রক্তে রাঙ্গানো একুশে
✍️ শিব প্রসাদ হালদার
রাষ্ট্র ভাষা বাংলার স্বপ্নদ্রষ্টা
ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের হুঙ্কারে উদ্বুদ্ধ হয়ে
রাষ্ট্রভাষা উর্দুর ফরমান না মানার সংগ্রামে
যখন গর্জে উঠল সমগ্র পূর্ব পাকিস্তান
কুচক্রী পশ্চিমাদের অভিসন্ধি মুলক আগ্রাসনের
পরিকল্পনার দমননীতিতে
ক্রমাগত জারি হয় একশ চুয়াল্লিশ ধারা
আবার কখনোবা কার্ফু—-
তাতেও হয়না প্রতিহত—বরং
বাংলা ভাষার চেতনায় বাঙ্গালী হয়ে ওঠে আরও ক্ষুব্ধ
নির্মম মৃত্যুভয়কে উপেক্ষা করে
নির্ভীক দামাল ছেলেরা ঝাঁপিয়ে পড়ে ঢাকার রাজপথে
হাতে ফেস্টুন- প্লাকার্ড
রাষ্ট্র ভাষা উর্দু মানছি না – মানবো না
বাংলা আমার মায়ের ভাষা
তাতেই আমরা মিটাই আশা–
সশস্ত্র পাষণ্ড পশ্চিমাদের শাণিত রাইফেলকে
উপেক্ষা করে আমবাগানে এগিয়ে যেতেই
গর্জে উঠল ঝাঁকে ঝাঁকে নির্মম গুলিবর্ষণ!
সেদিন উনিশশো বাহান্নর একুশে ফেব্রুয়ারি
দুপুর তিনটা কুড়ি থেকে তিনটা পঞ্চাশ
ত্রিশ মিনিটের এলোপাথাড়ি গুলিতে
লুটিয়ে পড়ল মাটিতে—-
তাজা রক্তে রঞ্জিত হয় কাল পিচঢালা রাজপথ
সালাম রফিক বরকত জব্বার শফিউর আউয়াল–
আরও নাম না জানা নির্ভীক দামাল ছেলের
আত্ম বলিদানের খবর ছড়িয়ে পড়তেই
বাঙ্গালী হয়ে উঠল আরও তীব্রতর আন্দোলনের
অগ্নিস্ফুলিঙ্গে বেসামাল
মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা রক্ষায়
বীর শহীদদের আত্মা বলিদানে
বিশ্ববিবেক হয় আলোড়িত
একশ অষ্টাশিটি দেশের সমর্থনে
জাতিসংঘের স্বীকৃতি পেল –
“আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস”
একুশ আজ অমর
বাংলা আমার মায়ের ভাষা
বাংলা নিয়ে আজ আমরা অহঙ্কারী
তাই তো আজ সবার মুখে ধ্বনিত হয়
আব্দুল গফফার চৌধুরী রচিত
“আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী
আমি কি ভুলিতে পারি————-“
–০০০XX০০০–