তুমি কবি
শ্রী নীলকান্ত মণি
হুঁ৷
রাজা, তবে ‘রক্ত করবী’-র৷
তুমি কি নন্দিনী!
হয়তো হবে৷
ক্ষতি কি যদি তুমি তা নাও হও!
থামবে না৷ স্বপ্ন দেখো, স্বপ্ন দেখাও৷
যদি তোমাকেই নন্দিনী ভাবি, তা কি
দোষের কিছু হবে!
ভাবনার গতি কখনো সর্পিল, দূরে তাকে
এখন না হয়, সরিয়ে রাখি তবে৷
তুমি কবি
মনে মনে বোনা স্বপ্ন গুলি
কালির আঁচড়ে আঁকা
সাদা কাগজের বুকে ফুটে ওঠা
সবুজ প্রাণের অঞ্জলি৷
ফোটা ফুল গুলি
অজানা কেউ যদি সংগোপনে
তুলে নেয় বুকে
সবগুলি, তাও তা কি কখনো শূন্য হবে!
তারপরও তা তেমনি হাসিমুখে
অম্লান বদনে চেয়ে রবে৷
কখনো কখনো হয়তো বা
সে বিষণ্ন ও হবে
পথিক-সঙ্গ পেলে ভালো হতো
এই কথা ভেবে৷ জানো—
স্বপ্ন ও বাস্তবে ভীষণ প্রভেদ!
মন জানে সব, তবু দেখো
অবাধ্য পথিক মনন সে পথেই
অবিরাম হেঁটে যাবে!
তাতে কি! সে হাঁটুক—
রাগ দুঃখ অভিমান হাসি-কান্না
নিতি নব অনুরাগ একা অতি সংগোপনে
কতো না কথা কবে!
মন স্বপ্ন বুনতে ভালোবাসে
একান্ত মননে সে স্বপ্ন বুনে যাবে৷
স্বপ্ন! সে স্বপ্ন ই, সত্য বলে ভেবে নিলে
বড্ডো ভুল হবে৷
কবি!
তুমি শুধু ভালো বেসো স্বপ্ন কে ই!
বাস্তবের মাটিতে না যদি খোঁজো তাকে
স্বপ্ন তোমার সেখানেই সার্থকতা পাবে৷
মন যদিও নাছোড়, রাজপথ ছেড়ে
খালি অলি গলি ধরে সে চলে
বেয়াড়া ভীষণ
দেখেছি তো, ব্যথা পাবে, তবু ফিরে ফিরে
হোঁচট ও খাবে, এমনই ভালো বাসে৷ কী জানি,
কেন জানি তাও ভালো লাগে বেশ!
অবৈধ প্রবেশ প্রস্থান, উঁহুঁ,
এখানে নিষেধ৷
চোখে জল, ওষ্ঠ জুড়ে মৃদু হাসি
সে ব্যথায় নির্দ্বিধায় স্নেহের প্রলেপ বুলাবে!
আহা! এ কি অনুভূতি! কি বিচিত্র এ কবি মন!
ঠিকই, বাস্তবের আঘাত না পেলে খেলা তার
একটুও জমে না যে!
এও বাহ্য৷ এমনই ভাবো তবে!
তবু বলি, কবি! হে বিরহী অনুভব
হৃদয় অলিন্দে তোমার অর্ঘ্য অফুরান
প্রাণের গভীরে যদি তুমি তারে যত্নে
রাখো ধরে ডালি সে সযতন,
অকপট দরদী মনন
সারাটি জীবন ধরে ফুটিয়ে ই যাবে অজস্র ফুল
বাতাসে বিলিয়ে যাবে সৌগন্ধ তার
হয়তো বা অকারণ
অনিন্দ্য সুন্দর ব্যথার ভুবন জেগে রবে
কানে কানে কথা কয়ে যাবে!
—oooXXooo—