জীবন দর্শন
রণজিৎ মন্ডল
কে বিচক্ষণ, কতক্ষণই
বা এ জীবন! এ যে মহারণ!
চলার শুরুতে দেখেছি অনেক
রঙিন বরণ,
উৎরাই, চড়াই, খানা খন্দ, কন্টকাকীর্ণ,
নদী নালা, খাল বিল, পাহাড়, সাগর,
অবশেষে মরুভূমিতে অবতরণ !
কি নিদারুণ, কি তপ্ত বালুপথ দর্শন,
ধু ধু মরুভূমির বুক শুকানো অগ্নিবর্ষণ,
আমাকে আনিছে যেন করি নিমন্ত্রণ।
রিক্ত নিঃস্ব আমি, যেদিকে চাই, যেন
অশনি সংকেতের পদধ্বনি, মাথার
উপরে দাউ দাউ সূর্য আর শকুনের পাখা, আমায় দিচ্ছে হাতছানি, নিমেষেই হলে শেষ, শা শা করে ওদের
ভূমিতে আগমন,
আমার সারা অঙ্গ ছিন্ন ভিন্ন করিয়া
হইবে উদর পূরণ,
না ফুরাবো যতক্ষণ!
এ কেমন জীবন! অসহায়তায়, অনাহারে, অনাহূতকে দেয় না ভক্ষণ,
দেয় না এক ফোটা বারি সিক্ত করিতে
কন্ঠ, দেয় না রক্ষণ, শুধুই ধেয়ে আসে
অনিশ্চয়তা, নিরাপত্তা হীনতা, নির্মম
শকুনের কুৎসিত বিভৎস নৃশংস
আলিঙ্গন !
চলার শেষ নেই, দিন যায় রাত যায়,
ভেসে আসে রাতের চিক চিকে বালিতে
শুয়ে থাকা কাটা গাছের স্পন্দন, হাওয়ায় দুলে দুলে মাথা নেড়ে পথ দেখানো বন্ধুত্বের বন্ধন!
রাত কেটেছে, ভোরের আলো ফুটেছে,
পাখির কলতান বুঝিয়ে দেয় সমুখে
বাঁচার মত প্রশস্ত পথ, দাঁড়িয়ে পুস্পরথ,
হে কেশব তুমি এসেছ? আমি যে তোমাকেই চাই, তোমার রথকে চাই,
তোমার দর্শন চাই, তুমিই যে আমার পথ,
তুমি পারো দিতে আমাকে নতুন জীবন,
আলো, বাতাস, সাগর, পাহাড়, সবুজ
বনের সবুজ মন,
এসো এসো বন্ধু, তুমি ধর্ম, তুমি কর্ম,
তুমি রামধনূ বর্ণ, তোমাতেই রক্ষা পাক
মহান ভারতের, মহান জীবন দর্শন!
—oooXXooo—