ইন্টারভিউতে সিলেক্ট হবার পর সমস্ত ডকুমেন্টস অফিসে জমা নিয়ে ১৫ই নভেম্বর ২০১৪ প্রয়োজনীয় সব রকম মেডিকেল টেস্ট সম্পন্ন করা হয় এবং ১৭ ও ১৮ই নভেম্বর অন লাইনে বাধ্যতামূলক ট্রেনিং নেয়ার পর জয়েনিংয়ের জন্য প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেয়। চলতে থাকে অপেক্ষা।দুদিন পরে অফিসে ফোন করে জানতে পারে,যে কোন মুহূর্তেই সিঙ্গাপুর হেড অফিস থেকে নির্দেশ এলেই জয়েন করতে হবে।শুরু হয় তার লাগেজ রেডি করার প্রস্তুতি। অপেক্ষায় থাকাকালীন নিয়মিত যোগাযোগের মাঝে ২৭শে নভেম্বর ২০১৪ দুপুর ১টায় ফোন করে জানানো হল-আজই জয়েনিং।সঙ্গে সঙ্গেই কলকাতার অফিসে ছুটে গেল।ব্রাঞ্চ ম্যানেজার ক্যাপ্টেন সৈকত মুখার্জির নির্দেশে তড়িঘড়ি তৈরি হতে লাগলো প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। কাবেরী ম্যাডাম তখন চট জলদি সমস্ত প্রয়োজনীয় পেপার্স তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন।ছেলে তখনই আমাকে জানিয়ে দিলো ওই দিনেই রাত ১১:৫০ মিনিটে কলকাতা থেকে ডাইরেক্ট সিঙ্গাপুরের ফ্লাইট। একথা জানালে আমি সঙ্গে সঙ্গেই ছুটলাম এয়ারপোর্ট যাবার জন্য মারুতি গাড়ি বুকিং করতে।অফিসের কাগজপত্র তৈরি হবার ফাঁকে সেও ছুটলো NUCI র কলকাতা অফিসে।তার NUCI র আইডেন্টিটি কার্ড সেখানে আপ টু ডেট করিয়ে ব্যস্ত ভাবে ফিরে এলো পার্ক সার্কাস V SHIP’S এর অফিসে।স্বাক্ষরিত হলো এগ্রিমেন্ট কপি।অফিস থেকে বাড়ি আসতে বেজে গেল রাত্রি আটটা। ডকুমেন্টসগুলি সহ এগ্রিমেন্টের সব কপি জেরক্স করিয়ে আমায় দিল।আমি রাখলাম সযত্নে।৯টায় বাড়ির গেটে এসে পৌঁছালো বুক করা মারুতি ভ্যান।খুব ব্যস্ততায় প্রয়োজনীয় লাগেজ রেডি করে ছুটলাম এয়ারপোর্টৈ।অফিসের সকলেই চিন্তিত ছিলেন এত অল্প সময়ের মধ্যে ঠিকমতো ফ্লাইট ধরতে পারবে তো? তাই এয়ারপোর্টে পৌঁছেই অফিসে ফোন করে পৌঁছানো সংবাদ জানালে তাঁরা চিন্তা মুক্ত হলেন।এয়ারপোর্টে পৌঁছে গিয়ে সেখানে অপেক্ষা করার মতো পরিস্থিতি না থাকায় ছেলেও বারবার হাত নেড়ে আমাদের চলে আসার নির্দেশ দিতে থাকে তবুও মন চাইছিল না।যতক্ষণে যতদূর দেখা যায় ওর মা ও বোন কাঁচের ভিতর দিয়ে উঁকি মেরে দেখছিল। ড্রাইভারের ডাকে দৃষ্টি ঘুরলো।আমরা চলে এলাম বাড়ি। ১১টা ৫৫ মিনিটে ছেলে ফোন করে জানালো প্লেন স্টার্ট দিয়েছে।আমাদের মন খারাপ করতে নিষেধ করে সকলের পুণ্য আশীর্বাদ মাথায় নিয়ে উড়ে গেল সুদুর আকাশে।মোবাইলের যোগাযোগ হল ছিন্ন।তারপর শুধু অপেক্ষা।রাত ৪টা ৩৯ মিনিটে তার দুবাই সিম থেকে পেলাম মিসড কল।বুঝলাম সিঙ্গাপুর পৌঁছে গেছে।তারপর থেকে নতুন করে অপেক্ষা।কখন পাবো তার ফোন—- ৪টা ডিসেম্বর ২০১৪।সন্ধ্যায় আমি তখন আমাদের দোকানে।ছেলে বারবার চেষ্টা করেও আমার ফোনে যোগাযোগ করতে না পেরে বাড়িতে তার বোনের কাছে ফোন করে কথা বলে।আমি বাড়ি গিয়ে সব শুনে খুশি হলাম।এই সপ্তাহে মাঝে মাঝে আমি SMS করে কিছু কিছু খবরাখবর জানাতে লাগলাম।১৬ই ডিসেম্বর ক্যাপ্টেনের ফোন থেকে ফোন করে কথা বললো।অল্প দিনের মধ্যে শীপের মেইল পরিষেবা ঠিক হয়ে গেলেই মেইল পাঠাবে।পরে যখন মেইল পেলাম তখন তাতে জানতে পারলাম ২৮ শে নভেম্বর স্থানীয় সময় ভোর ৬টা ১০মিনিটে SINGAPUR CHANGI AIRPORTএ পৌঁছায়।ইমিগ্রেশন কমপ্লিট করে বাইরে আসতেই দেখল এজেন্ট তার ও শীপের নামের প্লাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে। ইশারা দিতেই এজেন্ট কাছে এসে তার PASSPORT এবং CDC চেক করে সঙ্গে সঙ্গে নিয়ে উঠল গাড়িতে। গাড়ি এয়ারপোর্টের দিকে ছুটলো।কলকাতায় তখন রৌদ্র করোজ্জল আবহাওয়া হলেও সিঙ্গাপুরে তখন হচ্ছে বৃষ্টি।চলন্ত গাড়িতে বসে এজেন্টের সাথে নানা রকম কথাবার্তা বিনিময় হলো।পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাস্তা।আধা ঘন্টার মধ্যেই পৌঁছে গেল পোর্টে।তখন সেখানে সবে এসে পৌঁছেছেন চিফ অফিসার,সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার, ইলেকট্রিশিয়ান তার কিছুক্ষণের মধ্যে এসে পৌঁছালেন সিঙ্গাপুর ব্রাঞ্চ অফিসার,ফিলিট সুপারইনটেনন্ডেট জুলফিকার তন্ময় তমাল।উনি এসেই সেখানে উপস্থিত সকলের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন এবং সঙ্গে সঙ্গেই প্রত্যেকের জন্য ব্রেকফাস্টের ব্যবস্থা করলেন।এই সময়ে সকলের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় হল। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই সেখানে এসে পৌঁছালেন ক্যাপ্টেনের ফিটার।এবার বোটে করে চললো শীপের দিকে।মিনিট চল্লিশের মধ্যে পৌঁছে গেল নির্ধারিত AMBA BHARGAV শীপে।উঠেই সব কিছু দেখেশুনে মিটিংয়ে বসলেন সবাই।তারপরই লাঞ্চ সেরে যার যার মত কাজ বুঝে নিয়ে কাজে লেগে গেলেন। এই মুহূর্তে শীপ থেকে মেইল করার ব্যবস্থা রেডি হয়ে ওঠেনি।বাড়িতে আমরা প্রচন্ড উৎকণ্ঠায় ছিলাম।সেও ঠিক তেমনি।প্রতিদিন উভয়ের মাঝে শুধু মিসড কল দিয়ে অগত্যা সন্তুষ্ট থাকতাম।যদিও তার নিজস্ব UAE এবং UK সিম অ্যাক্টিভ ছিল কিন্তু পর্যাপ্ত ব্যালেন্স না থাকায় কথা বলতে পারত না এবং আমি ফোন করলে ফোন রিসিভ করলে রোমিংয়ে স্বল্প ব্যালেন্স শেষ হয়ে গেলে আমরা মিসড কল টুকুও দিতে পারব না এই ভেবে ফোন রিসিভ করতো না। ২৪ শে ডিসেম্বর আমায় শীপের ফিটারের মোবাইল থেকে ফোন করে জানায়-মেইল পরিষেবা চালু হয়েছে এবং ৮ পৃষ্ঠা মেইল পাঠিয়েছে।আমি সাথে সাথেই তার প্রিন্ট বের করে বিস্তারিত জানতে পারলাম।সব জেনে তখন সত্যিই ভালো লাগছিল। এই সময় তাকে জানা লাম নতুন এন্ড্রয়েড ফোন কেনার কথা।হোয়াটস অ্যাপে কথা বলার জন্য দুই দিন ধরে আপ্রাণ চেষ্টা করতে থাকি।আমি এই বিষয়ে তখন একদম অনভিজ্ঞ তাই অপরের সহযোগিতার জন্য ছুটে বেড়িয়েছি ছেলে মানুষের মতো এদিক ওদিক।অবশেষে ২৬শে ডিসেম্বর সন্ধ্যায় আমাদের দোকানে বসেই ছেলের সাথে প্রথম হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ হয়।অনেকক্ষণ ধরে নানারকম চেষ্টা করেও ব্যর্থ হই।কিছুতেই হোয়াটসঅ্যাপ এ ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না। আর ঠিক সেই সময়টায় আমাদের দোকানে হঠাৎ আমার সাথে দেখা হয়ে গেল আমারই এক হিতাকাঙ্খী বন্ধু বাসুর সঙ্গে। তার চেষ্টাতেই আমি যোগাযোগ করতে পারলাম হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ছেলের সাথে।তখন ছেলে জানালো-“বাবা!কখন থেকে বসে আছি—!” আবেগে এই মুহূর্তে আমি ভেঙ্গে পড়ি।পিতৃত্বের যন্ত্রণায় তখন চোখ ফেটে ঝরে পড়ল অশ্রু। ঠিক এমন অবস্থাটা দেখে বাসু হঠাৎ হকচকিয়ে গেল।উদ্ভূত পরিস্থিতি দেখে সে আমাকে সান্ত্বনা দেবার চেষ্টা করল।কিন্তু আমি তখন সম্পূর্ণ আবেগে বিধ্বস্ত!চোখ মুছে কিছুটা সামলিয়ে বাসুর একান্ত সহযোগিতায় অনভিজ্ঞতার মাঝে টাইপ করে দুই একটি কথা শুধু জানালাম।পরে বাড়িতে গিয়ে ওর বোনকে ফোনটা দিলে সে যোগাযোগ করতে থাকে।আমি আর ওর মা তখন মন্ত্রমুগ্ধের মতো পাশে বসে দেখেই চলেছি।২০ শে ডিসেম্বর রাত ন’টা। আমি হোয়াটসঅ্যাপে ছেলের সাথে কথা বললাম।অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলে আমি তখনও ঠিক রপ্ত হয়ে উঠতে পারিনি।৩১শে ডিসেম্বর ২০১৪ রাত্রে অনেকক্ষণ কথা হল।শীপে HAPPY NEW YEAR-2015 উদযাপনের মাঝেও আমাদের সাথে নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময় হল।তখন আমাদের জানালো ভারতীয় সময় রাত ৩ টায় ওরা OPL যাবে। সেখান থেকে যাবে হংকং।সেখান থেকে আসবে সিঙ্গাপুর। এই সময়ে মোবাইলে যোগাযোগ করা সম্ভব হবে না। নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে জানালাম প্রার্থনা-তাদের যাত্রা হোক শুভ! ১১ই জানুয়ারি ২০১৫ তার SMS থেকে জানতে পারলাম ওইদিনই তারা মালয়েশিয়ার MALACCA ক্রস করল।সবাই ভালো আছে।গন্তব্য এই মুহূর্তে পাকিস্তানের করাচি পোর্ট।ওরা যখন করাচি পোর্টে গিয়ে পৌঁছায় তখন পাকিস্তানের পরিস্থিতি খুবই খারাপ।নানান জায়গায় সন্ত্রাসবাদী হামলা চলছে। কোম্পানি থেকে কড়া নির্দেশ-কোনো অবস্থাতেই যেন কোন ক্রিউ ল্যান্ডে না নামে।কেউ ল্যান্ডে নামলে সর্বদা সাথে থাকতে হবে সিকিউরিটি।এমনকি বাথরুমে গেলেও সেখানে প্রহরায় রয়েছে প্রহরী,করাচিতে সদা সতর্কতার মাঝে শীপের লোডিং আনলোডিং সম্পন্ন করে ১লা ফেব্রুয়ারি রওনা হয়ে FUGAIRA OPL এ এসে পৌঁছায়।সেখানে শীপ অ্যাঙ্কার করে দাঁড়িয়ে থাকার পর পোর্টে এসে নোঙ্গর করে। ১৪ই ফেব্রুয়ারি খুব ভোরেই আমরা ৺দক্ষিনেশ্বর মায়ের মন্দিরে গিয়ে ছেলের জন্মদিন উপলক্ষে পূজা দিয়ে এলাম।বাড়ি এসে ফোন করে ছেলেকে আমরা সবাই জন্মদিনের উইশ করলাম।এই সময়ে সিঙ্গা- পুরের অনেক ছবি হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে দেয়।সেই সব ছবি দেখতে পেয়ে আমাদের সবার মন আনন্দে ভরে ওঠে।২৭ এ মার্চ বিকাল ৪ঃ৩৫ কল এলো ছেলের আইডিয়া সিম থেকে।হঠাৎ এমনটা দেখে চমকে গেলাম।ফোন রিসিভ করে জানতে পারলাম শ্রীলংকার পাশ দিয়ে সিঙ্গাপুর যেতে গিয়ে শীপের মাস্তুলে উঠে হঠাৎ আইডিয়া সিমের টাওয়ার পেয়ে যায় তখন আনন্দে সবাই বাড়ির সাথে যোগাযোগ করে কথা বলা শুরু করে।তখন জানিয়ে দেয় আগামী সপ্তাহে ইন্দোনেশিয়া যাবার কথা।রাতে জানায় আমায় পাঁচ পৃষ্ঠা SMS মেইল করে পাঠিয়েছে।১১ই এপ্রিল সকালে সাইবার কাফে থেকে প্রিন্ট বের করে জানতে পারি তার CDC এর মেয়াদ এপ্রিলের ৫ তারিখে শেষ হয়ে গেছে।এই মুহূর্তে শীপের গন্তব্য অস্ট্রেলিয়া।এমতাবস্থায় শীপের ফ্লাগ পরিবর্তন করে পানামার পতাকা লাগায় এবং কোম্পানি ক্রিউদের পানামা CDC তৈরি করে দেয়।১৫ই এপ্রিল রাতে শীপ অস্ট্রেলিয়া অভিমুখে রওনা হয়ে যায়।৩০শে এপ্রিল সন্ধ্যায় তারা অস্ট্রেলিয়ায় এসে পৌঁছায়।সেখানকার নির্ধারিত কাজ সম্পন্ন করার পর আবার সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হয় এবং ২৩ শে জুন সিঙ্গাপুরে এসে পৌঁছায় ।এই সময়ে নিয়মিত সকল বন্ধুবান্ধবসহ আত্মীয়-স্বজনের সাথে নানা রকম কথাবাত্রা হয়।তবে আমাকে তার মনের সুপ্ত অনেক বেদনার কথা মেইল করে জানায়।বিশেষ করে সেই সময়ে কিছু অন্তরঙ্গ বন্ধুদের বদলে যাবার ইঙ্গিত পেয়ে বড্ড ব্যথা পায়!২৬ শে জুলাই অস্ট্রেলিয়া PAPUA NEW JUINEA থেকে মেইল করে তার বোনের বিয়ের প্রস্তুতির খবরাখবর নেয় এবং শুভ বিবাহের মাস দুয়েক আগেই দেশে পৌঁছে যাবে বলে জানায়।২রা আগস্ট শীপ অস্ট্রেলিয়া থেকে থাইল্যান্ড অভিমুখে রওনা হয়।১৭ই আগস্ট থাইল্যান্ডে পৌঁছে ওই দেশের সিম কার্ড নিয়ে আমায় বিস্তারিত ফোন করে জানায়।তখন ওদের কুশলাদি জেনে অত্যন্ত খুশি হলাম। ৬ সেপ্টেম্বর তার মেইলে সাইন আপ এর প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে পারি।এই সময়ে একমাত্র বোনের বিয়ের ব্যাপারে ভীষণ উদগ্রীব হয়ে পড়ে।তার সব সময়ের ইচ্ছা-বোনের বিয়ে হবে বেশ একটু ধুমধামের মধ্য দিয়ে।একমাত্র বোনের প্রতি তার আন্তরিক টান ছিল গর্ব করার মতো।৯ই সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১০টায় ডাইরেক্ট সিঙ্গাপুর থেকে কলকাতায় এসে পৌঁছায়। তখন আমি মারুতি নিয়ে এয়ারপোর্টের বাইরে অপেক্ষায় থাকি।এই সময় ইমিগ্রেশনে চলতে থাকে নানা রকম বাদানুবাদ।চাকুরীরত অবস্থায় বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দেশে অবতরণ করাকালীন সুযোগ সুবিধামতো কিছু কিছু স্বর্ণালংকার খরিদ করে। সেগুলি দেখে এয়ারপোর্টে কাস্টম অফিসার তাকে ভুল বুঝিয়ে হিসাব বহির্ভূত শুল্ক দাবি করতে থাকে।অবশ্য বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দেশে যাতায়াত করতে করতে এই বিষয়ে ছেলের যথেষ্ট নিয়ম-কানুন জানা ছিল।ছেলেও ছাড়ার পাত্র নয়।তাই নানান যুক্তিতর্কের শেষে তাদের উদ্দেশ্য ব্যর্থ হওয়ায় তাকে ছাড়তে বাধ্য হয়।এয়ারপোর্টের বাইরে আসলে আমি এই বিষয়ে জানতে পারি।বাড়ি আসার এক সপ্তাহের মধ্যেই কোম্পানি থেকে আর্জেন্ট জয়েনিং এর জন্য কল আসে কিন্তু এই মুহূর্তে বোনের বিয়ের জন্য ট্রিপে যাওয়া সম্ভব নয় এবং আগামী বছর মার্চ মাসের মাঝামাঝি যাবার জন্য দিন নির্ধারণ করতে বলে দেয়।এই মুহূর্তে বিয়ের প্রস্তুতি পুরোদমে শুরু হয়ে যায়।ক্রমাগত প্রস্তুতি শেষে ১৭ই ফেব্রুয়ারি ২০১৬ তার বোনের বিয়ে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সুসম্পন্ন হওয়ায় আমরা সবাই ভীষণ চিন্তামুক্ত হই। ইতিমধ্যে অন্যান্য কোম্পানি থেকেও কল আসতে থাকে তবে বিয়ের চাপে হাফ সেরে কটা দিন বিশ্রাম নেবার পর অপেক্ষা করতে থাকে।অবশেষে ৯ই এপ্রিল ২০১৬ ট্রেনে হাওড়া থেকে মুম্বাইয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে যায়।১১ই এপ্রিল সন্ধ্যায় আমায় ফোনে জানায় জয়েনিংয়ের জন্য নির্দিষ্ট ট্রেনিং কমপ্লিট হয়েছে।যে কোন মুহূর্তেই জয়েনিং হবে।পরে অফিসিয়াল কাজ সব সম্পন্ন হলে ২১শে এপ্রিল দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে যায়। ৬ই মে দুবাই পোর্ট থেকে শীপে চারজন সিকিউরিটি নিয়ে সাউথ আরাবিয়ার দিকে রওনা হয় এবং গন্তব্যে পৌঁছাতে কুড়ি দিনের মতো সময় লাগে।২১শে মে শীপ মাঝ সমুদ্রে চলন্তাবস্থায়।এই সময়ে নেটের অসুবিধায় মেইল করতে পারছে না। তবুও বাড়ির সবাই চিন্তিত থাকবে তাই বাধ্য হয়ে স্যাটেলাইট ফোনে সংক্ষেপে কুশলাদি জানিয়ে নিশ্চিন্ত করলো।