দুই বাংলার বিশিষ্ট কবি সাহিত্যিকদের সমন্বয়ে আয়োজিত বিশেষ সাহিত্য সম্মেলন শুরু হয়েছে বারাসাত শহীদ তিতুমীর হলে। ঘোষকের ঘোষণায় হলের বাইরে অপেক্ষমান আমন্ত্রিত ব্যক্তিরা সবাই ভিতরে গিয়ে আসন গ্রহণ করায় অডিটোরিয়াম পূর্ণ হয়ে উঠলো। অনুষ্ঠান শুরুর প্রায় চল্লিশ মিনিট বাদে অন্য একটি অনুষ্ঠান সেরে ব্যস্ততার মাঝে এসে হাজির হলেন আমন্ত্রিত বরাহনগরের বিশিষ্ট অতিথি শ্রদ্ধেয় কবি সাহিত্যিক শিবপদ হাওলাদার মহাশয়। উদ্যোক্তারা স্বাগত জানিয়ে মঞ্চে নিয়ে গেলেন। দীর্ঘ অপেক্ষার পর উনার উপস্থিতিতে তারা পেলেন পরম স্বস্তি।অবশেষে সঞ্চালক অনুরোধ জানালে তিনি স্বল্প কথায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্য পেশ করে আবৃত্তি করলেন স্বরচিত কবিতা। ওঃ! কি দুর্ধর্ষ কবিতা!! অসাধারণ অভিব্যক্তি। উপস্থিত সকলেই মুগ্ধ- সবাই আপ্লুত। আসলে সাহিত্যের আঙ্গিনায় তিনি এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। উপস্থিত সকল সাহিত্যানুরাগী বন্ধুদের মাঝে এতদিনে যাদের উনাকে চাক্ষুষ দেখার সৌভাগ্য হয়ে ওঠেনি তারা আজ বড্ড খুশি। সম্বর্ধনা প্রদানের পর মঞ্চ থেকে নামবার মুখে অনেক সাহিত্যানুরাগী বন্ধু উনার ব্যক্তিগত জীবনের স্মরণীয় স্মৃতি সম্পর্কে জানতে চাইলে অত্যন্ত বিনয়ের সাথে ব্যক্ত করলেন – বন্ধুগণ! আপনারা আমাকে যত প্রশ্নই করুন না কেন আমার সাহিত্য জীবন সম্পর্কে সব সময়ে পাবেন একই উত্তর। আমি জীবনে কখনও অন্যায়ের কাছে মাথা নত করতে শিখিনি। আমার সাহিত্য জীবনে সঞ্চিত হয়েছে অনেক তিক্ত অভিজ্ঞতা। দেখেছি অনেক “সাহিত্যের কাঁকড়া”। তবুও পক্ষপাতিত্তে দ্বিচারিতায় কোনদিনও অপ্রিয় হলেও সত্য কথা বলতে হইনি পরাস্ত। বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় বিষবাষ্পের বাতাবরণেও আমি রয়েছি অভিন্ন। রংমাখা বর্ণচোরা অভিনয়ে আমি জন্ম থেকেই কখনো অভ্যস্ত হতে পারিনি। যৌবন পেরিয়ে বার্ধক্যে এসে উপনীত হয়েছি তবুও স্পষ্ট স্বচ্ছ নীতি নিয়েই জীবনের বাকি কটা দিন কাটিয়ে দেবো- এ আমার অঙ্গীকার! পাশ থেকে সঞ্চালক অস্পষ্ট কণ্ঠে বললেও মাইক্রোফোনের আকর্ষণে তা সমগ্র হলে স্পষ্ট হয়ে উঠল- সত্তর বছর বয়সে আজও উনি উনার স্পষ্ট বক্তব্যে অবিচল- “আমি সর্বদাই – আমি আমার ছায়া—–“