গভীর নিম্নচাপে অবিশ্রান্ত বৃষ্টিতে এই সময় সমস্ত এলাকায় জল জমতে থাকে।পরের দিন আরও বেড়ে যায়।২৪শে সেপ্টেম্বর রাত্রের বৃষ্টিতে আমাদের বাড়ির বারান্দা ছুঁইছুঁই।চারিদিকে জলে থৈথৈ করছে।ছেলে আটকে পড়লো মাঠকল তার বন্ধু পিন্টুদের বাড়িতে। ফোন করে রাত্রে আসতে নিষেধ করলাম।তবুও জলের প্লাবনে ঘরেতে জল উঠে যেতে পারে বুঝেই বাড়ি আসবার কথা ভাবল।চেষ্টাও কিছুটা করলো কিন্তু আমার ফোন পেয়ে সেখানে থেকেই গেল।ওদের বাড়ির ছাদ থেকে আশেপাশের দৃশ্য দেখে তখন বন্ধুদের বলল-“জল থৈ থৈ সমুদ্রের মাঝে কাজ করতে গিয়ে দেখেছি সেই চিরাচরিত এক রূপ কিন্তু আজ চোখের সামনে দেখছি এক অন্য রূপ। এ যেন “ল্যান্ড সমুদ্র”।পাড়ার মধ্যে আমার বাড়ির ভীত তখনকার দিনে সব থেকে ছিল উঁচু তবুও ঘরের মধ্যে ৮ ইঞ্চি জল থৈ থৈ করছে।মেঝেতে জমানো গাছের শুকনো নারকেলগুলি তখন ফুটবলের মত ঘরের মধ্যে এপাশ ওপাশ ভেসে বেড়াচ্ছে। সেই দিনের কথা মনে পড়লে সেই দৃশ্য চোখের সামনে আজও ভাসে। আনন্দে বেশ কিছুদিন কেটে যাচ্ছিল।এই সময়ে RKHS এর অফিস থেকে মুম্বাই যাওয়ার জন্য ফোন আসে কিন্তু সেখানে পুনরায় কাজ করার আগ্রহটা তখন অনেকটা কমে গেছে।যোগাযোগ করতে থাকে অন্যত্র। মাঠকলে এক এজেন্ট মিঃ পলের সাথে যোগাযোগ করে মাসকট যাবার জন্য পাসপোর্ট জমা দিয়ে মেডিকেল করিয়ে নেয়। ভিসা এবং টিকিট আজ আসে, কাল আসে করে বিলম্ব হতেই থাকে। তখন জরুরী কাজে ১০ই মার্চ ২০০৮ ঝাড়খন্ডে তার মাসির বাড়ি রওনা হয়।সেখান থেকে মিঃপলের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলে, যাতে টিকিট ও ভিসা এলেই চলে আসতে পারে। অবশেষে ধৈর্য হারিয়ে যখন বুঝতে পারল সেখানে জবের কোন নিশ্চয়তা নেই তখন মাসকট যাবার সিদ্ধান্ত বাতিল করে অন্যত্র যোগাযোগ করতে থাকে। ইন্টারভিউর জন্য চিঠিও আসে। এই সময়ে তার মামার বিয়ে উপলক্ষে মাসিকে নিয়ে ২৪শে এপ্রিল বাড়ি পৌঁছায়।২রা মে২০০৮ মামার বিবাহ সম্পন্ন হবার পর জবের জন্য প্রয়োজনীয় কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।এই সময়ে কল্যাণী সীমান্তের এক বন্ধুর কাছ থেকে বউবাজার বি বি গাঙ্গুলী স্ট্রিটে এক অফিসের ঠিকানা পায় যে অফিসের মাধ্যমে তার ঐ বন্ধু জব পেয়েছিল।দুদিন পর আমাকে এক রকম জোর করেই নিয়ে গেল সেই অফিসে।যার নাম MERLION MANAGEMENT AND EDUCATION CENTRE। ডিরেক্টর মিঃ শান্তনু পোদ্দার ও কৃষ্ণেন্দু রায়।তাঁদের সাথে সাক্ষাতে কথা বললাম।ছেলের কাছে নানান প্রশ্ন করে যখন তাঁরা জানতে পারলেন সে RKHS এ অনেকদিন কাজ করে এসেছে তখন খুশি হলেন কারণ ওই কোম্পানিতে জব পেতে হলে যথেষ্ট দক্ষতার প্রয়োজন হয়।তাই সাথে সাথেই মুম্বাইয়ের মেইন অফিসের সঙ্গে আমাদের সামনেই শান্তনু বাবু ফোন করে কথা বললেন। তখনই মুম্বাই অফিসের ডিরেক্টর MR.NAVEEN KHOLLE ফোনে ছেলের ইন্টারভিউ নিলেন এবং আমাদের আশ্বস্ত করলেন যে তার জব বিদেশের জন্য হয়ে যাবে কিন্তু প্রথমেই CDC তৈরি করতে হবে।এজন্য বেশ কিছু টাকা-পয়সার দরকার হবে।ছেলে অফিসের বাইরে এসে আমার সাথে আলোচনা করে রাজি হয়ে গেল এবং সেই মতো সবকিছু প্রস্তুতি চলতে লাগলো। কয়েক দিনের মধ্যেই খবর এলো প্রয়োজনীয় CDC রেডি হয়ে গেছে এবং জবও সিলেক্ট হয়েছে। সেই মতো তখনই মুম্বাই যেতে হবে সেখান থেকে মেডিকেল করিয়ে ভিসা ও প্লেনের টিকিট দিয়ে দেওয়া হবে এবং সেখানেই কন্টাক্ট পেপারে সাইন করানো হবে। তখন তড়িঘড়ি চেষ্টা করা হলো ট্রেনের টিকিটের জন্য। শান্তনুবাবু অফিস থেকেও অনেক চেষ্টা করলেন এজেন্টের সাথে কিন্তু কিছুতেই নির্ধারিত সময়ের আগে টিকিট পাওয়া গেল না।আমরা বাড়ি চলে এলাম। বর্ষাকাল নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছে। প্রচন্ড বৃষ্টির মধ্যে উপায়ান্তর না দেখে প্লেনের টিকিট কাটার সিদ্ধান্ত নিলাম। ওই সময়ে সুভাষনগর সুপারমার্কেটে আমার দোকান “শম্পা স্টোর্স” এর পার্শ্ববর্তী দোকান- দার ভূপাল দেবনাথ।এক কথায় ভাই – আবার বন্ধুর মতোও বটে।সে আমার সঙ্গে তখন সহযোগিতা করল। প্রচন্ড বৃষ্টির মধ্যে তাকে নিয়ে এয়ারপোর্টের DECEAN ফ্লাইটের নির্দিষ্ট কাউন্টার থেকে টিকিট নিয়ে এলাম।উনিশে জুন ২০০৮ ভোর ৫টা৫০ মিনিটে ফ্লাইট। এই প্রথম দেশের সীমানা অতিক্রম করে বিদেশের পথে পা বাড়াতে চলেছে।মনে তখন তার নানা রকম আশা উদ্দীপনা ঘোরাফেরা করছে। ভয়ও যে তার একটু আধটু হচ্ছে না তা নয়। প্রায়ই খবরের কাগজে বিদেশে চাকুরির নামে প্রতারিত হবার খবর পড়তাম। সেই খবর যখন তাকে দেখতে বলতাম সে কিছুতেই সেই সব সাংবাদের তোয়াক্কা করত না। তার একটাই কথা- যদি কোনদিন তেমন পরিস্থিতি আসে তখনই তা নিয়ে ভাববো।তেমন পরিস্থিতি নিয়ে তার আগে নয়। আর তখনই যেন এমন বাধা প্রতিহত করে জয়ী হতে পারে সেই আশীর্বাদ সবসময় চাইতো। বিদেশে যেতে চলেছে খবর পেয়ে আগেরদিন ওর দিদা ও ছোট মাসি দেখা করতে এলো।তারাও এয়ারপোর্টে যেতে চাইলো।তাই একটা টাটা সুমো নিয়ে নির্ধারিত সময়ের ঘন্টা খানেক আগেই পৌঁছে গেলাম এয়ারপোর্ট।বাইরে সবাইর সাথে যতক্ষণ থাকা যায় থাকলো।অবশেষে টলিতে লাগেজ নিয়ে যখন সবাইকে প্রণাম করে রওনা হলো তখন সবাইর বুক ফেটে যেতে লাগলো। হাসিমুখে অশ্রু চেপে আশীর্বাদ করলাম।টলি টেনে আস্তে আস্তে ভেতরে প্রবেশ করলো। বোর্ডিং পাস নিলো।বেল্টে লাগেজ দিয়ে সোজা সিকিউরিটি চেকিংয়ে।সেখান থেকে সোজা পৌঁছে গেল প্লেনে। যতক্ষণ দেখা যায় দেখলাম। প্লেনে উঠে ফোন করলো- “বাবা তোমরা আর অযথা ওয়েট করোনা। বাড়ি চলে যাও। আমি মুম্বাই পৌঁছেই ফোন করবো। সবাই ভালো থেকো—-।” বুকের মধ্যে যেন কেমন করে উঠলো। তখন মন মানছে না। বিদেশে চাকরি পেয়ে সেখানে চলেছে এতে আনন্দ হবারই কথা কিন্তু এত অল্প বয়সে আজ অজানা অচেনা অচিনপুরে রওনা হল। এই মুহূর্ত থেকে তার গার্জিয়ান সে নিজে। তার ভালো-মন্দ তাকেই বুঝতে হবে। আবদার করে ভাত মেখে মাকে খাইয়ে দিতে বলতে আর পারবেনা। অসুখ-বিসুখে শরীর খারাপ হলে শিয়রে বসে থাকার আবদার করবে আর কি করে? এইসব ভেবে বড় অসহায় বোধ করতে লাগলাম। অনেক কথা ভাবতে ভাবতে সময় কেটে গেল। হঠাৎ ফোন এলো প্রচন্ড বৃষ্টি বাদলের মাঝেই পৌঁছে গেছে মুম্বাই। তখন সকাল ঠিক নটা এয়ারপোর্ট থেকে সোজা ট্যাক্সি নিয়ে পৌঁছে গেল নভী মুম্বাইয়ের বেলাপুর। সেখানে তার এক বন্ধু দীপঙ্কর দেবনাথের সাথে একই রুমে শেয়ার করে থাকবে বলে, আগেই আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়। সেখানে পৌঁছেই লাগেজ রেখেই ফাইলপত্র নিয়ে ছুটল অফিসে।এই অফিস ছিল মসজিদ বন্দর।AIRBORNE MARINE SERVICES PVT LTD. ডিরেক্টর দুইজন। একজন মিঃ নবীন খলি অন্যজন মিঃ মনোজ শর্মা। অফিসে পৌঁছেই হাতে পেল তার CDC।আগে লোকের মুখে শুনেছে কিন্তু নিজেরটা দেখার সৌভাগ্য এতদিন হয়নি তাই CDC হাতে পেয়ে তার তখন খুব আনন্দ হল।একটু বাদেই পাঠানো হলো মেডিকেল করতে। রিপোর্ট সহ খবর এলো ২২ তারিখে তার ফ্লাইট। ২২ শে জুন ২০০৮। মুম্বাই ছত্রপতি শিবাজী টার্মিনাস ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট থেকে সকাল ৭ঃ৩৫ মিনিটে ফ্লাইট। টিকিট ছিল GULF AIR ফ্লাইটের।বেশ একটু টেনশন হচ্ছিল কারণ এই প্রথম তার বিদেশ যাত্রা।অপরিচিত রাস্তা তাই রিক্স না নিয়ে রাত সাড়ে তিনটায় ট্যাক্সি নিয়ে বেরিয়ে পড়ল রুম থেকে।পৌঁছে গেল পাঁচটার মধ্যেই এয়ারপোর্ট।বারবার ফোন করে আমাকে জানাতে লাগল কখন কি অবস্থায় আছে। এয়ারপোর্টে ইমিগ্রেশন কমপ্লিট করে আমাকে ফোন করে জানালো এখনই প্লেন ছাড়বে। কিছুক্ষণ বাদে পৌঁছে গেল বাহরিন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট। তখন সেখানকার সময় সকাল ৮টা ৪০ মিনিট। ভারতে তখন ১১:১০ মিনিট। সেখানে ওয়েট করতে থাকলো।পরবর্তী ফ্লাইট ছিল বাহরিন থেকে DAMAM KING FAHED AIRPORT সময় সকাল ৯টা ৪৫। মাত্র ৪০ মিনিটে পৌছে গেল DAMAM এয়ারপোর্টে।বাইরে বেরিয়ে দেখতে পেল এজেন্ট তার নেমপ্লেট নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।তাকে দেখেই সে এগিয়ে যেতেই জিজ্ঞাসা করল ARE YOU MR. SUDIP HALDER? সে YES বলতেই তাকে নিয়ে চলল গাড়িতে। ইমিগ্রেশন কমপ্লিট করিয়ে গাড়ি ছুটলো মরুভূমির মধ্য দিয়ে।সঙ্গে আর্মড ফুল সিকিউরিটি। পৌঁছানো খবর জানার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় আমরা। সেও তখন বড় চঞ্চল- খবর জানাবার জন্য। ঠিক ম্যানেজ করে এজেন্টের মোবাইল থেকে মিসড- কল দিলে আমি রিংব্যাক করে বিকাল ৪টা ২৬ মিনিটে কথা বলে জানলাম ভালোভাবেই পৌঁছে গেছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই শীপে পৌঁছাবে। সেখানে পৌঁছে বিস্তারিত জানাবে। গাড়ি ছুটলো অবশেষে এজেন্ট তুলে দিল শীপে। তখন প্রায় বিকাল। আরও ক্রিউ আসবে তাই অপেক্ষা করছিল। GLOBAL INDUSTRIES OF SHORE LLC এর DLB-332 ছিল ওদের নির্ধারিত শীপ।তখন তা পোর্ট থেকে অনেকটা ভেতরে দাঁড়িয়ে রয়েছে।সেদিন সেই সময়ে সে ছিল প্রচন্ড ক্লান্ত।বোটে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে লাঞ্চ করে নিল। তখন যেন এমনিতেই চোখ বুজে আসতে লাগলো। একটু ঘুমিয়ে উঠল সন্ধ্যা নাগাদ। তখনও বোট ছাড়েনি। তবে দেখল বেশ কিছু নতুন ক্রিউ এসেছে। তারাও সবাই ঐ একই শীপে যাবে। সবার সাথে পরিচয় হলো।সন্ধ্যায় সবাই ডেকে দাঁড়িয়ে সিগারেট চা খাচ্ছিল। তখন রাত হয়ে গেছে।ওরা ভিতরের হলে গিয়ে মুভি দেখতে বসলো। রাতে ডিনার সেরে সবাই কেবিনে গিয়ে শুয়ে পড়ল। সকালে ঘুম ভাঙতেই দেখল হালকা দুলছে। মন বললো নিশ্চয়ই ছেড়ে দিয়েছে। বাইরে বেরোতেই দেখতে পেল অনেকটা দূরে চলে এসেছে। তখন বোট চলতেই লাগলো–সন্ধ্যা গড়িয়ে অবশেষে তারা গিয়ে পৌঁছাল DLB 332 এর সামনে।সে এক বিশাল বড় এই শীপ! সেদিন ছিল 23 শে জুন ২০০৮।শীপের কাছে পৌঁছতেই তাদের সবাইকে ক্রেনের সাহায্যে জাহাজে তুলে নিল।সুপারিনটেনডেন্টের সাথে প্রথমে দেখা করে চলে গেল ক্যাম্পবসের কাছে ।তখন তিনি হ্যান্ডশেক করেই বসতে বললেন।পরে এক রকম অনুরোধ করেই বললেন,তাকে ইন্ডিয়ান কুকের কাজটা চালিয়ে দেবার জন্য।সে কন্টিনেন্টাল কুকের পোস্টে সেখানে গিয়ে- ছিল কিন্তু ইন্ডিয়ান কুকের অভাবে সেখানে কর্মরত কন্টিনেন্টাল কুক এর সাইন আপ করাতে পারছে না তাই ওই পোস্টে ক্রিউ না আসা পর্যন্ত তাকে ওই পোস্ট সামলানোর অনুরোধ জানালেন।যদিও সে কন্টি- নেন্টাল কুক তবুও তার ইন্ডিয়ান কুকের কোর্স করাই ছিল তাই স্বাচ্ছন্দে সেই অনুরোধে সম্মত হল। সে বিদেশে যাবার পর থেকে সব সময় সজাগ থাকতাম তখন বুঝি তার ফোন আসে। বাড়ির সবাই তখন বড্ড মনমরা। কি করছে- কেমন আছে কোনরকম অসুবিধায় পড়লো কিনা!এরকম নানান চিন্তায় সব সময় ভাবিয়ে তুলত। এমনই ভাবনার মধ্যে পয়লা জুলাই ২০০৮ রাত ১১ টা ১৮ মিনিটে বোনের জন্ম- দিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে অন্যান্য সংবাদসহ বিস্তারিত জানানোতে খুশি হলাম। শীপে ক্যাটারিং ক্রিউ ছিল মোট ৩৭ জন। অন্যান্য ২৭৫। সবমিলিয়ে ৩১২জন। সে এক বিশাল ব্যাপার। চলতে লাগলো কাজ প্রতিদিন রুটিন মাফিক।শীপে ছিল জিমের ব্যবস্থা।প্রতিদিন সন্ধ্যায় ডিউটি শেষ হলে যেত জিম রুমে। সেখান থেকে ফ্রেশ হয়ে সোজা সিনেমা হলে। সে এক বিশাল হল- একত্রে অনেক লোকের সিনেমা দেখার ব্যবস্থা।সেখানে সিনেমা দেখে সোজা কেবিনে গিয়ে টানা ঘুম। জেগে শুরু হবে পরের দিনের প্রস্তুতি।কেটে যেতে লাগলো দিনগুলি।এমনই দিনগুলোর মধ্যে একটা দিন প্রচন্ড কাজের চাপ ছিল। ডিউটি শেষ হতে ঘন্টা খানেক বাকি কিন্তু কাজ বাকি রয়েছে অনেকটা।ঝটপট করে কাজগুলি করতে লাগলো। তখন চলছে ফিশ কাটিং। মেশিনে খুব তাড়াতাড়ি করে মাছ কাটিং করছে। কাটিং এর সময় মাছের আঁশগুলি খুব জোরে ছুটতে থাকে। কাজের চাপে গতি গেল বেড়ে। হঠাৎ মাছের শির দাঁড়ার একটা বড় কাঁটা ডান হাতের মাঝের আঙ্গুলের ভিতরে খুব জোরে ঢুকে গিয়ে ভেঙ্গে যায়। তবুও কাজ শেষ করার জন্য কাজ করে চলেছে। কিছুক্ষণ পর হঠাৎ বুঝতে পারল যন্ত্রণা শুরু হয়েছে এবং আঙ্গুল বাঁকা করতে পারছে না। ক্রমেই ফুলে উঠছে আঙ্গুল। আর বিলম্ব না করেই অ্যাসিস্ট্যান্ট কুককে বাকি কাজটুকু শেষ করার নির্দেশ দিয়ে সোজা চলে গেল হসপিটাল।ডাক্তার বাবু আঙ্গুল দেখেই হতবাক।শীপে দুজন ডাক্তার ছিলেন-একজন দিনে অন্যজন রাত্রে।সে যখন হসপিটালে পৌঁছালো তখন রাত্রের ডাক্তার সবে এসেছেন।সঙ্গে সঙ্গেই শুরু করলেন সকল প্রচেষ্টা কিন্তু সব চেষ্টা ব্যর্থ।ডাকলেন অন্য ডাক্তারকে। কিন্তু দুজনের প্রচেষ্টাতে সফল হলেন না। কাটা ভিতরে ঢুকে আঙ্গুলের হাড় স্পর্শ করে ফেলেছে। অপারেশন করবার জন্য এই মুহূর্তে অ্যানেসথিতা করবার মত মেডিসিন নেই।তাই সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালেই তখন ক্যাম্পবসকে ডাকা হল।