ফুলের মত
সুতপা বিশ্বাস ঘোষ
ফুলের মত সুন্দর ছিল সে,
বোধহয় আরও একটু বেশি।
গিয়েছিল প্রেমিকের হাত ধরে সিনেমা দেখতে।
দু’জনের চোখেই রঙিন স্বপ্ন,
যে স্বপ্ন জন্ম দেয় আরও অনেক অজস্র স্বপ্নের,
আর ছিল একসাথে পথ চলার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ফুলের মত নরম ছিল সে,
বোধহয় আরও একটু বেশি।
কলেজ যেত রোজ, বইয়ের ব্যাগ কাঁধে নিয়ে।
মন দিয়ে লেখাপড়া করত সে,
ভাবত তার রোজগারে হয়ত পরিবারটা বাঁচবে।
ভাবনা ছিল গরীব বাবার দুঃখ ঘোচাবার ।
ফুলের মত মিষ্টি ছিল সে,
বোধহয় আরও একটু বেশি।
উড়ে বেড়াত পক্ষীরাজে চেপে শহরের
এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে।
ব্রত নিয়েছিল মানুষকে রোগমুক্ত করার,
ব্রত নিয়েছিল, সবাইকে ভালো রাখার।
ফুলের থেকেও অনেক বেশি সুন্দর ছিল সে,
এগিয়ে এলো ওরা ছ’জন , ফাঁকা বাসের ভিতর।
ওর প্রেমিককে ছুঁড়ে ফেলে দিল রাস্তায়,
ওর ওপর নেমে এলো পৈশাচিক অত্যাচার।
সবাই মিলে ছিঁড়েখুঁড়ে খেলো ওর সুন্দর শরীরটা,
নাবালক ছেলেটা ওর যোনিপথে ঢুকিয়ে দিল লোহার রড।
ফুলের থেকেও অনেক বেশি নরম ছিল সে, বৃষ্টিভেজা দিনে নির্জন পথে একা ফিরছিল কলেজ সেরে
ঝাঁপিয়ে পড়ল ওরা পাঁচ জন , উল্লাস করবে বলে।
মুখ চেপে ধরে টানতে টানতে নিয়ে গেল একধারে,
একটা পা টেনে ছিঁড়ে ফেলে দিল ডোবায়।
অঙ্গহীন বিবস্ত্র শরীরটা পড়ে রইল বিচারের আশায়।
ফুলের থেকেও অনেক বেশি মিষ্টি ছিল সে,,
কাজ সেরে বাড়ি ফেরার পথে পক্ষীরাজ বিগড়ে গেলো হঠাৎ। বন্ধু সেজে এগিয়ে গেল ওরা চারজন,
তারপর? তারপর লরির মধ্যে টেনে তুলল ওকে।
ধর্ষণের পর ধর্ষণ, গণধর্ষণ। অবশেষে–
পেট্রোল ঢেলে জ্বালিয়ে দিল তাকে।
ফুলের মত সুন্দর নয় বরং বাঘনখ থাকুক তোমার হাতে,
ফুলের মত নরম নয় বরং শক্তি ধর তোমার বাহুতে,
ফুলের মত মিষ্টি নয় বরং বিষ পাত্র থাকুক তোমার সাথে।
ভয় পাক ওরা, কোনও ফুলকে পায়ে তলায় পিষে দিতে।
নিশ্চিন্তে থাকুক সব মেয়ের বাবা, সব বোনের ভাই,
সব প্রেমিকার প্রেমিক আর সব ফুলের মা।
–~০০০XX০০০~–
যথার্থ বলেছেন কবি, এটাই আজ দরকার