পুজো
নন্দিতা চক্রবর্ত্তী
এসেছে শরৎ।
সোনার আলোয় আকাশ উদ্ভাসিত,
শেফালির গন্ধে মুখরিত বাতাস ঢেউ জাগিয়ে তুলেছে
কাশের বনে।
চারদিকে ভেসে বেড়াচ্ছে আগমনীর সুর।
প্রকৃতি উঠেছে সেজে।
আকাশী নীল শাড়িতে
সাদা মেঘের সুতোর কাজ।
গলায় পদ্মের মালা, কানে শেফালী।
খোঁপায় রং বেরংএর দোপাটি।
হাতে বরনডালায় কাশফুল।
মা এলো।
ঘরে ঘরে পড়ে গেল সাড়া।
নতুন জামা জুতো শাড়ি,
খাওয়া দাওয়া হাসি হুল্লোড়।
ছোট বড় সবাই খুশিতে উজ্জ্বল।
মা এলো।
ছিন্ন বসন পরিহিতা
হাতে ধরা দুটি শিশুর হাত।
দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়ালো
শুধু দুমুখো খাবারের প্রত্যাশায়। উপেক্ষিত হল।
অলক্ষ্যেই বেজে উঠল বিসর্জনের বাজনা।
প্রতীক্ষা
নন্দিতা চক্রবর্ত্তী
শরৎ এলো শিউলি ফুলের বনে
গন্ধে মাতাল হাওয়া।
বাঁশির সুর ভরল আকাশ গানে
পাল তুলেছে সাদা মেঘের খেয়া।
কাশের বুকে ঢেউ জাগালো কে
কানে কানে কি গান গেল গেয়ে,
দোপাটি তার ভালা সাজায় বসে
রং বেরংএর ফুলগুলোকে নিয়ে।
তারার বুকে যেন কিসের মায়া
সোনার জালে স্বপ্ন গেঁথে তোলে
চাঁদের মুখে মুক্ত ঝরা হাসি
রাতের আকাশ সকল দুঃখ ভোলে
বিশ্বভুবন কিসের প্রতিক্ষায়
অধীর চোখে যেন নিমেষ গোনে
পাখির কন্ঠে আমন্ত্রনের সুর
খুশির ছোঁয়া লাগায় সকল প্রাণে।
বিশ্বমাতার চরণ ধ্বনী বাজে
আগমনীর সুরে রুণুঝুণু
আলতা পরা পায়ের ছোঁয়া লেগে
পদ্ম আরও উঠল রেঙে যেন।
ঢাকের তালে বিশ্বহৃদয় দোলে
দোপাটি ফুল আঁচল খানি মেলো
নীল আকাশে সোনা ঝরায় রোদ
সবাই এসো, মা বুঝি ওই এল!!
–~০০০XX০০০~–