স্বপ্ন
দীননাথ চক্রবর্তী
স্বপ্ন রে!
তুইও গেলি চলে
রঙ বদলে
আমাদের ছেড়ে
ক্ষমতার দলে
কেন গেলিরে ?
কী পাবি তুই ?
এই অতিমারিতে।
যাস না যাস না ওরে
যাস না চলে
তুই মুখ ফেরালে
কী নিয়ে বাঁচবো ওরে ?
বল তাহলে ?
তুই তো বাঁচার মূলে
জানিস তো ভালো করে
জীবনের ধারাপাতে।
স্বপ্ন রে !
বুকে হাত দিয়ে বল
নয় ছলাকল ?
কালো আঁধার ঘুচাবি ব’লে
রাতারাতি অবহেলে
সাদরে আনলি ডেকে
জীবনের ছন্দ তালে
চরম রসাতল
বল কিনা বল ?
সুর্য তো ওঠেনি ওরে
বরং মরি ব্জ্রপাতে।
স্বপ্ন রে !
কে মধু খায় ?
ফুলে ফুলে ফলে ফলে
দিব্যি ঘুমায়
রাতে বিছানায়
গান শুনতে শুনতে
মউল তখন বনে বনে
বাঘের মুখ ছুঁয়ে ছুঁয়ে
সুন্দরবনে
মধুর স্বপ্নে বিভোর।
ঘরে উপোসী বধূ
ব্রত ছুঁয়ে ছুঁয়ে মধু
ছলাত্ ছলাত্ ঢেউ বুকেতে
ঘুম নেই দিনরাত
কামড় দেয় ইঁদুর হঠাৎ
তবু তো দু’চোখে স্বপ্ন ভোর
জানতে অজান্তে।
স্বপ্ন রে !
নয়নে যার নেই অঞ্জন
ভাবে সঞ্জীবন
মনেতে মরুতৃষা
যশ খ্যাতি ভালোবাসা
রূপ রস গন্ধে অন্ধ
পচাগলা দুর্গন্ধ
যেহেতু হাতে তার
দেদার ক্ষমতা
নাইবা থাক বুকে
মমতা সততা
তবু ভাবের তাঁতে বোনে জামদানি
বিকট ভাবনার আমদানি
তুঘলকী ক্রিয়াকলাপ
রাগ অনুরাগ
আলাপ বিলাপ
অবশেষে
শুধুই নিরানন্দ
জ্বলন ফোস্কাতে।
স্বপ্ন রে !
যে লজ্জা রে দিয়েছে বলি
এমনকি
ছেড়েছে নামাবলী
সরাসরি মুখোমুখি
গতরে বিরোধী নাড়ি
হৃদয় মনে পুরোপুরি
ক্ষমতার মাখামাখি
হরিনাম বুলি।
তুই তবু তাদেরই হবি
বাকি সব মুলতুবি
হাতে হবিষ্যি
হোকনা সে যতই বিশ্রী
যত সুখ তাদেরই কেবল
খেলায় খেলায় বে-দখল
নীড় ভাঙা বুলবুলি
দুঃখের বিন্দুতে বিন্দুতে।
স্বপ্ন রে!
—oooXXooo—