ভূতের গল্প
মৌসুমী ঘোষাল চৌধুরী
নতুন দম্পতি, হানিমুনে ভাইজ্যাগ বেড়াতে গেল। বিকেল বেলায় হায়দ্রাবাদী বিরিয়ানী খেয়ে দুজনে হোটেলে। অনেক রাত পর্যন্ত ওরা গল্পে মশগুল। নতুন বৌ মীরা তার লম্বা চুল আঁচড়ে ঘুমিয়ে পরেছে। নীলচে নাইট বালব, আর পাশের ফুলদানী থেকে রজনীগন্ধার সুগন্ধ। ক্লান্ত শরীরে ওরা একে অপরকে গভীর ভাবে প্রেমের ভাষায়। তখন প্রায় মাঝরাত্রি, হঠাৎ মীরার ঘুম ভেঙে গেল কাঁচের চুরির শব্দে। ” কে কে? রিনরিনে গলায় ভয়ার্ত কান্না স্বর। ওরা ট্রেনে ওঠার আগে একটা টেলিফোন আসে। মীরা ফোনটি ধরে, পুরোনো বন্ধুর কন্ঠস্বর। ” আমি চলে গেলাম। ” বারবার এই কথাটাই ভেসে আসছিল। হঠাৎ ফোনটি কেটে যায়। যাইহোক, মীরা তার বরকে ডাকে। ওরা ধরফরিয়ে উঠে বাইরে বেরোয়। না তো, কোনো শব্দ ই নেই।” তুমি হয়ত ভুল শুনেছ। ” কিছুক্ষন পরে আবার ঘুমিয়ে পড়ল। তখন ভোর ভোর, ওরা সাইট সিনে যাবে। আবার হোটেলের ঘরে ফোন। খুব কান্নার শব্দ। সেই চেনা স্বর। ওরা নিচে যেতে হোটেলের মালিক চুপ করে রইল। বললেন ঘর চেঞ্জ করে দেবেন। সারাদিন প্রচন্ড আনন্দ। হোটেলে ফিরে ওরা নতুন ঘরে গেল। তখন আরো গভীর রাত্রি। মীরা টয়লেটে গেল। আচমকা দমকা হাওয়া আর পরিষ্কার দেখতে পেল এক্সজস্ট পাখাটা ভীষন জোড়ে ঘুরছে। অথচ বাইরে ঝড় নেই। ঘরের ভিতর ঢুকে দেখল কঙ্কাল। কোথায় ওর বর?
নিচে ছুটল, সিঁড়ি দিয়ে কে যেন তাড়া করছে। মালিকের গলা ভেসে এল। ” কোথায় যাচ্ছেন ম্যাডাম, এত রাতে। ” মীরা সব বলাতে দুজনে ছুটল ঘরে। গিয়ে দেখে বিছানায় মীরার স্বামীর মৃতদেহ। আর, একটি রক্তে লেখা চিঠি ” আমি বাবীকে ভালোবাসি। তাই নিয়ে গেলাম। ” মীরা থতমত, এ তো স্কুলের বন্ধু পরাগের হাতের লেখা। ওর মৃত্যু রহস্য থেকেই যায়। আসলে মীরার আগেই পরাগ আর বাবীর বিয়ে হয়ে যায়। আর বাবীর একাধিক প্রেমিকার চিঠিপত্র খুঁজে পেয়ে পরাগ এই হোটেলেই এক্সহস্ট পাখায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। আবার দমকা হাওয়া। কাঁচের চুরির শব্দ আর দুজনে স্পষ্ট দেখল এক্সজস্ট পাখাটি জোড়ে ঘুরেই চলেছে।