুজে রইল। অপারেশনের পর বোটে করে ফিরে এলো ওদের শিপে সোজা সুপারিনটেনডেন্টের কাছে। সব দেখে তিনি ক্যাম্পবসকে নির্দেশ দিলেন এমতাবস্থায় দুদিন রেস্টে থাকার জন্য।এই পরিস্থিতি তে কোনরকম কাজ করতে নিষেধ করলেন। সেদিন আর কিছুই ভালো লাগছিল না। প্রচন্ড যন্ত্রণা করেই চলেছে তাই ওষুধ খেয়ে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়লো। সকাল হতেই কেবিনে ব্রেকফাস্ট পৌঁছে গেল। তখন তা দেখেই তার একটু রাগ হলেও থ্যাঙ্কস বলে বললো- তুমি বরং এটা মেস রুমে নিয়ে যাও আমি ওখানেই যাচ্ছি। সবার সাথে একত্রে বসে খেয়ে নেব। শুনেই সে বলে উঠলো- না না, ক্যাম্পবস জানতে পারলে রেগে যাবেন। সে বলল ঠিক আছে, তুমি নিয়ে চলো- আমি দেখছি।পরে মেস রুমে হঠাৎ ক্যাম্পবস তাকে দেখে অবাক হয়ে বললেন -সুদীপ! তুমি এখানে? তোমাকে না পুরো রেস্টে থাকতে বলেছি! সে বলল- স্যার! আমার হাতের একটা আঙ্গুলে সামান্য অপারেশন হয়েছে। গায়ে তো কিছু হয়নি। আমার যা হয়েছে এটা আমার কাছে সামান্য। এর জন্য অন্যকে দিয়ে আমায় খাবার সার্ভ করাবার দরকার হবে না–। তারপর সবার সাথে বসে ব্রেকফাস্ট করলো। রেস্ট নিলো দুদিনের মতো তবুও প্রতিদিন গ্যালিতে এসে দাঁড়িয়ে দেখতো আর এক হাতে যতটুকু কাজ করা যায় সেটুকু করতো। এমনটা দেখে তার প্রতি কর্তৃপক্ষের একটা সুনজর এসে পড়ে। শীপ থেকে এসব রিপোর্ট যেতে থাকে কোম্পানির হেড অফিসে। আস্তে আস্তে ব্যথা কমতে লাগলো।আঙ্গুলও ভালো হয়ে উঠলো। শুরু হয়ে গেল আবার পুরোদমে আগের মত কাজ। শীপের পরিবেশ ছিল অত্যন্ত সুন্দর। সকল ক্রিউদের মধ্যে ছিল প্রচন্ড মিলমিশ তাই সেখানে কাজের প্রতি বেশ মন লেগে গিয়েছিল। কিন্তু আস্তে আস্তে দিন এগোতে লাগল আর কমতে থাকলো নির্দিষ্ট এগ্রিমেন্টের সময়সীমা। তাই ২০শে অক্টোবর২০০৮ একত্রে তাদের ৩৭ জনেরই সাইন আপ হল। তখন সকাল ১১টা। বিকাল ছটা নাগাদ বোট আসলে সবাইকে হাত নেড়ে টা টা বাই বাই করে রওনা হলো পোর্ট অভিমুখে। ঘন্টা দুয়েকের মধ্যেই পোর্টে পৌঁছে দেখতে পায় এজেন্ট গাড়ি নিয়ে অপেক্ষায়।তখন তাদের সবাইকে নিয়ে পৌঁছালো হোটেলে। সেখানে রাত কাটাতেই পৌঁছে গেল টিকিট আর ভিসা। রাতেই ফ্লাইট।তাই তাড়াতাড়ি ডিনার সেরে সবাই বেরিয়ে পড়ল সৌদি আরবের DAMAM এয়ারপোর্টের দিকে।সেখান থেকে বাহরিন। সেখানে তিন ঘন্টা অপেক্ষার পর অন্য ফ্লাইটে আসবে মুম্বাই এয়ারপোর্ট। সকালে সেখানে পৌঁছেই গিয়ে উঠল সান্তাক্রুজে শামসুর ভাইয়ের রুমে। বাড়িতে ফোন করে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সংবাদ দিতে লাগলো। সেখানে সকলের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করে বেলাপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হল। বেলাপুরে যে কোয়ার্টারে থাকতো সেটা ছিল সরকারি আবাসন। সুসম্পর্কের বন্ধনে সেখানে ভূপালের ভাগ্নে দীপুর সাথে একত্রে শেয়ার করে থাকার প্রস্তাব দেয় ভূপাল। আমিও নিশ্চিন্তে তাতে সম্মত হয়ে ছেলেকে সেখানে পাঠিয়ে দিলাম।সেখানে মাসিক ভাড়া ভাগাভাগি করে একত্রে থাকতে লাগে। সেই সময় যোগাযোগ হয় ক্যাম্পাইজির সঙ্গে। ভারী অমায়িক লোক। বাড়ি বেঙ্গালুরু।চাকরি সূত্রে মুম্বাই।সেখানে একত্রে থাকায় তাঁর সাথে গড়ে ওঠে এক আন্তরিকতার বন্ধন।বয়সে একটু বড় হলেও তারা সবাই মিশেছে বন্ধুর মতো। সেখানে পেয়েছে বন্ধুর মতো অ্যাকাউন্টস অফিসার মিঃ অরবিন্দ গুপ্তাকে। তিনি দিল্লিবাসী- চাকরি সূত্রে মুম্বাই। এমন সুন্দর পরিবেশের মিলমিশ কিছুতেই ভুলবার নয়। বিশেষ করে ছেলের প্রতি ক্যাম্পাইজির অকৃত্রিম ভালবাসায় কৃতজ্ঞতা না জানিয়ে পারছিনা। মাঝে মাঝে আমার সাথে ছেলে কথা বলিয়ে দিত। বিনিময় হতো আমাদের মাঝে প্রায়ই শুভেচ্ছা– জাহাজে বিভিন্ন দেশের ক্রিউরা তাদের পছন্দমত সিনেমা দেখতো প্রত্যেকের রুমে নিজস্ব DVD চালিয়ে। এই সময়ে কয়েকদিনের জন্য দীপু বাড়ি আসে। ছেলে আমাকে জানালে আমি তার পছন্দমত ২৩ খানা DVD প্রিন্ট করে দীপুর কাছে পাঠিয়ে দিই। সমুদ্রের নোনা জলে কাজ করতে গিয়ে তার রিস্টওয়াচটি নষ্ট হয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে একটা ভালো ঘড়িও সেই সাথে পাঠালাম।পেয়ে খুব খুশি হল।৩০শে অক্টোবর ২০০৮। মুম্বাই থেকে ছেলের পাঠানো পার্সেল পেলাম। শীপে কর্মরত অবস্থায় ক্যাপ্টেন সহ অন্যান্যরা বিভিন্ন সময়ে ভালোবেসে নানারকম গিফট দিয়েছেন। কোম্পানির নির্দেশ মত কয়েকদিনের মধ্যে আবার জয়েনিং করতে হবে জেনে এই সময়ে বাড়ি আসার সিদ্ধান্ত বাতিল করে।তাই এইসব গিফ্ট পাওয়া জিনিস পার্সেল করতে বাধ্য হয়।৭ই নভেম্বর ডাকযোগে সমুদ্রে কর্মরত নানা ধরনের ছবির নেগেটিভ পাঠিয়ে দেয়। সেগুলি ওয়াশ করিয়ে স্মৃতিস্বরূপ রেখে দিই। ASMAC থেকে ২০শে নভেম্বর ইন্টারভিউ কল আসে।সেই মতো যোগাযোগ করে আবার বিদেশ যাবার জন্য তৈরি হতে থাকে কিন্তু এত বছর সমুদ্রে কাজ করে যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, তাতে অতি সহজেই ন্যার্য অন্যার্য বুঝতে পারতো। সেখানে তখন হিসাব বহির্ভূত বেশি সার্ভিস চার্জ দাবি করায় সেখান থেকে যাওয়া স্থগিত রাখে। ২৭শে নভেম্বর ২০০৮ মুম্বাইয়ের তাজ হোটেল সহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় সন্ত্রাসবাদীরা মারাত্মক নাশকতা মূলক বিস্ফোরণ ঘটায়।গোটা বিশ্ব চমকে যায়। সেই দৃশ্য টিভিতে দেখে সাথে সাথেই তাকে ফোন করে জানাই।সান্তাক্রুজ থেকে অফিসিয়াল কাজ সেরে তখন সবেমাত্র ঘরে ঢুকেছে।সঙ্গে সঙ্গেই টিভিতে সেই দৃশ্য দেখল। এই সময় এসব দেখে বাড়ির জন্য মন খারাপ হয়ে ওঠে। আমরা বাড়ি আসার জন্য বারবার ফোন করতে লাগলে সে বাড়ি চলে আসে। কিছুদিন বাড়িতে কাটাবার পর এবার আর কোম্পানির কল রিফিউজ করতে পারলো না। ২৩শে মে ২০০৯ ভোর ৫টা ৫৫ মিনিটের ইন্ডিগো ফ্লাইটে মুম্বাই রওনা হয়ে গেল।অফিসে পৌঁছে টিকিট ও ভিসা নিয়ে সোজা বেলাপুর ক্যাম্পাইজির রুমে গিয়ে পৌঁছায়। পরদিন ভোরে দুবাইয়ের ফ্লাইট। সঠিক সময়ে পৌঁছানোর টেনশনে রাত্রেই ট্যাক্সি ঠিক করে রাখে। রাত তিনটেয় রুম থেকে রওনা হল।সকাল ৭টায় ফ্লাইট ছেড়ে দুপুর ১২ঃ২২ মিনিটে দুবাই পৌঁছে আমায় ফোন করে জানায় সে ভালোভাবে পৌঁছে গেছে। এয়ারপোর্টে কোম্পানির এজেন্ট তাদের রিসিভ করে JEBELALI পোর্টে অবস্থানরত PACIFIC TYPHOON শীপে পৌঁছিয়ে দেয়।পরে ফোন করে জানায় সপ্তাহখানেক শীপ সেখানে থাকবে। তারপর সেখান থেকে যাবে কাতার। ৫ই জুন ওরা রওনা হল কাতারের উদ্দেশ্যে। এবারের কন্টাক্ট স্বল্পদিনের তাই সেখানকার কাজ শেষ হয়ে যাওয়ায় ২৮শে জুন ভোরের ফ্লাইটে চলে আসে মুম্বাই।তখন AIRBORN এজেন্সির পক্ষ থেকে টেম্পোরারি ভাবে কিছুদিনের জন্য বিশাখাপত্তনমে পাঠাবার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই মত GARUDA CATARING SERVICES এর পক্ষে ট্রেনে করে পৌঁছে গেল বিশাখাপত্তনমে।একদিন হোটেলে থেকে পরদিন নির্ধারিত বিশাখাপত্তনম রিগে। ঠিক এই সময়েই গ্লোবাল কোম্পানি থেকে ইমারজেন্সি কল আসে কিন্তু অন্যত্র কর্মরত থাকায় আমি না বলে দিই কিন্তু রিগের নানান অসুবিধা ও কোম্পানির অস্বচ্ছতা অনুধাবনে সকলেই কাজ ছেড়ে দিয়ে ৭ই আগস্ট মুম্বাই ফিরে আসে। ২১শে আগস্ট ২০০৯। আন্ধেরি RKHS এর অফিসে খোঁজখবর নিতে গেলে সেখানে পুরানো ম্যানেজমেন্টের মিঃ সমীর পারেখের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়ে যায় এবং তাঁর উপস্থিতিতে সেখানে বসে প্যান কার্ডের জন্য ফরম ফিল আপ করিয়ে নেন।এবং বোম্বে হাইয়ে প্ল্যাটফর্মের জন্য নির্বাচন করেন।দেখতে দেখতে কেটে গেল ২০০৯ এর ডিসেম্বর। বিদায় দিলো পুরনো বছর। নতুন কিছু পাবার আশায় বরণ করে নিল HAPPY NEW YEAR 2010।রাত ১২টা৫ মিনিটে ফোন করলে আমাদের সকলের সাথে বিনিময় হল নতুন বছরের শুভেচ্ছা–! নতুন বছরে বিদেশের অন্য নামী কোম্পানির জয়েনিং এর জন্য প্রয়োজনীয় CDC তৈরিতে বিলম্ব হওয়ায় সাময়িকভাবে লোকাল একটি নামী হোটেলে কাজ শুরু করল। ঐ সময়ে মাঝরাতে ডিউটি সেরে রুমে ফিরে স্নান করে যখন ঘুমাতে যেত তখন অন্যদের হয়ে যেত আধা ঘুম। অপরের অসুবিধার কথা চিন্তা করে নিঃশব্দে সব কাজ সেরে যেত ঘুমাতে। কাজের শেষে ক্লান্তিতে বাড়ীর সাথে রোজ যোগাযোগ করতে পারত না। কিন্তু আমাদের প্রতিটি দিন কাটতো নানা রকম চিন্তা ভাবনায়। তার কষ্টের সব কথা আমাদের জানাত না। যখনই ফোন করতো আমি শুধু লক্ষ্য করতাম তার কণ্ঠস্বরের সাথে কথোপকথন। তাই দিয়ে বিচার কর- তাম তার সুস্থতা- অসুস্থতা এবং চিত্ত চঞ্চলতা। সে চিরকাল ছিল বড্ড চাপা। নিজে কষ্ট চেপে রেখে, কোন দিন হয়তো আধপেটা খেয়ে পয়সা জমিয়ে পরে আমার একাউন্টে পাঠিয়ে দিত। সময় সময় ATM থেকে টাকা তুলে হাতে নিয়ে ক্ষণিকদের জন্য থমকে যেতাম। বাড়িতে ওর মার হাতে দিয়ে কখনো পড়ে যেতে চোখের জল! বাড়ির সকলের কথা চিন্তা করে ওই সুদুরে বসে প্রতিদিন কি কষ্টই না করে চলেছে ! প্রতিটি দিন শুধু বিধাতার কাছে জানাতাম প্রার্থনা- জীবনে প্রতিষ্ঠিত হবার প্রয়াসে কবে ঘুচবে এই দুঃখের দিন?সেদিন কত দূরে–!! ১৪ ই ফেব্রুয়ারি ২০১০ তার জন্মদিন। রবিবার আমি তখন হরিসাহার হাটে। পরদিন দুইবার ভীষণ বিষম খেলাম।এমনিতেই সেদিন তার জন্মদিনের কথা বারবার ভেবে মনটা খুব খারাপ লাগছিল।তার উপর দুইবার বিষম! কুসংস্কার হোক আর সংস্কার হোক- মন মানলো না। ফোন করলাম কিন্তু প্রত্যুত্তর পেলাম না। বুঝলাম বেরিয়ে গেছে ডিউটিতে।ভাবলাম যখন দুপুরে রুমে আসবে তখন ফোন করবো তাই বিকাল সাড়ে চারটায় ফোন করে আমরা সবাই জানালাম HAPPY BIRTHDAY। মনের জমা ব্যথা যেন সামান্য হলেও একটু কমলো।নিজেকে একটু হালকা লাগল। প্রাণ খুলে জানালাম তার প্রতি আমাদের আশীর্বাদ। ছেলে বাইরে থাকায় তখন আমরা বড্ড অসহায় বোধ করতাম। তবুও জীবনের ক্যারিয়ার গড়তে এটাকে বাধ্য হয়ে মানিয়ে নিতে হয়েছে।বোনের উচ্চশিক্ষার উচ্চাকাঙ্ক্ষা।দাদারও ইচ্ছা, যতদূর পড়ার পড়ুক।প্রয়োজনে সে আরও কয়েকটি বছর সমুদ্রে ভেসে বেড়াবে তবুও বোন যেন মনে ব্যথা না পায়।মেয়েও বড় হয়েছে।সেও বুঝতে শিখেছে ভালো- মন্দ। এই সময়ে আর্থিক টানাপোড়েনে সে আর পড়াশোনা করতে রাজি হচ্ছিল না।আমি শুনে চিন্তিত হয়ে পড় লাম।বাবা হয়ে আমার বিবেক তখন, আঘাতে ক্ষত বিক্ষত হতে লাগলো। ভাবলাম জীবনে তাহলে এটাই হবে আমার চরম ব্যর্থতা! ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যে রবীন্দ্রভারতীতে এম এ ফার্স্ট ইয়ারে ফিলোসফিতে অনার্স নিয়ে ভর্তি করিয়ে দিলাম।খবর পেয়ে ছেলেও হল অত্যন্ত খুশি। ২৭শে ফেব্রুয়ারি ২০১০। দুবাই থেকে CARLOO SIR ছেলের সাথে বারবার যোগাযোগের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে ফোন করলেন আমায়। আমি সঙ্গে সঙ্গেই ছেলেকে CARLOO স্যারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলি। সে AIRBORNE এজেন্সির সাথে কথা বললো। তখনই আমাকে সার্ভিস চার্জের জন্য তৈরি হোতে বলে। টাকার পরিমাণটা শুনে বড় বিচলিত হয়ে পড়ি। ইতি- মধ্যে কোন্ একাউন্টে টাকা পাঠাতে হবে তা SMS করে আমায় জানিয়ে দিয়েছে। তখন নানা রকম প্রতিকূল পরিস্থিতির মাঝে টাকা জোগাড় করে ২৩ শে মার্চ ২০১০ ICICI ব্যাংকের মাধ্যমে মুম্বাই অফিসের একাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করলাম। তৈরি হয়ে গেল ভিসা ও ফ্লাইট এর টিকিট। সকল প্রস্তুতি শেষে ৫ই এপ্রিল ২০১০ রাত ১১ঃ২১ মিনিটে বেলাপুর থেকে রওনা হল এয়ারপোর্ট।২টা ৫৯ মিনিটে সে ফোন করে জানালো চেকিং হয়ে গেছে।বোর্ডিংয়ের জন্য আছে অপেক্ষায়।সকাল ৯টা ৭ মিনিটে দুবাই থেকে ফোন করে জানায় ভালোভাবে পৌঁছে গেছে। শীপে পৌঁছে বিস্তারিত জানাবে।আমরা থাকলাম অপেক্ষায়।৬ই এপ্রিল রাত ১০টায় দুবাইয়ের অপরিচিত একটা নাম্বার থেকে মিসডকল পাই। আমার মোবাইলে কলিং সিগন্যালের লাইট জ্বলছে অথচ কথা শুনতে পাচ্ছি না।দোকান বন্ধ করে ব্যস্তভাবে ছুটে গেলাম বাড়ি।ওর বোনের মোবাইল দিয়ে ফোন করে জানতে পারলাম সে তখন DULAM INTERNATIONAL কোম্পানির DULAM RESPONDER শীপে জয়েনিং করেছে।