সিঁড়ি
সুপর্ণা দত্ত
সিঁড়ি বলতে আমরা বুঝি শক্ত কিছু ধাপ,
ওঠানামার কাজে লাগে জীবন হোক বা উচ্চ স্থান,
নির্দিষ্ট নিয়ম বা মাপে সাজানো থাকে,
ধাপ,পইঠা, মই বা সোপান নামে চিনি আমরা যাকে।
শক্তপোক্ত হওয়া চাই নইলে উপরে ওঠা দায।
অনেক রকমের সিঁড়ি দেখেছি এ জীবনে,
যেখানে যেমন সেখানে তেমন সিঁড়ি রয়েছে বিদ্যমান,
মাটির দোতলা,তিনতলা বা চারতলা মাটির সিঁড়িতে সাজে,
কাঠের কিংবা বাঁশের সিঁড়িও থাকে অনেকের কাছে,
লোহার তৈরি সিঁড়িও আছে নানান ডিজাইনের।
পাহাড়ের গায়ে ধাপ কেটে কেটে পাহাড়চূড়োয় ওঠা,
ধাপে ধাপে পাহাড়ি এলাকায় ঝুমচাষ করা হয়,
খাদে বা কুয়োয় ধাপ কেটে কাজ হয়,
শপিংমল বা স্টেশনে চলমান সিঁড়ি চড়া যায়,
গভীর ঘুমে স্বপ্নের দেশে স্বপ্নের সিঁড়ি বেয়ে যাই।
জীবনে চলার পথে কত সিঁড়ি ভেঙ্গে চলেছি অবিরাম,
শৈশব থেকে কৈশোর,কৈশোর থেকে যৌবন ,
যৌবন থেকে বার্ধক্য, বার্ধক্য থেকে মৃত্যু,
এ কেবল সিঁড়ি নয়,এটা জীবনের পাঠের এক একটি ধাপ,
যা ছাপ রেখে যায় জীবনের প্রতিটি পাতায় পাতায়।
দুগ্ধপোষ্য শিশু খেলে মাতৃক্রোড়ে নিশ্চিন্তের বাস,
ধাপে ধাপে শেখে কথা বলক আর হামাগুড়ি টানা,
তারপর শেখে হাঁটা, ছোটাছুটি তখন থামে না পা-টা,
এই সময় কতবার পড়ে,তবুও ছাড়েনা হাঁটা,
এগিয়ে সে যায়,এইবেলা শুরু হয় সিঁড়ি চড়ার পালা।
জীবনের লক্ষ্য পথে পৌঁছনোর তরে তার
জীবন সিঁড়ির প্রথম ধাপেতে হয় অক্ষর পরিচয়,
পরের ধাপ থেকে হয় প্রকৃত শিক্ষার অগ্রসর,
এইখানে গড়ে ওঠে শৈশবের ভিত্তি ও মনোবল
একে একে ধাপ পেরিয়ে পৌঁছান যায় লক্ষ্যস্থান।
লক্ষ্য স্থির থাকলে তবেই সব সিঁড়ি পার হওয়া যায়,
সিঁড়িতে সিঁড়িতে বহু ময়লা,হিংসা ও ক্রোধ আছে,
তবুও সিঁড়িতে পা ফেলে যেতে হবে সন্তর্পনে,
পিছলে পরার ভয় আছে হেথা প্রতিটি পদে পদে,
লক্ষ্যে যাওয়ার পথে একাগ্রতা থাকা চাই মনোবলে।
নীচে থেকে উপরে উঠতে সিঁড়ির সংখ্যা বাড়ে,
তেমনভাবে জীবনের পথে প্রতিদিন বয়স বাড়ে,
সিঁড়ি ভাঙ্গা অংকের মত জীবনের শেষ সিঁড়ির এলে
স্বর্গের সিঁড়িতে পা রাখা যায় পূণ্য কর্মের ফলে।
শোনা যায় যা দেখেছে কি কেউ রূপকথার মত।
*****************