জাগরী
পারমিতা
মুছে দাও আমাদের পায়ের চিহ্ন রাজপথ থেকে,
দেওয়ালে দেওয়ালে টাঙানো রাতদখলের ইস্তেহার ছিঁড়ে দাও। উৎসবের উল্লাসে চাপা দিয়ে দাও আমাদের চিৎকার। আমাদের স্লোগানের ভাষায় নিষেধাজ্ঞা জারি কর। নিষিদ্ধ করো মিছিল জনতার
আমরা তবুও হেঁটে যাবো রাজপথ দিয়ে
রাতের অন্ধকারকে মশালের আলোয় আলোয়
করে নেব আগুন রঙা ভোর।
চিৎকার করে বলবো ‘এ শহর আমার তিলোত্তমা,
এ শহরকে আমরা ধর্ষকের হাতে ছেড়ে দেব না। আমরা জেগে থাকবো রাতের পর রাত
আমাদের রাতজাগা চোখ রক্তের মতো লাল হবে
তোমার মনে পড়বে তিলোত্তমার চোখে
জল নয় রক্ত ছিল, আমরা তোমায় ভুলতে দেব না।
ভুলতে দেব না আমাদের মেয়েটা বাড়ি ফেরেনি,
ভুলতে দেব না মেয়েটা একটু ঘুমোতে চেয়েছিল।
যারা ওকে নিশ্চিন্ত ঘুম থেকে তুলে
চিরঘুমের দেশে পাঠিয়ে দিয়েছে
তাদের রাতের ঘুম আমরা কেড়ে নেবো।
এখন বুঝি আশ্বিন মাস?
শরৎ এসে গেল নাকি?
কই আকাশ তো নীল হল না
নীল আকাশে সাদা মেঘের ছবি তো ফুটলো না
মা আসছেন বলে আনন্দ জাগছে না তো মনে!
মা কি কাঁদছেন? এতো বৃষ্টি কেন?
মায়ের চোখ আঁকতে গিয়ে এক ফোঁটা লাল রঙ
ঝরে পড়ল মায়ের চোখ বেয়ে?
থাক। মুছো না। সবই মায়ের ইচ্ছা
মা তো ভোলেন নি মেয়েটার চোখে রক্ত ঝরে ছিল।
দুর্গাপুজোর নির্ঘন্ট দেখেছ?
মা এবারে ডাক দিয়েছেন
এসো মেয়েরা, রাত দখল করো।
ভয় কি? স্বয়ং মা জাগবেন আমাদের সাথে।
জেগে থাকো মা। অসুরদলনী রূপে জাগো।