দুদিন পরের কথা। এই দুদিন ব্যোমকেশকে একবারের জন্যও বাড়ির বাইরে যেতে দেখিনি। বেশির ভাগ সময়ই কি যেন ভাবে। আত্ম মগ্ন ভাব। শুধু একটা অস্থিরতা যে আছে সেটা বেশ অনুভব করি। ঘরের মধ্যে ঘুরে বেড়ায় আর ফোন বাজলেই নিজে উঠে গিয়ে ধরে। অবশ্য প্রত্যেকবারই মুখের চেহারা দেখে অনুমান করে নিতে অসুবিধে হয় নি যে ও যার ফোনের অপেক্ষায় আছে এ সে ফোন নয়। মাঝে একবার মহুয়া ফোন করেছিলেন। ব্যোমকেশ ধ’রে কথা না বলেই ছেড়ে দিল। ইশারায় আমাকে বলল বাড়ি নেই বলে দিতে। বুঝলাম ব্যোমকেশ এই মুহূর্তে কিছু বলতে চাইছে না। হয়ত এখনও বলার জায়গায় আসেনি। কিন্তু কি এত ভাবছে? কিছু বললেও তো পারে। কাঁহাতকই বা এই নীরবতা ভালো লাগে? নাহ! মনে মনে স্থির করে নিলাম আজ এর একটা হেস্থ নেস্ত করব। সামনে চেয়ার টেনে বসতে বসতেই লক্ষ্য করলাম ওর হাতে একখানা ইংরেজি বই। যদিও চোখ বা মন কোনটাই বইয়ের প্রতি নেই। চায়ের কাপ তেমনি পড়ে আছে। ব্যোমকেশ সেটা স্পর্শও করে নি। পুঁটিরামকে ডেকে নতুন করে দু পেয়ালা চায়ের হুকুম দিলাম। আমার গলার আওয়াজে ওর সম্বিত ফিরল। ফিকে হেসে কোলের ওপর পড়ে থাকা বইটি চোখের সামনে তুলে ধরলো। “ কি বই হে?” “ সাইকোলজি অফ হিউম্যান মাইন্ড। বাই ডব্লু. এস. টি”। এমন বই বা লেখকের নাম জীবনে শুনি নি। তবু কথা চালাবার উদ্দেশ্যে বললাম “ তো কি বুঝলে হিউম্যান সাইকোলজি?” “সেটাই তো বোঝার চেষ্টা করছি। বড় অদ্ভুত মানুষের মন। চিন্তাধারা। এই বইতে লেখক মানব মনের বিচিত্র গতি প্রকৃতির কথাও বলেছেন।মানুষ নাকি সদা সর্বদা কিছু না কিছু লুকোবার চেষ্টা করে। আর সেইটাই একটা ভারী মজার খেলা হয়ে দাঁড়ায় তার কাছে।” “ মনের কি ধরনের গতি প্রকৃতির কথা উনি বলছেন ?” কথাটা শুনে খুব যে একটা আপ্লুত হয়ে পড়লাম এমন নয় তবু কথা চালিয়ে যাবার জন্য প্রশ্ন করলাম। “ অনেক রকম। যেমন ধরো কাউকে আমরা হয়তো খুব অপছন্দ করি। ঘৃনা করি। তার সম্বন্ধে কথা বলতে বিরক্ত বোধ করি অথচ তলায় তলায় দেখো ঠিক তার খবরাখবর রাখি। ভালো কিছু হলে অখুশি হই। খারাপ হলে বলি এটাই হওয়া উচিত ছিল। নয় কি ?” খুব যে সহমত হলাম তা নয় কিন্তু ব্যোমকেশকে থামাবার ইচ্ছা হল না। তাই বললাম “ যেমন ?” ব্যোমকেশ প্রশ্নটা খেয়াল করল না। আপনমনে বলে চলল, “ তারপর ধর যে তোমাকে পছন্দ করে না বা তোমাকে ভালোবাসে না তার ভালোবাসা পাবার বা পছন্দের তালিকায় থাকার একটা চেষ্টা আমাদের মধ্যে থাকে। এ একটা অদ্ভুত বিপরীত অহং বোধ।কেবলই মনে হয় আমি এত সুন্দর,এত গুণী, এত ভালো তাও কেন আমাকে ও পছন্দ করবে না? এটা আসলে মেনে নেওয়া খুব কঠিন।” “ হুম। আংশিক সত্য।” “ আংশিক নয়। পুরোটাই।” “ সকলের এ চিন্তাধারা থাকে না ব্যোমকেশ।” “ কিন্তু বেশিরভাগেরই থাকে। লেখক অনেক গবেষণা করেই এই সত্য উদঘাটন করেছেন। একটা সহজ উদাহরণ দিই। ধর যাকে তুমি খুব ঘৃনা কর বা অপছন্দ কর বা একেবারেই সহ্য করতে পারো না তাহলে তাকে তুমি মনে রাখবে কেন?তোমার জীবন থেকে তো তার বাদ চলে যাবার কথা। কিন্তু যায় না তো।বরং তোমাকে কেউ তোমার অপছন্দের মানুষের নাম বলতে বললে তুমি ঠিক তার কথাটাই বলবে। কি বলবে না ?” “ হুম।” ঘাড় নেড়ে সায় দিলাম। ব্যোমকেশের যুক্তির কাছে পরাজিত না হয়ে উপায় নেই। “ কিন্তু কেন? যে তোমার কাছে সম্পূর্ন মূল্যহীন তাকে তুমি মনে রাখছ কেন?” “ কেন?” বেকুবের মত প্রশ্ন করলাম। “ ওইটাই তো হিউম্যান সাইকোলজি। মহুয়া সেনের ব্যাপারটাই দ্যাখো না। ভালো বাড়ির মেয়ে। কঠিন শাসনে মানুষ। প্রেম করলেন। তাও এমন লোকের সাথে করলেন যে তার মাত্র কয়েকদিনের অনুপস্থিতিতেই আর একজনের সাথে জড়িয়ে পড়ল। মহুয়া বলছেন একজন — আমার ধারণা লোকটির স্বভাবই অমন।” “ হ্যাঁ। কিন্তু মহুয়া তো –” “ হ্যাঁ মহুয়া প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন।ভুল বুঝতে পেরেছেন।আবার সঠিক জীবনে ফিরেও এসেছেন।স্বামী পুত্র নিয়ে সংসারও করছেন কিন্তু –” “ কিন্তু ? এর মধ্যে আবার কিন্তু আসে কি করে ?” “ আসে আসে। ভাবলেই বুঝবে। আচ্ছা অজিত আমাদের কলেজ স্ট্রিটের বইয়ের দোকানের পুরো ঠিকানাটা বল তো ?” সর্বনাশ! এ আবার কি প্রশ্ন? ঠিকানা তো মনে নেই! হ্যাঁ যাওয়া আসার পথ মুখস্থ। কিন্তু – হঠাৎ এই প্রশ্ন ব্যোমকেশ করল কেন? চোখ তুলে তাকিয়ে দেখি ব্যোমকেশ মৃদু মৃদু হাসছে।বুঝলাম আমাকে ফাঁপরে পড়তে দেখে খুব আহ্লাদ জেগেছে প্রাণে।ব্যোমকেশের মনের বিচিত্র গতির সংবাদ কোনদিন পাই নি আর পাব বলেও ভরসা করি না।তাই আবার বেপরোয়া ভাবে বলে বসলাম, “ ও আবার মনে থাকে নাকি? রোজ যাই আসি।রাস্তা ঘাট সব মুখস্থ। ব্যস।ঘটা করে ঠিকানা মনে রাখার দরকার কি? ” “ ঠিক বলেছ।” ব্যোমকেশ যেন লুফে নিল কথাটা।“ সেখানে তুমি রোজ যাও। সব চেনো। অথচ দ্যাখো তার ঠিকানা কিন্তু তোমার মুখস্থ নেই। কিন্তু মহুয়া কেমন গড়গড় করে রঞ্জন বাবুর ঠিকানা লিখে দিয়ে চলে গেল।অবাক ঘটনা নয়?সেই রঞ্জন যে তাকে প্রত্যাখ্যান করেছে,তার ভালোবাসাকে অপমান করেছে, যার প্রতি অপরিসীম ঘৃনা ছাড়া আর কিছু থাকার কথা নয় — অথচ দ্যাখো আজ এত বছর পরও তার ঠিকানা মহুয়ার মুখস্ত। কি করে?সত্য সেলুকাস! কি বিচিত্র এই মানব মন।” একদম নীরব হয়ে গেলাম। সত্যি এই ব্যাপারটা তো ভেবে দেখিনি। ব্যোমকেশ ঠিক খেয়াল করেছে। “ শুধু তাই নয় দ্যাখো যে লোকটা তাকে ওই ভাবে ঠকালো, মহুয়া তার সঙ্গে আবার দেখাও করেছেন ! তার কাকুতি মিনতিতে গলে গিয়ে, তার দুরবস্থা জেনে তাকে টাকা দিয়ে সাহায্য করেছেন – তো এগুলোকে তুমি কি বলবে ? সত্যি অজিত মানুষের মন বিশেষ করে নারী জাতির মন বোঝা দুঃসাধ্য।” আলোচনা আর কতদূর এগোত কে জানে এমন সময় সত্যবতী হাসি হাসি মুখে ঘরে ঢুকে পড়ল। ব্যোমকেশের মুখ ফুটেছে দেখে চোখ টিপে হেসে বলল , “ যাক ঠাকুরপো তোমার চিন্তা ঘুচল। কচ্ছপের বুলি ফুটেছে তবে।” বিস্মিত হয়ে দেখলাম ব্যোমকেশ রাগ করল না।বরং সুস্মিত দৃষ্টিতে চেয়ে রইল সত্যবতীর দিকে। ব্যাপারখানা কি?তবে কি দাম্পত্য কলহের অবসান ঘটেছে?কিন্তু কখন?কি ভাবে? কৌতূহল থাকলেও প্রকাশ করলাম না। কারণ ব্যোমকেশকে বললে ব্যঙ্গ হাসি হেসে উত্তর দেবে, “এসব বোঝা তোমার কর্ম নয় অজিত। আইবুড়ো তো হাজার হোক।” তা তো বটেই। আর সেই জন্যই টের পাইনি কখন দুজনের বোঝাপড়া হয়ে গেছে। কিন্তু শুধু মানব মন নিয়ে গবেষণা করলেই তো হবে না মহুয়ার ছবির হস্যের সমাধান কত দূর? মুখ ফুটে প্রশ্নটা করার আগেই ফোন বেজে উঠল। ব্যোমকেশ তাড়াতাড়ি উঠে গিয়ে ফোন ধরল।মুখের ভাব দেখে মনে হল এই ফোনের অপেক্ষাতেই ছিল এতক্ষণ। মুখ বুজে এক তরফা আলাপই শুধু শুনে গেলাম। “ হ্যাঁ বল। বেরোয় না? দুপুরে ? আচ্ছা। কখন ধরেছিলে?বেশ বেশ। তারপর? ধস্তাধস্তি। হুঁ হুঁ। সে তো স্বাভাবিক। লেগে টেগে যায় নি তো?কি? নেই? হুম। আন্দাজ করেছিলাম। খুব ধূর্ত। কি বলছ? করেছিলে ? আচ্ছা! কখন? বারোটার পর। কেউ দেখে নি তো? হুম। জানতাম। তবুও একটা চান্স নিলাম। ঠিক আছে। তুমি একবার সন্ধের পর এসো।না না। এখন যেমন আছো থাকো। হ্যাঁ হ্যাঁ।বুঝেছি। মুখের অবস্থা ওই জন্যই ওই রকম।। আশে পাশের কারুর সঙ্গে কথা হল? হুম। সেটাই স্বাভাবিক। আমিও এরকমই ভেবেছিলাম।আচ্ছা রাখছি। সাক্ষাতে কথা হবে।” ব্যোমকেশ ফোন ছেড়ে দিল। জিজ্ঞাসু চোখে তাকালাম।“ কে হে?” “ বিকাশ। ওকে লাগিয়েছিলাম রঞ্জনবাবুর পিছনে। খবরাখবর নেবার জন্য।” আচ্ছা। এই জন্যই ব্যোমকেশ চুপ করে বাড়িতে বসে ছিল। “ তা কি খবর দিল?” “ অনেকই। আশ পাশের বাড়ি থেকেও খবর পেয়েছে কিছু। লোকটা কিছু করে না। মাসে দু একদিন বেরোয় বাইরে।দুপুরে এবং রাতে পাশের একটা ছোটখাটো হোটেলে খেতে যায়। বাকি সময়টা বাড়িতেই থাকে। আমার নির্দেশেই রাতে খেয়ে ফেরার পথে অন্ধকার গলিতে বিকাশ আর ওর একজন বন্ধু মিলে ধরেছিল লোকটাকে। তন্ন তন্ন করে খুঁজেও কিছু পায় নি।” “ কি পায় নি ? ছবির নেগেটিভ? তুমি কি আশা করেছিলে ওটা ও সঙ্গে নিয়ে বেরোবে?” “ আশা করিনি। তবু সম্ভাব্য দিকগুলো দেখে নিলাম। এমনও তো হতে পারে যে ঘরে থাকলে চুরি হবার ভয় তাই সঙ্গেই রাখে। ভুলে যেও না মহুয়াকে পকেট থেকে বার করেই দেখিয়েছে।ওর অনুপস্থিতে ওর ঘরও খুঁজে দেখেছে বিকাশ।পায় নি।” “ তাহলে ? কোথায় রাখতে পারে? ব্যাংকের লকারে?” “ সেসবও খুঁজে দেখেছে। ব্যাংকের কোন কাগজ পত্র বা লকারের চাবি – কিছুরই হদিশ মেলে নি।আর লোকটার যে পরিমাণ দৈন্য দশা ব্যাংকে লকার রেখে তার ভাড়া দেবার ক্ষমতা আছে বলে মনে হয় না।তবু খোঁজ নিতে হবে।” “মুখের অবস্থার কথা কি বলছিলে?” “ পাড়ার লোকেরা বলেছে কোন মেয়ে ঘটিত ব্যাপারেই ওই অ্যাকসিডেন্ট। মুখে অ্যাসিড বাল্ব ছুঁড়ে মারা হয়েছে।আমার অনুমানও তাই ছিল।যতদূর আন্দাজ করা যায় বর্তমানে রঞ্জনবাবুর রোজগার ওই ব্ল্যাকমেইলিং করেই। হয়ত ওই কারণেই কেউ হত্যা করার চেষ্টা করেছিল লোকটাকে।” “ কি সাংঘাতিক!” “ হুম । গুণধর লোক।” “ তাহলে? এবার কি করবে?” “ একবার কেয়াতলা থানায় ফোন কর তো অজিত। ওখানে সুশান্ত আছে না? কয়েকটা ইনফরমেশন নেব।” সুশান্ত ব্যোমকেশের কলেজ মেট। এখন কেয়াতলা থানার বড়কর্তা। ডায়েরি বার করে ফোন মেলালাম। “ রিং হচ্ছে। ধর।” ব্যোমকেশ ফোন হাতে নিয়ে দু একটা সৌজন্য মূলক কথাবার্তা বলেই সরাসরি কাজের কথায় চলে এল। “ সুশান্ত একটা ঠিকানা আর চেহারার বিবরণ দিচ্ছি লিখে নে। এর সম্বন্ধে আমাকে জানাতে হবে আজকের মধ্যেই।আর হ্যাঁ। লোকটার কোন ব্যাংকে লকার আছে কিনা সেটাও খবর নিয়ে জানা।একটু আর্জেন্ট কিন্তু ভাই। ঠিক আছে? রাখলাম।” “ কিন্তু ব্যোমকেশ জিনিসটা ঘরে নেই।সঙ্গে নেই।ব্যাংকে আছে কিনা জানা নেই।অবস্থা দেখে মনে হয় না সে ক্ষমতা আছে।তাহলে রাখল কোথায়?” “ সেটাই তো প্রশ্ন বন্ধু।” “তুমি কোন ধারণা করতে পারছ?” “ হুম। কতক কতক। তবে ওর ঘরে না গেলে হবে না। বিকাশ দেখেছে ঠিকই কিন্তু তবু —” “ তোমার দেখা আর বিকাশের দেখা – দুই এ তফাৎ তো রয়েছে না ?” “ দ্যাখো। ” ব্যোমকেশ কথাটা এড়িয়ে গেল। বরাবরই দেখেছি নিজের প্রশংসা ব্যোমকেশ কখনোই কানে তোলে না। ব্যোমকেশ আমার অভিন্ন হৃদয় বন্ধু। সত্যান্বেষী। কিন্তু মানুষ হিসাবে আমি তাকে বেশি শ্রদ্ধা করি। ব্যোমকেশ বলতে থাকল, “দ্যাখো মানুষ যদি তার কোন প্রিয় বা গোপন জিনিস লুকিয়ে রাখতে চায় – যেটা তার খুবই দরকারি সে সেটা কোথায় রাখবে? সত্য – তুমি বল?” ব্যোমকেশ সত্যবতীর দিকে আঙুল তুলল। “ কোথায় আবার আলমারিতে। লকারে।” “ হুম। আর কোথায়?” “ আবার কোথায়? দামী জিনিস তো লোকে ওখানেই রাখে।নিশ্চয়ই বাইরে ফেলে রাখে না।” “হ্যাঁ। কিন্তু লোকটার আলমারিতে কিছু নেই।তাহলে?এমন একটা জিনিষ যেটা তার বর্তমানে রুজি রোজগার সেটা সে কোথায় রাখতে পারে? দ্যাখো লোকটা ভালো করেই জানে যে ওর শত্রুর অভাব নেই।ওর অনুপস্থিতে তালা খুলে ঘরে ঢোকা কোন ব্যাপারই না। অথচ সে আলমারিতে রাখেনি। ঘরেও কোন গোপন জায়গা নেই। তবে?” “ তবে ?” ব্যোমকেশের কথার সুর ধরেই সুর টানি। “ তবে ভাবতে হবে। মাথা খাটাতে হবে। খুঁজি খুঁজি নারি ধরিতে না পারি।” “ অনেক ভেবেছি। এবার তুমি ভেবে বল।” সত্যবতী বেমালুম বলে বসল। এরকম বোধ হয় স্ত্রীরাই বলতে পারে। কথা শেষ হবার আগেই ব্যোমকেশ চেঁচিয়ে উঠল। “ আরে আরে কিসের গন্ধ না? সত্য কি বসিয়ে এসেছ? পুঁটিরাম নেই?” “ এই যাঃ! আমার মাছের ঝোল পুড়ে গেল বোধ হয়।পুঁটিরামকে একটু দই আনতে পাঠিয়েছি।” বলতে বলতে সত্যবতী দ্রুত ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। ব্যোমকেশের ঠোঁটে মুচকি হাসি দেখে বুঝলাম সত্যবতীকে থামাবার এ এক অভিনব পন্থা।” “ এটা কি হল?আমি তো কোন গন্ধ পেলাম না?” “ এও মানব চরিত্রের এক দিক।আমি শুধু গন্ধের কথা বলেছি। সত্য ধরে নিল সেটাই সত্যি। পরীক্ষা করে দেখল না। গন্ধ সত্যিই বেরিয়েছে কিনা ” “ সত্যি। অদ্ভুত। এভাবে কখনো ভাবিই নি। কিন্তু আমাকে বল তোমার কি ধারণা? ছবিটা কোথায় আছে?” “ হেথায়।” বলেই ব্যোমকেশ নিজের মাথার দিকে ইঙ্গিত করে সুট করে শোবার ঘরে ঢুকে পড়ল।