বদলে যায়
রণজিৎ মন্ডল
দিন যত যায়, সবই কেমন যেন বদলে যায়,
সূর্যটা যেন আগের মত আলো
দেয় না,
দিনটাও আগের মত বেশি সময়
কাছে থাকে না,
বর্ষা বিদায় বেলাতেও হাতছানি দেয়।
আমিও বদলে গেছি অনেকটাই,
আগের মত কথা কইতে ভালো লাগে না,
মানুষকে বিশ্বাস করতে ভয় পাই,
কাউকেই আর আগের মত করে
ভালো বাসতে পারিনা,
সবাইকে মনের কথা বলতে পারি না,
মন যেন একা থাকতে চায়।
যেদিকেই চাই দেখি সব যেন পাল্টে
যাচ্ছে, বদলে যাচ্ছে নিজের অজান্তেই,
সবাই যেন তাল মিলিয়ে চলছে,
যেন একেবারেই নিরুপায়!
ছোটবেলার কথা মনে পড়ে যায়,
কিছুই ছিল না তখন, তবু সব ছিল
মনের মতন,
সাঁতার কেটে নদীর এপার ওপার করা,
এক হাটু কাদাজলে ফুটবল খেলা,
বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে খালের জলে মাছ
ধরা, হেরিকেনের আলোয় বই পড়া,
খালি পায়ে স্কুলে যাওয়া, কি মজাই না
ছিল সে সময়।
সব আজ কোথায় হারিয়ে গেছে,
ঝকমকে বিদ্যূতের আলো, ওয়ান
ওয়ে সনসনে রাস্তা, দুচাকা, চার চাকা
ছয় চাকার গাড়ি,
হুস হুস করে নিমেষে কয়েকশ পাশ
কাটিয়ে যায়।
আধুনিকতার ছোঁয়ায়!
সবাই ব্যস্ত, মানুষের কোলাহল, রাস্তা
পার হতে গেলে দশবার এদিক ওদিক
দেখতে হয়।
যখন বড্ড খিদে পায়,
ঢুকে পড়ি কোন এক রেস্তোরায়,
খাবারের মেনু দেখে চোখ কপালে
উঠে যায়!
এসব কি খাবার, বাবার জন্মে এসবের
নাম শুনিনি,
না বুঝেই বলতে হয় এটা সেটা হাবি
জাবি সব খাবার,
হাজির হয় সামনে টেবিলে, চিকেন
ব্রিয়ানি, তন্দুরি চিকেন, ফিস ফ্রাই,
মন ভরুক না ভরুক পেট ভরে যায়।
কত আর পাল্টাবো কত আর বদলাবো
নিজেকে এই জমানায়!
আমি চাই বা না চাই, আমার বার্থডে
হবেই, বাড়িতে ফিরে দেখি আয়োজনের শেষ নাই, আমার বার্থ
ডে, আমার মনে নাই, পাড়া পড়শীর
ঘুম ছুটে যায়।
হ্যাপি বার্থ ডে টু ইউ শব্দে আকাশ
বাতাস যেন কাপছে, রজনী গন্ধার
গন্ধে মো মো করছে ঘরময়,
আমার শীতেও ঘাম ঝরে যায়!
এতো বদলে গেলাম অথচ জানতেই
পারলাম না,
কেমন করে, এতো দ্রুত সব পাল্টায়,
সবাই বদলে যায়!
–~০০০XX০০০~–