মাতৃভাষাই গতি
সুপর্ণা দত্ত
আরে আরে জগমোহন
করেছো কি সর্বনাশ!
বাংলা ভাষার উপর দেখি
তোমার নেই কোনো আশ্বাস!
নাতনীকে তাই ভর্তি করেছো
ইংরেজী মাধ্যম স্কুলে!
তাতেই নাকি নাতনী তোমার
গেল বাংলা ভাষা ভুলে!
অ-আ, ক-খ আর একে চন্দ্র
জানে না মোটেই সে যে,
A- B- C- D আর 1 – 2 সে
গড় গড়িয়ে পড়ে নিজে।
আতা গাছে তোতা পাখি
শোনা যায় নাকো তার মুখে,
লা-মার্টিন, শেক্সপিয়ার, হোমার
সব ঠোঁটের আগায় থাকে।
বাঙালীর ঘরে জন্ম নিয়েছে
বাংলা পারে না হায়!
বাংলা ভাষায় করলে ডিগ্রী
নাকি চাকরি পাওয়া দায়।
মায়ের কাছে প্রথম শেখা
প্রথম বললো “মা”,
ইংরেজি স্কুলে পড়েই হল
ইংরেজি ভাষার ছা!
রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, সুকান্ত
কিংবা সুকুমার রায়,
অথবা “গান্ধীবুড়ি” মাতঙ্গীনী
বা আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়,
তাঁরাও ছিলেন বাঙালী আর
বাংলার তাঁরা গর্ব।
নেতাজী, স্বামীজী সারা বিশ্বে কখনো
বাংলাকে করেননি খর্ব।
যদিও বাংলার ছেলে কবি মধুসূদন
পরো ধন লোভে পরি ধর্ম ত্যাজিলেন,
দেশ ছেড়ে, কুল ছেড়ে সর্বহারা হয়
কুললক্ষ্মীর আহ্বানে দেশে ফিরেছিলেন।
তাইতো বলি, শোনো শোনো ওহে জগমোহন
যতই ঝোঁকো ইংরেজির প্রতি,
বিপদে পড়লে বাঙালীর কাছে
বাংলাই একমাত্র গতি।