প্রতিদিন হোক পরিবেশ দিবস
সুপর্ণা দত্ত
পরিবেশ ছিল একদা বিশ্বে সুনীল আকাশের নীচে
শ্যাম বনানী, শীতল জল,পাহাড় বিভিন্ন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে,
আর ছিল পশুদের নিশ্চিন্ত বাসস্থান, পাখিদের কলরব
ছিল বিশুদ্ধ মুক্ত বাতাস আর খোলা মাঠ-ঘাট।
আজ সূর্যের প্রখর তাপদাহে যেন ঝলসে যাচ্ছে এই বিশ্ব,
প্রচন্ড গরমে বৃষ্টির জল যেন আজ হয়েছে নিঃস্ব,
প্রকৃতির এরূপ ভয়াবহতা হয়ে উঠেছে দুঃসহ যন্ত্রণার
জনজীবন অতিষ্ঠ আজ,তবু যেন কিছুই তো নেই করবার।
প্রকৃতি আজ রুষ্ট আমাদেরই ক্রিয়কলাপে
আমরা যে আজ মত্ত হয়েছি বড়োই নগরকেন্দ্রিকে,
বিপুল জনস্রোতের একটা মাথা গোঁজার ঠাঁই তো চাই
তাই বন জঙ্গল আজ নির্দিধায় সাফ করেছি আমরাই।
ভরিয়ে দিয়েছি ছোটো বড়ো পুকুর-ডোবা,খাল-বিল
গড়ে তুলেছি সেখানেই গগন ভেদী বিল্ডিং।
শিশুদের জন্য গড়েছি শিশু- উদ্যান, লেক-পার্ক
সবই তো কৃত্রিম, তাতে প্রকৃতির নেই কোনো মত।
মাটির ছোঁয়া আজ পায় না মানুষ
দূষিত হয়েছে মাটি, আমরা হারিয়েছি হুঁশ।
বেঁধেছি আজ মাটিকে আমরা ইঁট-পীচ-খোয়া ঢেলে
আপনার সুখে ভরেছি প্রকৃতিকে লৌহ কারাগারে।
গগন ভেদী অট্টালিকায় আছে কত পরিবার
একটি পরিবার পিছু একটি গাছও নেই আর,
মুক্ত বাতাস পেতে নেই কোনও খোলা মাঠ
পাগলা-হাওয়া, দখিণা-বাতাসের চুকে গেছে পাঠ।
বদ্ধ ঘরের বন্ধ দ্বারে ঠান্ডা হাওয়া ফিরি খুঁজে
বুঝেও বুঝিনা এমতাবস্থায় আছে প্রকৃতিও চোখ বুজে,
জলকেলিতে পায় না শিশু পুকুর বা খাল-বিল
সাঁতার শিখতে আমরা খুঁজি ভাল সুইমিং-পুল।
মানবজীবন করতে সুখের প্রকৃতি হয়েছে ধর্ষিত,
প্রকৃতি আজ জল-মাটি-বায়ু এমনকি শব্দ দূষণেও দূষিত।
মানুষের বাসা বাঁধতে আজকে পশু-পাখির বাসা কমেছে
জঙ্গল আজ কমেছে যত, লোকালয়ে পশু বেড়েছে।
হায়রে মানব
পরিবেশকে কলুষিত করে পরিবেশ দিবস পালিত হয়!
গাছ বসাতে আজ নির্দিষ্ট দিনের প্রয়োজন হয়!
কত উৎসব, কত ঘটা করে, ফিতেও কাটতে হয়!
পরিবেশকে বাঁচাতে কেন প্রতিদিন পরিবেশ দিবস নয়!
—oooXXooo—