মেরিন ড্রাইভ ( রহস্য গল্প )
মৌসুমী ঘোষাল চৌধুরী
একটা আঙুল জন্ম থেকেই বঁটি দিয়ে কেটে ফেলেছিল ছোট্ট ধূপ।
কচি মেয়ে তার বাবাকে খুশি করতে সব্জি কাটতে বসেছিল । বাবা মেয়ের আঙুলে ব্যান্ডেজ করে বাইক চালিয়ে যাওয়ার সময় বড় একটা গাড়ীর ধাক্কায় রক্তাক্ত লুটিয়ে পড়েছে। প্রথম দৃশ্যের পরে দেখা যাচ্ছে, সেই সময় মন্দারমনিতে মেরিন ড্রাইভে নবদম্পতি। গাড়ি থেকে নেমেই সেই হরিনী উথাল সমুদ্রের উথাল ঢেউ। হঠাৎ দেখে, একটা ছোট্ট আঙুল ভাসছে।
একটু এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখে একটা লোক উপুড় খেয়ে পড়ে আছে। রক্ত ঝরছে মাথা থেকে।
হরিনী ভয় পেয়ে গেল। তার মদ্যপ স্বামী বলে উঠল, ” ও কিছু নয় বাদ দাও। ” ওরা হোটেলে ঢুকে দেখে পুলিশ। ওরা দৌড়াচ্ছে দৌড়াচ্ছে। অন্ধকার ঘনিয়ে এসেছে। অনেক দূর পৌঁছে একটা নৌকায় আশ্রয় নিল। ঘুমিয়ে ছেলেটি স্বপ্ন দেখছে তার স্ত্রীকে কারা টেনে নিয়ে যাচ্ছে। অনেক জল। সামুদ্রিক প্লাবন।
ভোরে যখন ঘুম ভাঙল, উঠেই চমক। তার স্ত্রী নেই।
গাড়ি নিয়ে হন্যে হয়ে খুঁজতে খুঁজতে সেই হোটেলে পৌছাল যেখানে আগে বুকিং ছিল। ঘরে ঢুকে হাঁপাচ্ছে। হঠাৎ দেখে, এ. টি. এম কার্ড নেই। মানিব্যাগ নেই। একটু ঝিমিয়ে পড়েছে আবার। পুলিশ ঘরে, ” এই সেই খুনী। ” একি লিজা তুমি কি বলছ। পুলিশের হাতকড়ায় আবির। আড়াই কোটি টাকার মালিক ছিল আবির। আর লিজার উদ্দেশ্য ছিল তাকে বোকা মানুষ পেয়ে সমস্ত টাকা উধাও করা। লিজা অসম্ভব সুন্দরী, স্মার্ট, আধুনিকা। বিবাহিতা। তবু আবিরকে ভালোবাসার ফাঁদে ফেলে। সাজায় প্লট। আবিরের বন্ধু সালাওত কোনোভাবে খবর পেয়ে ছুটে আসে। লিজা এতটাই
মারাত্মক, ঐ ছোট্ট বালিকা ও তার নির্দোষ বাবাকে ট্রাক ওয়ালার সাথে কথা বলে খুন করে।
তারপর লাশ দুটো আবিরের গাড়ির সামনে ফেলে দিতে বলে। ট্রাক ওলাকে পচিশ লাখ টাকা দিতে রাজী হয়। এমন ভাবে কেস সাজানো আবির ছাড়া পাবে না। সালাওত ক্রিমিনাল ল ইয়ার। বলে ওঠে, ” আবির, তোকে মুক্ত করবই। ” কোনো ক্লু নেই। ট্রেনলাইনের পাশে আবিরের বাড়ী ছোটে। রাতের পর রাত কাটিয়েছে লিজা। লিজার গলার একটা ক্রস পড়ে আছে। ভালো করে নেড়েচেড়ে দেখে। একটা ঠিকানা। তার বাড়ির। বাড়ি চলে যায়, সালাওত। গিয়ে দেখে, পঙ্গু স্বামী এক বোনকে নিয়ে থাকে। আর হরিনী স্ত্রী চাকরি পায় নি বলে এই প্রফেশন নিয়েছে। আবিরের মেয়েমানুষের শরীরের প্রতি লোভ ছিল। এই ফায়দা নিয়ে আবিরকে ফাঁসায়। কিছুই করার নেই। সব সত্য জানার পরেও সালাওত চুপ থাকে। লিজা সালাওতের সাথে হাত মেলায়। লিজার আগুনে ঝলসে সালাওত আবিরকে ভুলে গিয়ে লিজার সাথে স্পেন চলে যায়। আবিরের চোখে প্রবলেম ছিল। কুড়ি বছর পর দেখে ঐ কচি মেয়েটি তার নিজের মেয়ে ছিল। আর ভদ্রলোক তার দাদা। এইভাবে একটা লোভনীয় নারী শরীরের লোভে আবিরের পুরো ফ্যামিলি শেষ। আর তার নিজের স্ত্রী পাগলা গারদে। সালাওত ও নিরুদ্দেশ।
—oooXXooo—