বৃষ্টিরেখা
– পৌলমী দে পুরকাইত
দিগন্ত পারে আছে সেই দরোজাটা
সে এক ছিল বৃষ্টিমুখর দিন অঝোর ধারা
ভেবেছিলাম আজকেই যাব তার কাছে
বলব পুরু শ্যাওলায় মোড়া দরোজার কড়াটি নেড়ে “আছো”?
হয়ত তখন ওপারে ঝরবে প্রপাত
বয়ে আসবে বিগত দিন
চিঠির নৌকোর সারি বিবর্ণ কিছু অক্ষর
এপাশে আমি মেপে নিচ্ছি তখন
মেঘরাগের সুর ভেজাবৃষ্টির কৌতুহল
দ্বিধান্বিত তোমায়
চলে যাব আমি তবু বলি আর
কত অক্ষর সমাধি হলে
খুলে যাবে ওই দরোজা
অথবা তুমি বয়ে আসবে বৃষ্টিরেখা?
এখন হারাবার কিছু নেই আর আমার
জানি আজ তুমি অন্যের প্রেমিকা।
………..
কবিতার অনুধ্যান
লিখছেন – শ্যামাপ্রসাদ সরকার
……………………..
আসলে এই কবিতার লাইফলাইনটি হল,
“চলে যাব আমি তবু বলি আর
কত অক্ষর সমাধি হলে
খুলে যাবে ওই দরোজা
অথবা তুমি বয়ে আসবে বৃষ্টিরেখা?”
এ যেন কালের গভীর থেকে সোচ্চার হয়ে কথা বলা। এটাই তো সমর্পণ, যখন আবিশ্ব ভরে যায় প্রিয়জনের উপস্থিতির আনন্দে।এখানে এই “যাওয়া তো নয় যাওয়া!” এটাই তা সে অন্য কারোর হলেও আপনার। এটাই নিয়তি যেন! ” সে যদিও দ্বিধায় থেকেছে হয়তো তবু অনুরাগের সুর মেপে নিয়েছি বৃষ্টির ধারাবরিষণে। ” প্রশ্ন করি নিজেকেই! এই প্রেম আর প্রকৃতি কি আলাদা? বর্ষার মেঘডম্বরুতেও কি কখনো অভিসারিকার আগমনধ্বনি বাজে না?
অতি অঘটনের পরেও তো যখন বলি,
” আজকেই যাব তার কাছে
বলব পুরু শ্যাওলায় মোড়া দরোজার কড়াটি নেড়ে “আছো”?” সেটাই তো দিগন্তব্যাপী এক অণ্বেষণ। তার নিয়ত যাপন একমাত্র জানে আসল সেই “মেঘরাগের সুর”!
এ কবিতা তাই প্রকৃতির আবহে লেখা প্রেমের দিনযাপন-ই! প্রতীক্ষা আর শেষে সমর্পণের মাধুর্য্যে।
—oooXXooo—