কত্তা বনাম গিন্নী
কাকলি ঘোষ
সেদিন ভোরে কত্তামশাই
হঠাৎ গেলেন ক্ষেপে
দিব্যি বসে ঢুলতেছিলেন
চেয়ারখানি চেপে।
কী যেন এক উল্টো হাওয়া
বইল বিষম বেগে
ঝিমঝিমিয়ে কত্তামশাই
বেজায় গেলেন রেগে।
গিন্নী বলেন – কত্তা তোমার
এই বা কেমন ধারা!
তোমার জ্বালায় গেল আমার
সিরিয়ালটা মারা!
কত্তা বলেন- গিন্নী তোমার
রকমখানি বেশ
দিন রাত্তির সিরিয়াল
….. আর ঘরের দফা শেষ।
চাল ডাল আর আলুপটল
ঢালছি যতই টাকা
দিনে দিনে হচ্ছে কেবল
পকেটখানি ফাঁকা।
মাসের শেষে ফর্দ দেখে
কণ্ঠে হা- হা রব
এত টাকা দিচ্ছি এনে
যাচ্ছে কোথায় সব?
চোখ নেইকো কোনদিকেই
রিমোট হাতে ধরা
তার উপরে মোবাইল
যেন, গোদের উপর ফোঁড়া।
চোখ ঘুরিয়ে হাত নাড়িয়ে
গিন্নী বলেন ‘জ্বালা–‘
হিসেব খানা দিচ্ছি তোমায়
…. এক্ষুনি এই বেলা।
গেল মাসে এল তোমার
বোন ভগ্নিপতি
আদর করে দিলাম পাতে
ইলিশ মাছের পেটি।
তারপরেতে স্কুলে গিয়ে
ছিঁড়ল মেয়ে ফ্রক
ছোট খোকার বেজায় রকম
ট্যাব কেনার শখ।
বড়জনের কলেজ সোশ্যাল
নতুন ড্রেস চাই
জনে জনে করলে এমন
আমি কোথায় যাই!
পাশের বাড়ির মীনা আবার
শাড়ির ব্যবসা করে
গছিয়ে দিলো দু তিনখানা
হাতে পায়ে ধরে।
এর পরেতেও বলবে কিছু
হিসেব দেখি নাকো
রইল তবে এ ঘর দুয়ার
টাকা নিয়েই থাকো।
ওষ্ঠ হল থরথর
..চক্ষু ভরে ভরে
বিপদ বুঝে কত্তামশাই
দুহাত জড়ো করে।
আহা- হা করো কি করো কি গিন্নী
বোঝ নাকি মশকরা
তুমি না থাকলে ঘুচে যেত কবে
এই সংসার করা।
অশন আসন বসন ব্যসন
সকলই তোমার হাতে
ত্রিভুবন যেন বিষ হয়ে যায়
তুমি না রইলে সাথে।
চোখ ভরা জল মুখে হাসি নিয়ে
গিন্নী বলেন ‘ যাও’
অনেক হয়েছে রঙ্গ তামাশা
চায়ে চুমুক দাও।
কত্তা বলেন গিন্নী তোমার
গুনের নাইকো শেষ
গিন্নী বলেন কত্তা
তোমার পছন্দটা বেশ।।
–~০০০XX০০০~–
দারুন দারুন দারুণ