লাঞ্ছিতা নারী
সুপর্ণা দত্ত
যে নারী জঠোর যন্ত্রনা সহ্য করে
দশ মাস দশ দিন ধরে,
যে নারী পূজিত হয় পার্বণে পার্বণে
নানা রূপে নানা অবতারে,
যে নারী সন্তান স্নেহে
গোটা পৃথিবীটাকে পালন করে,
যে নারী বধূ রূপে এ ধরার প্রতি ঘরে
সযত্নে লালন করে প্রতিটা সংসারে,
যে নারী কন্যা রূপে সারাদিন পরে
বাবা ঘরে এলে ফিরে
আধো আধো সুরে
আদরে দেয় ভুলায় দিনের ক্লান্তিরে,
সেই নারী আজও ভোগ্যপণ্য রূপে
বিক্রি হয় বিয়ের নামে ব্রাইড মার্কেটে।
সেই নারী নরপিশাচের লালসার শিকার হয়,
নারীর সম্ভ্রম আজও ধূলায় লুটায়।
পথে পথে ঘোরায় সে নারীর নগ্ন দেহ।
প্রশ্ন ওঠে, দেখেছে কে?
ছবি তুলেছে কি অন্য কেহ?
হায় রে সমাজ, চক্ষু লজ্জার হয়েছে সমাধি
এ হেন প্রশ্নেরে শতবার ধিক্।
ধিক্কার জানাই এ হেন সমাজেরে-
যে সমাজে লালিত হয় এ হেন নরকের কীট,
পুরুষ শাসিত সমাজ ব্যবস্থা-তোমাকে শতবার ধিক্।
অতীতে ঘটেনি এমন ঘটনা- ভাবাও ভুল এমন
অহল্যা,সীতা,দ্রৌপদী তার জ্বলন্ত প্রমাণ ।
নারী নির্যাতনের মধ্যযুগীয় বর্বরতা
খুঁজে পাওয়া যায় ইতিহাসের পাতায় পাতায়।
বর্তমানে জ্বলছে ঘরে ঘরে শিক্ষার আলো
পদকজয়ী নারীদের কথা পড়তে লাগে ভালো।
হিমালয়ে নারী পতাকা তুলে দেশের মান বাড়ায়,
পাইলট,ড্রাইভার, সৈনিক, মন্ত্রী নারী
নিজ গুণে তারা বিশ্বকে করে জয়।
মহাকাশে পারি দিয়ে নারী
অজানাকে জানায়, অচেনাকে চেনায়,
তবু সেই নারীর প্রতিবিম্ব আজ
পথের ধূলায় লুটায়।
সুবিচার পেতে সে লাঞ্ছিত হয় বারবার
নীপিড়কের সমগোত্রিয়ের নানান প্রশ্নবাণে।
এদিকে গান্ধীমূর্তির পাদদেশে সোচ্চার হবে কারা
তাই নিয়ে সব করছে লড়াই বাকি আছে যারা।
বছরে বছরে পালিত হয় নারী দিবস
দিবস পার হল কি হল না
নারী নির্যাতিত হয় মানসিক বা শারীরিক ভাবে।
এখন ষপ্রশ্ন একটাই—–
মা-বধূ-কন্যা রূপে নারী
মেরুদন্ড হীন কাঠামোয়
নিজ সম্মানে বাঁচতে পারবে কবে?
—oooXXooo—