ছেলে তখন দুবাই পোর্ট থেকে প্রায় কুড়ি কিলোমিটার দূরে অ্যাঙ্কারে দাঁড়িয়ে আছে।জাহাজের ডাইনামোর বড় ত্রুটি দেখা দেওয়ায় জরুরি মেরামতির প্রয়োজন হয়ে পড়লো।জার্মানি থেকে টেকনিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার এনে মেরামতি করা হবে। সমুদ্রের মাঝে তখন জাহাজ যে জায়গায় অবস্থান করছিল সেখান থেকে মোবাই লের টাওয়ার সবসময়ে সঠিক ভাবে পাওয়া যেত না। তার উপর আবহাওয়ার খামখেয়ালিপণায় ঘটতো ব্যাঘাত তবুও বাড়ির সাথে একটু কথা বলার জন্য উঠে যেত জাহাজের মাস্তুলে।ওই সময়ে ১২ই সেপ্টে ম্বর ২০১২ ভোর ৪টে ২৪ মিনিটে পাকিস্তানের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে যায়। সেখানে এক সপ্তাহ কাটিয়ে আবার রওনা হলে তখন সমুদ্রের মাঝে কথা বলাতে কখনও প্রচন্ড হাওয়ায় শো শো শব্দে শুনতে পেতাম অস্পষ্ট কথা- আবার কখনও বা স্পষ্ট। মোবাইলের টাওয়ার থেকে যখনই বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে তখন গুগল সার্চ করে শীপের অবস্থান দেখে নিয়েছি। ঠিক সেইভাবে ১লা অক্টোবর গুগল সার্চ করে দেখতে পেলাম সবেমাত্র সাংহাই পোর্ট অতিক্রম করে এগিয়ে চলেছে। এবং ৪ঠা অক্টোবর GULF গিয়ে পৌঁছেছে। তবে সাউথ আফ্রিকা যেতে ছয় সাত দিন সময় লাগবে। সোমালিয়ার বিপদজনক জায়গা ঐ দিনই অতিক্রম করবে। ১১ই নভেম্বর দুবাই পোর্টে এসে পৌঁছিয়ে আমার সাথে কথা বলে। তখন ওর বন্ধু পিন্টু, গণো, বাপ্পা সবাইকে খবরটি জানিয়ে দিতে বলে এবং জানিয়ে দেয় যে আবার আগামীকাল শারজা রওনা হয়ে যাবে। এই খবর পেয়ে পিন্টু ও বাপ্পা ফোনে তার সাথে কথা বলে পায় আনন্দ।এই সময়ে আমরাও থেকেছি ভীষণ দুশ্চিন্তার মধ্যে। সত্যি কথা বলতে কি এই প্রফেশনে যে সমস্ত নাবিক যুক্ত তাদের পরিবারকেও ঠিক এই একই রকম দুশ্চিন্তায় প্রতিটি মুহূর্ত কাটাতে হয়। ১২ই নভেম্বর ২০১২ বাড়ির একদম গেটেই শ্যামা পূজা উপলক্ষে ফাংশন চলছে।বাড়ি তখন জমজমাট। সমস্ত সাউন্ড বক্সের গুমগুম শব্দে মেতে উঠেছে সবাই।কিন্তু আমার মনে তখন সুপ্ত বেদনা অবিরত আঘাত করছে।অনুষ্ঠানে উপস্থিত আছে সবাই কিন্তু নেই শুধু সে। তবুও তাকে অন্ততঃ একটু আনন্দ দেবার উদ্দেশ্যে চলে গেছি বক্সের সাউন্ড থেকে দূরে। পথের মাঝে দাঁড়িয়ে শুনিয়েছি ফাংশানের বিবরণ।কখনও কাছে এসে শুনিয়েছি ফাংশানের গান।তাতেই হয়েছে কত খুশি।ক্লাবের সকল কাজে নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে করেছে সব সময় সকল কাজ।কোনদিন দ্যাখেনি তার ব্যক্তিগত স্বার্থ।অন্য পাঁচ জনের মধ্যে সে ছিল চিরকালই কর্তব্যে অনড়। স্বচ্ছ নীতিতে সততার সাথে করেছে সকল কাজ।পূজার প্যান্ডেলে রাত জেগে করেছে নিজের ভেবে প্রয়োজনীয় সমস্ত কাজ। বিনিময়ে পেয়েছে কখনও ব্যথা কিন্তু তাতেও থেমে থাকেনি। ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যেও মানিয়ে নিয়ে চলেছে। দুঃখে অনুতাপে এমন দিনও কেটেছে- কষ্টকর সকল কাজ সম্পন্ন করে দিয়েও আনন্দের সময় মনের দুঃখে কাটিয়েছে দূরে কলেজ বন্ধুদের পাড়ায় গিয়ে। সেই দুঃখ নিরবে সহ্য করে গেঁথে রেখেছে হৃদয়ে।যখন ছিল ছোট, তখন বড়দের অন্যায় অনাচারেও করেনি অসম্মান – তবে বলতে কিন্তু ছাড়েনি- “আজ ছোট আছি। একদিন তো হব বড়!সেদিন কি পারবো না বুঝতে- কোনটা সত্যিকারের ন্যায় আর কোনটা কতটা অন্যায়—-?” সেদিনের তার সেই কথায় ছিল অন্তরে জমে থাকা সুপ্ত অভিযোগের ইঙ্গিত—-! অবশ্য এখন অনেকের কাছেই শুনতে পাই তার সচ্চরিত্রের সুখ্যাতি। মুখের উপর যখন শুনতে পাই এমনটা তখন সত্যিই পিতা হিসেবে হয় গর্ব ।আবার এই সুখ্যাতিতে কারো হয়েছে বড় গাত্রদাহ। সমাজে চলমান সকল মানুষের স্বভাব ও চরিত্র এক রকম স্বচ্ছ হয় না। আমাদের প্রতিবেশীদের মধ্যেও তার অন্যথা নয়। কেউ হয়েছে সত্যিকারের খুশি আবার কারো বা হয়েছে মুখ ভার। কিন্তু কে করবে সেই বিচার?এমনই এক তথাকথিত বিচার সম্পর্কে আমার সেই দিনের ক্ষোভে ব্যক্ত হওয়া বক্তব্যকে আজও মনে পড়ে- “চোরে করে চোরের বিচার- ওদের বিচার করবে কে? যেদিন হবে ওদের বিচার,বসবে সেদিন ওরাই বেঁকে –।” সেই দিনের সেই কথাটাই সেদিন থেকে মনে গেঁথে রেখেছিল।শুধু অপেক্ষায় আছে,কবে আসবে সেই দিন, যেদিন এই সব স্বার্থান্বেষী বর্নচোরা ভালো মানুষের সত্যিকারের মুখোশ হবে উন্মোচন। ওদের শীপ ৩রা ডিসেম্বর ২০১২ অ্যাঙ্কার তুলে ৪ঠা ডিসেম্বর রাত দেড়টায় এসে পৌঁছালো দুবাই পোর্টে। এই সময়ে শীপে প্রয়োজনীয় জল ও খাবার সংগ্রহ করতে থাকে।কয়েক দিনের মধ্যেই সে উপলব্ধি করতে পারে কোম্পানির ম্যানেজমেন্টে কোন না কোন প্রব্লেম শুরু হয়েছে। তখন জাহাজের মালিক মিঃ সঞ্জীব শর্মার সাথে ডাইরেক্ট ফোনে কথা বলে কিন্তু রহস্য সঠিক জানা যায় না।ডিসেম্বরের ২৫। শীপে বড়দিনের উৎসব পালিত হবে। এই দিনের এই অনুষ্ঠানের সমস্ত দায়িত্বটা তার নিজের উপর নিতে চেয়ে ক্যাপ্টেনকে অনুরোধ জানালো।তিনি তার উপর ভরসা করে সমস্ত দায়িত্ব তাকে দিলেন।সে তার মন মতো করে পুরো অনুষ্ঠানটা পরিচালনা করলো। সবাই হলেন অত্যন্ত খুশি।ক্যাপ্টেন ভাবতে পারেননি, এত সুন্দর অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।সবাই করলেন তার বুদ্ধি ও কাজের তারিফ।পোর্টে দাঁড়িয়ে থাকা অন্যান্য শীপের ক্রিউরা এই অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করে আনন্দ উপভোগ করলো।সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠান সুসম্পন্ন করাতে স্বয়ং ক্যাপ্টেন তাকে করলেন পুরস্কৃত। সেদিনের সেই অনুষ্ঠানের ভিডিও রেকর্ডিং করে রাখলেন ক্যাপ্টেন নিজেই। রাত্রে অনুষ্ঠান শেষে যখন আমায় ফোন করে সব জানালো তখন শুনে সত্যিই সেদিন খুব ভালো লাগছিল—-। ৩১শে ডিসেম্বর রাত বারোটা বাজতেই সে আমাদের সকলকে ফোন করে জানালো HAPPY NEW YEAR 2013. বিদায়ী বর্ষ 2012কে পিছনে ফেলে শুরু হলো শুভ নববর্ষ 2013. ফেলে আসা বছরের সুখ-দুঃখ, পাওয়া না পাওয়ার হিসাব রেখে আরও সুখ, আরও শান্তির প্রার্থনায় মত্ত হল।বিগত বছরে পাবার আশায় যা পায়নি,সাফল্যের প্রচেষ্টায় যেটা অসাফল্যের বন্ধনে রয়ে গেছে আবদ্ধ, তার স্বার্থক সাফল্যের জন্য বিধাতার কাছে জানালো অন্তরের আকুল আবেদন। আমরাও দূর থেকে করলাম আশীর্বাদ। সাফল্যের জোয়ারে ভরে উঠুক তার জীবন- এই কামনায় জানা- লাম আকুল প্রার্থনা। ১১ই জানুয়ারি ২০১৩ প্রকৃতির তাণ্ডবে বিচ্ছিন্ন হলো যোগাযোগ ব্যবস্থা। ক্ষতিগ্রস্ত হলো জাহাজের ইন্টারনেট পরিষেবা।এই সময়ে গাল্ফ- কান্ট্রিতে কালবৈশাখীর মতো হঠাৎ হঠাৎ মারাত্মক বিপর্যয় দেখা দেয়।সেদিনও হলো তেমনটা।ছোট ছোট অনেক জাহাজ হলো অসুবিধার সম্মুখীন। প্রতিকূল পরিস্থিতি পরদিন হল অনুকূল। সবাই হল দুশ্চিন্তা মুক্ত।২১শে জানুয়ারি২০১৩ তাদের জাহাজ দুবাই পোর্টে এসে পৌঁছালো।এবারও সংগ্রহ হতে লাগলো প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী। কুক হিসাবে বুঝতে পারলো প্রয়োজনীয় চাহিদার তুলনায় সরবরাহে এলো শ্লথ- গতি এবং কোম্পানির নির্দেশে কুককে সেই ভাবেই মেকআপ নিতে হয়েছে। ২৬ শে জানুয়ারি শীপের ক্যাপ্টেনের সাথে ছেলে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে কথা বলিয়ে দেয়। উনার সাথে কথা বললাম। খুব খুশি হলেন- আমিও তাই–। তিনি খুব শীঘ্রই ভিয়েতনাম ট্রান্সফার হয়ে যাবেন সেজন্য ছেলে বড় অসহায় বোধ করছিল। এতদিন একত্রে কাজ করে উভয়ের মধ্যে গড়ে উঠেছিল এক সুসম্পর্কের বন্ধন। আমার সাথে কথা বলে তিনি প্রতিশ্রুতি দিলেন সব রকম সহানু- ভূতির।ছেলেও সেই প্রত্যাশায় রইল।২৮শে জানুয়ারি ২০১৩ ক্যাপ্টেন বদলির পূর্ব মুহূর্তে ক্রিউরা জানতে পারে কোম্পানির নানান অস্বচ্ছতায় সরকারি আইনের রোষানলে পড়ে গেছে তাদের শীপ।ওদের শীপ হয়ে গেল ব্লাক লিস্টেড।কর্মরত নাবিকেরা ভীষণ চিন্তিত হয়ে পড়ল।এই সময়ে শীপের মালিকপক্ষ ও নাবিকদের মাঝে তীব্র অসন্তোষ দেখা দেয় কিন্তু মালিক সেখানে খুব প্রভাবশালী ব্যক্তি তবুও সরকারি আইনের দায়বদ্ধতায় নতি স্বীকার করতে হলো।বাধ্য হয়ে এক এক করে বিভিন্ন দেশের নাবিকদের প্রাপ্য স্যালারি প্রদান করে দেশে ফেরত পাঠাবার ব্যবস্থা করতে থাকে।এমতাবস্থায় নতুন কোন নাবিক এই শীপে আসতে চাইলো না।কুকের পোস্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ তাই সবাইর সাইন আপ হলেও কুকের হোতে বিলম্ব হতে লাগলো।আমরাও এক দুশ্চিন্তার মধ্যে দিন কাটাতে লাগলাম–। কলকাতার ডানলপে INDIAN STATISTICAL INSTITUTE এর বিজ্ঞাপনে ২০১২ সালে কুকের পোস্টে প্রার্থী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি হয় তখন সে বাড়িতে।অনেক চিন্তা ভাবনা করে তখন আগ্রহের সাথে সেখানে আবেদনপত্র জমা দেয় কিন্তু কোম্পা- নির নিজস্ব অসুবিধার জন্য ইন্টারভিউ নিতে অনেক বিলম্ব হয়।এদিকে দুবাই থেকে চাকরির কল আসায় নিরুপায়ে সেখানে জয়নিং করতে চলে যায়।তখন কর্মরত অবস্থায় ২০১৩ সালের ১২ই ফেব্রুয়ারি INDIAN STATISTICAL INSTITUTE থেকে ইন্টার- ভিউ লেটার আসে বাড়িতে।২৩ শে ফেব্রুয়ারি ইন্টার- ভিউর নির্ধারিত তারিখ।আমি ছেলেকে ফোন করে সব জানালাম কিন্তু দুর্ভাগ্য সেই সময়ে কোম্পানির এই দায়িত্ব ফেলে রেখে দুদিনের জন্য আসার কোন সুযোগ করতে পারেনি।তাই ইন্টারভিউর দিন সে এবং আমরা বড় আফসোস করছিলাম।১৩ই ফেব্রুয়ারি ২০১৩ রাত বারোটা পেরোতেই আমি তাকে ফোন করে শুভ জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানালাম।সেই সাথে তার মা ও বোন।ফোন ছেড়ে ওর মা দুঃখ করে বললো – কাছে থাকলে আজ একটু মিষ্টান্ন ও পাঁচটা মিষ্টি দিয়ে আশীর্বাদ করতাম কিন্তু—— চোখ মুছলো। মায়ের মন, তাই এমনটাই তো হওয়া স্বাভাবিক—! ১৬ই ফেব্রুয়ারি রাতে ছেলের ফোনে শীপের আভ্যন্তরীণ সংকটময় পরিস্থিতির কথা জানতে পেরে ভীষন চিন্তিত হয়ে পড়লাম। ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যে মানসিক বিধ্বস্ততায় এই সময়ে সহ্য করতে হয়েছে জাহাজের এই জটিল পরিস্থিতি। অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করে অসীম সাহসের সাথে নাবিকেরা সমবেত আলোচনার মাধ্যমে সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে একত্রে।এই সময়ে যখন তারা জানতে পারলো – এই জাহাজ সোমালিয়ার অন্য মালিকের হাতে হস্তান্তর হতে চলেছে এবং পরবর্তী যাত্রা হবে আবার সেই সাউথ আফ্রিকা তখন তারা নিরাপত্তাহীনতার কথা চিন্তা করে এক কথায় সবাই মিলে সাইন আপ করার সিদ্ধান্ত নেয়।নির্দিষ্ট ফর্ম ফিল আপ করে কোম্পানিতে পাঠিয়ে দেয়। সকলেই তখন এক চরম দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়ে যায়।এমতাবস্থায় ছেলে সঙ্গে সঙ্গেই AIRBORN অফিসের সাথে যোগাযোগ করে জানতে পারে ইন্ডিয়াতে INDIAN CDC দেওয়া শুরু হয়েছে।তাই কাল বিলম্ব না করে কলকাতার টিকিট না নিয়ে সোজা মুম্বাইয়ের টিকিট সংগ্রহ করে। ৬ মে ২০১৩ দুবাই এয়ারপোর্টে পৌঁছেই আমাকে জানায় পরদিন ভোর সাড়ে চারটেয় মুম্বাই এয়ারপোর্টে পৌঁছে যাবে।সেইমতো পরদিন সকালে মুম্বাই পৌঁছে আমাকে জানালো পৌঁছালো সংবাদ। আমাকে ফোন করার পর পরই ফোন করলো ক্যাম্পাইজিকে।গুড মর্নিং জানিয়ে তাকেও জানিয়ে দিল দেশে প্রত্যাবর্তনের সংবাদ। তিনিও বিছানা ছেড়ে উঠে পড়লেন। অপেক্ষা করতে লাগলেন তার আগমনের উদ্দেশ্যে।স্বল্প সময়ের মধ্যেই সোজা ট্যাক্সি করে পৌঁছে গেল বেলাপুরের রুমে। দীর্ঘ ৯ মাস পর হলো তাদের চাক্ষুষ দেখা। সাক্ষাতে তারা হলো খুশি। রুমে পৌঁছেই ফোন করলো-নবীন সারকে। তখন তিনি কলকাতায়।পরদিন সকালের ফ্লাইটে তিনি জরুরি প্রয়োজনে দুবাই যাচ্ছেন।একমাস পরে ফির- বেন। শুনে হল আশাহত।পরের দিন অফিসে পার্টনার মনোজ স্যারকে ফোন করলে ইন্ডিয়ান CDC প্রস্তুতি শুরুর কথা অস্বীকার করেন। সে চিন্তিত হয়ে পড়ল -সঙ্গে আমিও। দিনে দিনে পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে চাকরির ক্ষেত্রেও হচ্ছে নিয়ম বদল। আগে যে কোন দেশের যে কোনও নাবিক যে কোনও CDC নিয়ে বিদেশে চাকরিতে জয়েনিং করতে পারতো কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে ক্রিউ স্বয়ং যে দেশের নাগরিক, সেই দেশের CDC তাকে অবশ্যই রাখতে হবে নইলে সে দেশের সীমানা অতিক্রম করতে পারবে না। এমতাবস্থায় ছেলে নিজেই বুঝতে পারল তাকে বিদেশ যেতে হলেই INDIAN CDC অবশ্যই তৈরি করতে হবে। তাই ইন্ডিয়ান CDC তৈরি করবার জন্য ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়ল।প্রায় বছরখানেক হতে চলল ঘরবাড়ি ছেড়ে চাকরির জন্য দেশ-বিদেশে রয়েছে। বাড়ি আসবার কথা বললেও জীবনের ক্যারিয়ারের কথা চিন্তা করে বাড়ি আসতে অস্বীকার করল।কারণ কোম্পানি থেকে যেকোনও সময় কল আসলেই আবার চলে যেতে হবে। আগের অভিজ্ঞতায় দেখেছে কল এলে মাত্র তিন দিন সময় পাওয়া গেছে। তার মধ্যেই জয়েনিং করতে হয়েছে। ফলে ঐ স্বল্প সময়ের মাঝে নানা রকম অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। তাই সেই কথা স্মরণ করেই তখন মুম্বাই ছেড়ে বাড়ি কিছুতেই আসতে চাইল না। এইভাবে একদিন, দুইদিন করে কেটে গেল প্রায় দুই দুটি মাস——।