এমনি করে ছেলেকে জব্দ করতে গিয়ে উল্টে তারা হয়েছে জব্দ।ছেলেকে তখন ক্যাপ্টেন দুই দিনের জন্য রেস্টে থাকতে বললেন।তবুও সে এসে যতটা কাজ করা যায় করেছে।এমনটা দেখে অন্যান্য সবাই তখন ওকে ভয় পেতে লাগলো।কেউ ওর বিরুদ্ধাচারনে আর সাহস দেখায়নি যাতে শেষে ঐরকম দুষ্কর্মের জন্য উল্টে দুর্ভোগ পোহাতে হয়।এই পরিস্থিতির পর তখন সকলের সাথে গড়ে ওঠে এক গভীর সখ্যতা।সেই সূত্রে সে শীপের রেডিও রুমে গিয়ে দেখেছে- কেমনভাবে বাইরের সাথে হয় যোগাযোগ। প্রথমে যারা তাকে হেয় করবার চেষ্টা করেছে তারাই পরে তার কাছে উল্টে চেয়েছে সহযোগিতা।ক্যাপ্টেনের মাধ্যমে প্রতি সপ্তাহেই তার কাজের রিপোর্ট পৌঁছে যেত কোম্পানিতে।তাতে তার সুনাম উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেতে থাকে।এই সময় শীপে থাকাকালীন চোখে পড়েছে সমুদ্রের নানা রকম অপরূপ দৃশ্য!চারিদিক জল আর জল।পড়ন্ত বেলায় সূর্যের লাল হলুদ আভায় সমুদ্রের জল করতো ঝল- মল।আবার সেই সমুদ্রের জল কখনও ধারণ করতো ভয়ঙ্কর উগ্রমূর্তি।কখনো চাঁদের আলোয় ফুটে উঠতো এক মনোরম দৃশ্য।পাখিরা উড়ে চলেছে দূর থেকে দূরান্তরে।দেখা গেছে ভিন্ন রকমের বহু মাছ।উঃ! কি দারুন দৃশ্য!প্রাণ ভরে উপভোগ করেছে সেই সময় সেইসব দৃশ্য —। এই শীপে তার কাজ দেখে তখন অনেকের খুব পছন্দ হয়।এই সময়ে পরিচয় হয় বয়স্ক সজ্জন ব্যক্তি লুইস আঙ্কেলের সাথে।তিনি মুম্বাইয়ের বাসিন্দা। তাঁর ঠিকানা সহ একটা কার্ড দিয়ে বলেছিলেন যদি কখনো কোন প্রয়োজন হয় যোগাযোগ করবে।ভালই মিলে- মিশে স্বাচ্ছন্দে দিনগুলো কেটে যাচ্ছিল।বেশ কিছু দিন পর শোনা গেল শীপের কাজ শেষ হতে চলেছে। মনটা খারাপ হয়ে গেল।কোম্পানির কন্টাক্ট শেষ হতেই সবার সাইন আপের ব্যবস্থা হল।তখন তাকে একটা মুখ বন্ধ খাম দিয়ে ক্যাম্পবস বললেন এটা নিয়ে সোজা অফিসে জমা করবে।এর মধ্যে রয়েছে তোমার পারফরম্যান্স লেটার।তখন শীপ যাবে মুম্বাই থেকে আবুধাবি।সেখানে তার যাবার খুব ইচ্ছা।ক্যাম্পবসও ক্যাপ্টেনকে অনুরোধ করলেন।তাদেরও তাকে খুব পছন্দ কিন্তু নিরুপায় কারণ তখন তার ইন্টারন্যাশনাল পাসপোর্ট ছিল না।তাই সেদেশে তার যাওয়া আর হলো না।মনটা বড্ড খারাপ হয়ে গেল।তখন সে কয়েক দিনের জন্য এলো বাড়িতে। ২ রা জুলাই বোনের জন্মদিন। ছেলে আমাকে জানালো সে নিজের হাতে রান্না করে এবার বোনের জন্মদিন উদযাপন করবে। আমি অমত করলাম না। সময়টা বর্ষাকাল।নিমন্ত্রিতদের সংখ্যা যখন হিসাবের গণ্ডি পেরিয়ে গেল তখন আমি আর রিস্ক নিলাম না। ছাদে প্যান্ডেলের অর্ডার দিয়ে দিলাম। নির্দিষ্ট দিনে সকল কাজ সুষ্ঠুভাবে সুসম্পন্ন হল।শুধু সন্ধ্যায় এক পশলা ভারী বৃষ্টিতে বেশ একটু ব্যাঘাত সৃষ্টি করলো। ছেলের বন্ধু বান্ধব ৩-৪ জন সারাদিন তার সাথে সহ- যোগিতা করল।নিজ হাতে সমস্ত রান্নাবান্না করছে আবার আগত সহপাঠী ও স্বজনদের সাথে সাক্ষাতে শুভেচ্ছা বিনিময় করে নিচ্ছে।তখন যেন ওর আলাদা অতিরিক্ত পরিচয় যুক্ত হল-সে একজন কুক।নিমন্ত্রিত -দের মাঝে রাত্রে এলেন ছেলের ক্যাটারিং ডিপ্লোমা করা ইনস্টিটিউশনের প্রিন্সিপাল মিঃ দীপক হালদার। সঙ্গে এনেছেন তাজ হোটেলের পরিচিত এক নামী কুককে।নিজের ছাত্র কতটুকু শিক্ষা নিতে পেরেছে তা আজ যাচাই করার জন্য।স্বল্প সময়ের মধ্যে টেস্ট করে নিলেন সব আইটেম।যাবার সময় সবাই স্বীকার করলেন- হ্যাঁ সত্যিই সে আজ একজন যোগ্য কুক হতে পেরেছে।নিমন্ত্রিতদের মাঝেও তার প্রশংসা শুনতে পেলাম।ভাল লাগলো।বুঝলাম হয়তো সার্থক হবে তার স্বপ্ন—।যাবার সময় শুধু ঐ ইনস্টিটিউশনের ডিরেক্টর মিঃ এস মন্ডল আমাকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে গেলেন- বারাসাতে ইন্টারভিউর টেবিলে মুম্বাই থেকে আগত RKHS কোম্পানির ম্যানেজার মিঃ কে সতীশের সেই কথাটা- “ভেরি গুড! ইউ আর সিলেক্টেড—-“। আমি তখন ভাবতে লাগলাম—-। জাহাজে কর্মরত অবস্থায় বিদেশী সহকর্মীদের সাথে কাজ করে বুঝতে পারল,জীবনে উন্নতি করতে হলে যেতে হবে বিদেশে।অফারও আসতে লাগলো।যোগা- যোগ হল অনেক ফরেনারের সাথে।কিন্তু দুর্ভাগ্য যে, তখন তার ইন্টারন্যাশনাল পাসপোর্ট নেই তাই বাড়ি এসেই ব্রাবর্ণ রোডে পাসপোর্টের জন্য অ্যাপ্লাই করল। ২৭শে সেপ্টেম্বর ২০০৬ স্পিড পোস্টে পৌঁছে গেল পাসপোর্ট বাড়িতে।সেদিন তার কি আনন্দ! মনে হল এবার শুধু অপেক্ষা পৃথিবী জয়ের।সে সর্বদাই বলতো দেশ বিদেশের সমুদ্র তাকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। কটা দিন বাড়িতে আনন্দে কাটাবার মাঝে হঠাৎ কোম্পানি থেকে কল এলে ২৮শে জানুয়ারি ২০০৭ বম্বে মেলে রওনা হলো মুম্বাই।কোম্পানিতে পৌঁছেই নির্ধারিত জাহাজ DLB-1000 এর নির্দিষ্ট ড্রেস সংগ্রহ করে নিল।এবং ৩রা ফেব্রুয়ারি ২০০৭ পা রাখল নতুন জাহাজে।মুম্বাই পোর্ট থেকে বোটে করে শীপের কাছে পৌঁছতেই ক্রেনে করে তুলে নিল তাদের। সেখানে ছিল সে সহ মোট পাঁচজন।শীপে পৌঁছালে জানতে পারলাম ক্যাটারিং ডিপার্টমেন্টের ক্রু দুটি কোম্পানি থেকে রিক্রুট করা হয়েছে।দুবাইয়ের ADN-COMPAS আর মুম্বাইয়ের RKHS।ক্যাটারিং স্টাফ,মোট ৩৭জন। সব ক্রিউ মিলিয়ে মোট সংখ্যা ৩২৫।এখানে সে ছিল কাটিং ম্যান হিসাবে।এই কাজে এই প্রথম তাই প্রথম দুটো দিন একটু অসুবিধা হলো।তবে তার মধ্যেই সব কাজ আয়ত্তে এসে গেল।খুব ভালোই চলছিল কাজ। তার হাত ছিল প্রচন্ড চালু।অল্প সময়ের মধ্যেও তার নির্ধারিত কাজ হয়ে গেলেই ছুটি।পেত একটু রেষ্ট। কাজ চলতে লাগলো।একদিন রাত্রে তাদের শীপের কোন এক ক্রিউর বড়শিতে এক বিশাল মাছ ধরল। ওজন প্রায় ৪০ কেজি।অনেক কষ্ট করে জল থেকে সেটা শীপে তুলতে সক্ষম হল।তখন ছেলের ডিউটি অফ। তাই রাত্রে ঘুমিয়ে ছিল।পরদিন সকালে এসে মাছটি দেখে চক্ষু চড়কগাছ!এত বড় মাছ কাটবে কি করে?বড্ড চিন্তা হয়ে গেল। তারপর দুইজন ষ্টুয়ার্ডকে ডেকে তিন জনে ধরে মেশিনের উপর তুললো।এত বড় মাছ কাটিং সবাই এই প্রথম দেখছে।ভিড় জমে গেল। অনেক কষ্ট করে মাছটাকে কাটা হলো।সেদিন সবার যেন এক অন্য আনন্দ।সবাইর অনুরোধে সেদিন হল খুশিত এই উদ্দেশ্যে একটা পার্টি। এই সময় হঠাৎ তাদের শিপের কন্টিনেন্টাল কুকের শরীর খুব খারাপ হওয়ায় বাড়িতে পাঠাতে হলো। ক্যাম্পবস চিন্তায় পড়ে গেল, টেম্পোরারি ভাবে সেই গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট কি করে সামলাবে?কন্টিনেন্টাল ডিপ্লোমা ছেলের করা তাই তাকে ডেকে পরিস্থিতি বুঝিয়ে অনুরোধ জানালেন সাময়িকভাবে কাজটা চালিয়ে দেবার জন্য।তখন সেই অনুরোধ ফেরাতে পারলো না।সম্মতি জানালে ক্যাম্পবস ও ক্যাপ্টেন খুব খুশি হলেন।চলতে থাকলো কাজ।কাজের চাপ গেল বেড়ে।ডবল ডিউটি সামলাতে প্রচন্ড কষ্ট হতে লাগলো তবুও কোম্পানির সুনামের দিকে তাকিয়ে সে কষ্ট মানিয়ে নিল।সে প্রতিটি সময়ে মনে করতো কোম্পানি বাঁচলে তারা বাঁচবে।কোম্পানির সুনাম হলে তাদেরও গর্ব হবে।প্রথম শীপে জয়েনিং করার পর আমার নির্দেশ সব সময় অক্ষরে অক্ষরে পালন করার চেষ্টা করে গেছে।সেদিন তাকে নির্দেশ দিয়েছিলাম- “এটা মার্চেন্ট নেভি তাই নিজের স্বার্থ না দেখে প্রাণ দিয়ে কোম্পানির স্বার্থ আগে দেখবে। তখন এই সৎ নীতির জন্য কোম্পানি ক্রিউদের স্বার্থও নিজেই দেখবে।” এবারও তাদের গন্তব্যস্থান ছিল বোম্বে হাই। যদিও সফলতার সাথে ৬ মাস সমুদ্রে আগে কাজ করে এসেছে তবুও এবার রওনা হবার মাস দেড়েক যেতেই মনটা হয়ে উঠল উতলা।এই সময়ের মধ্যে ফোনে কোন রকম যোগাযোগ না হওয়ায় বাধ্য হয়ে RKHS এর আন্ধেরি অফিসে ফোন করলাম।খুব সুন্দর পরিষেবা।শীপের নাম বলতেই কম্পিউটার দেখে বলে দিলেন- কাজ করছে এবং ভালো আছে। মনে কিছুটা ভালো লাগলো। এই ভাবে মাঝে মাঝে ফোন করে খবরা খবর নিতাম।১৭ ই মার্চ ২০০৭ রাত ১১ঃ৪৫ DLB-1000 শীপ থেকে স্পেশাল পারমিশন নিয়ে স্যাটেলাইট ফোনে মাত্র এক মিনিট কথা বলে জানায় ভালো আছে এবং আমার পাঠানো চিঠি আজই পেয়েছে।সেও ইতিমধ্যে তিনখানা চিঠি পোস্ট করেছে।সেই চিঠি বাইপোস্টে আমি পাই ২৪ শে মার্চ। ২৮ শে মার্চ শীপের এক সহকর্মী অ্যালবার্ট গোমস এর ফোনে জাহাজের একটা নির্দিষ্ট ইন্টারন্যাশনাল ফোন নাম্বার পাই।পরে জানতে পারি এই জাহাজ আবুধাবির। বাইরে থেকে কোন ক্রিউর ফোন এলে লাউড স্পিকারে অ্যানাউন্স হতে থাকে। জাহাজের বিভিন্ন প্রান্তে বহু রিসিভার রয়েছে।বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যার যেমন সুবিধা মতো রিসিভার তুলে কথা বলে নেয়।পরবর্তীকালে ওই নম্বরে ফোন করে কথা বলতে পারতাম।সেখানে কাজ করার পর ২৫শে এপ্রিল DLB-1000 থেকে রিলিবার নিয়ে ল্যান্ডে এসে পৌঁছালো।এসেই সান্তাক্রুজের রুমে লাগেজ রেখেই চলে গেল RKHS এর অফিসে।সে যেতেই স্যার বললেন- “থ্যাঙ্ক ইউ এন্ড কংগ্রেচুলেশন!” শিপে তখনকার ইমারজেন্সি পরিস্থিতিতে স্বল্পদিনের জন্য এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট সুষ্ঠ এবং সুন্দরভাবে চালিয়ে নিতে পেরেছে এজন্য কোম্পানি অত্যন্ত খুশি। তাকে ডেকে যখন স্যার বললেন তার স্যালারি খুশিতে ডবল করে দেওয়া হয়েছে এবং প্রমোশন করিয়ে বুকের মর্যাদা দেয়া হল।ছেলে প্রচন্ড খুশি।তখনই বাড়িতে এই সংবাদ জানানোর জন্য বড় চঞ্চল হয়ে উঠলো। তার কাছে তখন নিজস্ব মোবাইল না থাকায় স্যার নিজেই তাঁর মোবাইল এগিয়ে দিলেন বাড়িতে ফোন করার জন্য।ছেলে তখন আশাতীত খুশি হল। প্রমোশনের খবরটা ছেলেকে জানাবার পরেই তিনি বললেন তোমাকে এখনই পারাদ্বীপ যেতে হবে। প্রমোশন হওয়ায় অন্য লোককে বাতিল করে তোমাকে সেখানে পাঠানো হচ্ছে।এখনই প্রস্তুত হয়ে নাও।আরও তিনজন কুরলা স্টেশনে তোমার জন্য অপেক্ষায় থাকবে।শুনেই ব্যস্ত ভাবে তৈরি হয়ে বেরিয়ে পড়ল। মুম্বাই থেকে ট্রেনে ভুবনেশ্বর হয়ে পারাদ্বীপ পৌঁছায়। কুরলা স্টেশনে অপেক্ষমান তিনজন ছেলেকে পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই ক্যাপ্টেনকে ফোন করে বলল- স্যার! আমরা মিঃহালদারকে পেয়ে গেছি। স্যার বললেন- “ওকে, হ্যাপি জার্নি।” সেখানে কোম্পানি একদিন বিলাসবহুল হোটেল রেখে বোটে করে শীপে পৌঁছে দেবার ব্যবস্থা করে।তখন জানতে পারে শীপটি ইন্দোনেশিয়া থেকে এসেছে এবং কিছুদিনের মধ্যেই সিঙ্গাপুরে ফিরে যাবে।শীপের নাম POE OCEAN LIST ।ওদের ক্যাটারিং স্টাফ ৯ জন সহ মোট ক্রিউ ৬৫ জন।এই পোর্ট এলাকায় কয়লার ডাস্ট উড়তো বেশি।প্রচন্ড ডার্টি ছিল।জোরে হাওয়া দিলে কয়লার ধোঁয়ায় অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়তো।বাইরে বেরুতে ভীষণ মুশকিল হয়ে যেত।এখানে অন্য সব ঠিক ছিল কিন্তু কয়লার এত নোংরা ছিল তাই কাজ করতে কারো মন চাইছিল না।একে তো সি প্রচন্ড রাফ। ভীষণ কারেন্ট তাই ডাইভাররা জলে নেমে কাজ করতে পারছিল না।শীপটা ছিল ছোট।ওই সময়ে সাইক্লোনে শীপের অনেক ক্ষতি হয়ে যায়।এমতাবস্থায় ক্রিউরা কাজ করতে চাইছিল না।ক্যাপ্টেন কোম্পানির সাথে কথা বললেন।শিপের কেউ এত রিক্স নিতে চাইল না। কোম্পানি ডেমো ঘোষণা করলে সকল কাজ বন্ধ হয়ে গেল।কোম্পানির নির্দেশ মতো তারা সাইন আপ করে চলে এলো ল্যান্ডে। ১০ই জুন ২০০৭ বিকেল পাঁচটা। তারা এজেন্টের মাধ্যমে এসে পৌঁছালো হোটেলে।সেখানে রাত কাটিয়ে পরদিন ট্রেনে রওনা হল মুম্বাইয়ের উদ্দেশ্যে। মুম্বাই পৌঁছে অফিসে যেতেই তাকে আবার সিলেক্ট করলেন বোম্বে হাই প্লাটফর্মে।তার পারফরম্যান্স ভালো থাকার জন্য এখানে কাজ করার সুযোগ পেল।প্ল্যাটফর্মে সকলের পক্ষে কাজ করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। এখানে কাজ করতে হলে হেলিকপ্টার ট্রেনিং এর প্রয়োজন হয়।সেই মতো পরের দিন কোম্পানির নির্দেশ মতো হেলিকপ্টার ট্রেনিংয়ে পাঠানো হল।যথারীতি তাতে সফল হয়ে সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে জমা করলো অফিসে।পরদিন জয়েনিং।১৫ জুন ২০০৭ সকাল ৯টা ২০। আমাকে মুম্বাই ভিলে পারলে থেকে ফোন করে জানায় হেলিকপ্টারে যাবার জন্য চেকিং কমপ্লিট হয়ে গেছে।কিছুক্ষণের মধ্যেই ছাড়বে।অ্যানাউন্স হতেই এগিয়ে গেল হেলিকপ্টারের কাছে।এই প্রথম কাছের থেকে দেখলো।কিছুক্ষণ পর তাতে পা রাখবে। এতদিন যাকে আকাশে উড়তে দেখেছে আজ তাকে দেখছে চোখের সামনে থেকে।কিছুক্ষণের মধ্যেই গিয়ে উঠল তাতে।পাইলটের নির্দেশমতো ককপিটে উঠে প্রচন্ড শব্দ রোধে কানে গুঁজে নিল নির্দিষ্ট রাবার ক্যাপ। এমন পরিস্থিতিতে সে একদম নুতন তাই যেন শব্দে কানের পর্দা ফেটে যেতে লাগলো।হেলিকপ্টার যখন ল্যান্ড ক্রস করে সমুদ্রের উপর দিয়ে যেতে লাগলো- উঃ! কি দারুন দৃশ্য!! উপর থেকে দেখতে পেল ছোট বড় শীপ, রিক, প্ল্যাটফর্ম, জ্যাকেট (স্যাটেলাইট) কি অসাধারণ দৃশ্য! ঠিক ৫০ মিনিট পরেই বোম্বে হাইয়ের নির্দিষ্ট PQ PLATFORM এ গিয়ে অবতরণ করল।