সমুদ্রের সেই দিনগুলি (ষষ্ঠদশ পর্ব)
✍️ শিবপ্রসাদ হালদার
ঐ UK নম্বরের প্রতি মিনিটের কল চার্জ যে ২৫০ টাকা তা কাস্টমার কেয়ারে ফোন করে জানতে পারলাম।এই স্বল্প সময়ের কথাবার্তায় জানলাম তাদের শীপ ফ্রান্সের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে।তারপর ২৮ জুন ২০১৪ রাত ৯টা ১৭ মিনিটে ফ্রান্সে পৌঁছে একটি আননোন নম্বর থেকে জানায় “আমরা ভালো আছি,আগামীকাল তোমার মেইল চেক করে নিও,আমি মেইল করেছি” এটুকু বলতেই লাইন কেটে গেল।আমি অপেক্ষায় থাকলাম পরদিন ইমেল খুলবার জন্য।যেন সবুর সইছে না।পরদিন গেলাম সাইবার কাফেতে কিন্তু হতাশ হলাম।পর পর দুইদিনই চেক করে দেখলাম- মেইল আসেনি।পয়লা জুলাই দেখলাম ফ্রান্স থেকে মেইল পাঠিয়েছে।তখন তার প্রিন্ট বের করে বাড়ি এনে ওর মা ও বোনকে ডেকে পড়া শুরু করলাম কিন্তু পারলাম না সবটা পড়তে।গলা ধরে গেল।ওর মা বলল মেয়েকে দিতে।দিলামও তাই।সে শুরু করল পড়া।গড়গড় করে পড়তে গিয়ে হঠাৎ পড়ার গতি এলো কমে।থমকে গেল পড়া।তখন আমাদেরও চোখ ফেটে এল জল।ওর বোনের এক ফোটা চোখের জল গড়িয়ে পড়লো চিঠির উপর।নিঃশব্দে মুছে নিল।দেখলাম একদিন পরেই বোনের জন্মদিনের কথা লিখেছে তাকে।বিশেষ গিফট পাঠিয়ে দেবে বলেছে।সে যেখানে যে অবস্থায় থাকুক না কেন- জন্মদিনে তাকে ফোন করবে।তাতেই সে খুশিতে–!ওরা পিঠেপিঠি দুই ভাই বোন।অসম্ভব আন্তরিক মিলমিশ।দাদা আদর করে ডাকে ‘বুনু’।দাদা হয়ে,জন্মদিনে একে অন্যকে মিস করবে তাই সইতে পারছে না।আমরা মা-বাবা এমনটা প্রত্যক্ষ করে ভগবানের কাছে প্রার্থনায় জানাতাম,দুদিন পরে বোনের হবে বিয়ে,তারপরেও যেন এই আন্তরিকতা সারা জীবনের জন্য অক্ষুন্ন থাকে–!১লা জুলাই ২০১৪ রাত ১২টা ২ মিনিটে এলো ফোন।আমি সোজা ধরেই ওর বোনকে দিলাম।শুভ জন্মদিনের উইশ করলো।সবাই খুশি।বোন বলল-“দাদা, তুই যেখানেই থাকিস ভালো থাকিস–“!৪ঠা জুলাই।আমি শীপের নির্দিষ্ট মেইল আইডিতে প্রথম মেইল করলাম।তারপর থেকে মেইল করে উভয়ে খবরাখবর আদান প্রদান করতে থাকলাম।প্রায় ৯ বছর যাবৎ মার্চেন্ট নেভিতে কাজ করতে করতে মানসিকভাবে সে তৈরি হলেও আমরা কিন্তু ভিন্ন ধরনের সামগ্রিক বিপর্যয়ের ধরণ ধারন সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হতে পারিনি।বিভিন্ন সময়ে উদ্ভূত সংকটময় মুহূর্তের কথা জানতে চাইলে কখনও তা বলতে চাইতো না।সে ভালো করেই জানতো আমি চিরকাল প্রচন্ড সফট মাইন্ডেড।ওই সব বিপদ সঙ্কুল ঘাত প্রতিঘাতের কথা সইতে পারবো না।তাই লুকিয়ে যেত।২০১৪ সালের এপ্রিলে মুম্বাই আসলে মাত্র ১০ দিনের সময় বের করে বাড়ি এসে আবার মুম্বাই যাওয়ার আগে একটা ৮ জিবি পেনড্রাইভে তার ল্যাপটপ থেকে বিদেশে কর্মরত অবস্থার সমুদ্রসহ বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও আপলোড করে দিয়ে যায়। তার মধ্যে সাউথ আফ্রিকা যাওয়ার সময় সোমালিয়া অতিক্রম করাকালীন কিছু ভিডিও দেখতে পাই। জলদস্যুদের দৌরাত্ম্য যে কত মারাত্মক,তা অনেক সময় জানতে চাইলেও আমাকে জানায়নি। তবে এই বিষয়ে নির্মিত দুটি ছবি CAPTAIN PHILLIPS আমায় লোড করে দিয়ে গেল।অবসর সময়ে ওইগুলি যখন দেখি তখন ভাবি সমুদ্রের কত প্রান্তে কত কত নাবিক এমন বিপদসঙ্কুল পরিস্থিতিতে পড়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সমুদ্র পথ অতিক্রম করে চলেছে।কখনও বা কারো জীবনে নেমে এসেছে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মাঝে প্রতিরোধেও পরাজয়।নিভে গেছে সমুদ্রেই জীবনের শেষ সম্বল প্রাণ প্রদীপ!ভাবতেই মন হয়ে ওঠে বড্ড ভারাক্রান্ত—-!
সমুদ্রে থাকাকালীন যখনই যে দেশেই থাকুক না কেন সুযোগ পেলেই যেভাবেই হোক আমায় ফোন করে কথা বলার চেষ্টা করত।সেই মত ২০১৪ জুলাইর মাঝামাঝি কয়েকবার স্বল্প সময়ের জন্য ব্যয়বহুল স্যাটেলাইট ফোনের মাধ্যমে কথা বলেছে যে কোনও ভাবে।২৩ শে জুলাই রাতে আমায় রাশিয়া থেকে ফোন করে জানায় সে নিজের নামে রাশিয়া থেকে একটা সিম নিয়ে ফোন করছে।ঐদিন ল্যান্ডে ক্যাপ্টেন, চিপ ইঞ্জিনিয়ার,থার্ড ইঞ্জিনিয়ার,ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার সহ পাঁচজন নেমে ঘুরতে বেরিয়েছে।একটা রেস্তোরাঁয় খানাপিনার জন্য অর্ডার দিয়ে তার ফাঁকে ফাঁকে আমায় কয়েকবার ফোন করে বিভিন্ন খবরাখবর জানাতে লাগলো।এই সময়ে প্রদ্যুৎকে ফোন করেও যোগাযোগ করতে না পারায় আমায় জানালে পরদিন আমি প্রদ্যুৎকে ফোন করে ব্যাপারটা জানাই।শুনে তখন সে আফসোস করতে থাকে।এই সময়ে তার CDC রিনিউর জন্য প্রসেসিং এ রয়েছে।তাই কোম্পানিতে জয়েনিং করতে পারছে না।পরদিন দুপুরে ছেলে আবার ফোন করে ক্যাপ্টেনের সাথে কথা বলিয়ে দেয়।উভয়ে উভয়ের পরিচিত তাই কথা বলে তারা পায় বড্ড আনন্দ।এই সময়ে রাশিয়া থেকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কর্মসূত্রে যেতে হয়েছে।কখনো বা তুরস্ক কখনো বা মালটা, ইতালি, ফ্রান্স যখনই সময় পেয়েছে শত কাজের মাঝেও মুম্বাইয়ের অন্তরঙ্গ সাথী এবং বর্তমানে দিল্লিবাসী গুপ্তাজিকে ফোন করে মাঝে মাঝে কথা বলে কুশলাদি আদান প্রদান করেছে।ছোটবেলা থেকে চিরকাল মানুষের সাথে সবসময় যোগাযোগ রাখাটাই ছিল তার স্বভাব।সত্যি কথা বলতে কি-এত বছর সমুদ্রে জাহাজে চাকরি করলেও সব সময় আগের মতো যোগাযোগের ইচ্ছা থাকলেও এখন তা করতে পারেনি।এ জন্য মনে মনে পেয়েছে অনেক সময় দুঃখ।সময়ের বিবর্তনে চাকরির পদোন্নতিতে আজ কিছুটা হলেও সেই ইচ্ছা পূরণ করতে পারছে।যখনই বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন লোকে আমায় ফোন করে জানিয়েছে- তাদেরকে ছেলে ফোন করে কথা বলার কথা তখন আমিও পেয়েছি আনন্দ।সময়ের বিবর্তনে এই প্রিয় বন্ধুর জন্য স্বার্থান্বেষী বন্ধুরা গেছে হারিয়ে।তবুও তার মধ্যে একমাত্র বন্ধু বাপ্পা অসংখ্য ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যেও নিয়মিত করে গেছে যোগাযোগ।ছেলেও মেইল এবং ফোনের মাধ্যমে তার সাথে যোগাযোগ করে জানতে পেরেছে একসময়ের অন্তরঙ্গ বন্ধুদের প্রকৃত পরিবর্তিত চরিত্র!সুপ্ত মনের ব্যথা মনে চেপে রেখে ঘুরে চলেছে সমুদ্রের মাঝে বিভিন্ন দেশে।ছেলেবেলা থেকেই মানুষের সেবায় সবাই পেয়েছে তাকে সবার আগে।বন্ধুবান্ধবদের দুর্দিনের দুঃসময়ে হয়েছে হাজির সবার পাশে।নিঃস্বার্থ পরোপকারী মনোভাবে আমিও তাকে জুগিয়েছি উৎসাহ।দুস্থ মানুষের সেবায় তার সব সময় মন টেনেছে আগে ভাগে।দিনে দিনে তার অন্তরে জমে থাকা সুপ্ত স্বপ্ন হয়েছে বড়।এই সময়ে ইমেইলে পাঠানো তার স্বপ্নের কথা প্রকাশ করায় আমি অভিভূত হয়ে পড়ি!গর্ববোধ করি এই ভেবে যে- আমার ঔরসজাত সন্তানের মনে এমন ধরনের স্বপ্ন স্থান পেয়েছে ভেবে। প্রত্যুত্তরে আমি ইমেইল করে জানিয়ে দিলাম তার ব্যক্ত এই ইচ্ছায় আমি আশাতীত আনন্দ পেয়েছি। জানিনা তার স্বপ্ন কি স্বপ্নই থেকে যাবে- না কি সেই স্বপ্নের রূপদানে গড়ে উঠবে তার ইচ্ছামত একটা বৃদ্ধাশ্রম, একটা হসপিটাল একটা ইস্কুল—।তার এই স্বপ্নের কথা জানার পরদিন থেকেই আমি বিধাতার কাছে আকুল প্রার্থনা করে চলেছি- তার এই স্বপ্ন যেন সার্থক হয়। ৮ই আগস্ট ২০১৪ আমাদের এক নিকট আত্মীয়ের অল্প বয়সে অকাল মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে সাথে সাথে আমায় মেইল করে তাদের পাশে দাঁড়াবার অনুরোধ জানায়। অনেক কষ্টের মধ্যে থেকেও আমায় জানিয়েছে- “নিজে একদিন না খেয়ে সেই খাবার যদি একজন অভুক্ত দুস্থ মানুষকে খাওয়ানো যায় তখন আর থাকে না নিজের পেটে খিদে!সেই মুহূর্তে যেন মনে হয় নিজের পেট আছে ভর্তি–“।ওর এই কথাটা আমি প্রতিমুহূর্তে মনে করে ভাবি এই ধরনের ভাবনা যদি সমাজের কিছু সংখ্যক মানুষের মনে প্রতিনিয়ত জাগরিত হয়,তাহলে অনেকের মধ্যে জেগে উঠবে-“জীবে প্রেম করে যেই জন,সেই জন সেবিছে ঈশ্বর–“এই ভাবনাটা! এমনিতেই বয়স বাড়ার সাথে সাথেই নিজেকে যেন ছেলে কাছে না থাকার শূন্যতায় নিজেকে কখনো কখনো বড্ড অসহায় বোধ করি।তার প্রতি আমার এই দুর্বলতা দিন দিন বৃদ্ধি পেতে থাকে।যখনই মেইল আসে সেগুলি বারবার পড়তে থাকি।খুঁজে পাবার চেষ্টা করি মনের শান্তি।আমাকে সব সময় মানসিকভাবে চাঙ্গা রাখার সব রকম চেষ্টা করেছে। জুগিয়েছে উৎসাহ।মনের বিক্ষিপ্ত অবস্থায় নিজের মনে নিজে পেয়েছি বড় যন্ত্রণা। দুর্বল মন হয়েছে ক্ষতবিক্ষত।পারিনি জানাতে কাউকে কিন্তু জানিনা ঠিক সেই মুহূর্তেই হয়তো বিধাতার ইচ্ছাতে পেয়েছি তার অনুপ্রেরণা।কখনো ফোনে কখনো বা মেইলে। দিশাহীন অবস্থায় সঠিক দিশা পেতে করেছে অনেকটা সাহায্য ।পেয়েছি মনের জোর–।
২০১৪ সালের আগস্ট মাসের তৃতীয় সপ্তাহে আমাকে মেইল করার পর হঠাৎ কাজের চাপে তিন সপ্তাহ মেইল পাঠাতে পারেনি ।আমি কিন্তু প্রতি রবিবার তার দেওয়া নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এক পৃষ্ঠা কখনো বা দুই পৃষ্ঠা চিঠি স্কান করে তাকে মেইল করে গেছি। পরপর তিন সপ্তাহ যখন তার কোন মেইল না আসে তখন ভীষণ চিন্তিত হয়ে পড়ি। অবশ্য মাঝে মাঝে ফোনে কথা হয়েছে কিন্তু মেইল না পাওয়ায় যখনই মোবাইলের টাওয়ারের অস্তিত্ব অনুভব করতাম তখনই SMS পাঠিয়ে দিতাম।সেই মত ১৩ই সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে আমার SMS পেয়েই শত কাজের চাপের ফাঁকে অল্প কথায় মেইল পাঠিয়ে জানায় – সেখানে ভালই আছে।চিন্তার কোন কারণই নেই। অত্যাধিক কাজের চাপে যে মেইল করতে পারছে না, তা তার মেইলে বুঝতে পেরে শান্ত হলাম। কেন জানিনা যোগাযোগ ব্যাহত হলেই আমার মন হয়ে উঠতো আরও উতলা।প্রতি সপ্তাহে আমরা উভয়েই প্রশ্ন করে তার উত্তর আদান প্রদান করেছি। চেষ্টা করেছি এখানকার সমস্ত খবরা খবর তাকে জানিয়ে খুশি করতে।তার নানান প্রশ্ন সহ সকল খবরা খবর জানাতে থাকি।শীপের ক্যাপ্টেন সহ সকল ক্রিউর সঙ্গে তার ব্যবহারে সবাই খুশি জেনে আমারাও আনন্দ পেলাম।ক্যাপ্টেনের পরিবারকে সামুদ্রিক দৃশ্য দেখাবার জন্য শীপে নিয়ে গিয়েছিলেন।যখন ইস্তানবুল, ফ্রান্স, রাশিয়ার ল্যান্ডে নেমেছেন ঘুরবার জন্য তখন সবাই মিলে একত্রে ঘোরাফেরা করে উপভোগ করেছে এক অনাবিল আনন্দ।সেখানকার অনেক ছবিও আমাকে মেইল করে পাঠিয়েছে। পুরনো ক্যাপ্টেন ছেলের কাজে অত্যন্ত খুশি হয়ে কোম্পানিতে তার প্রমোশনের জন্য রেকমেন্ড পাঠান।এই সময়ে তাঁর বাড়িতে ছুটিতে যাবার জন্য নতুন ক্যাপ্টেন আসেন দিন দশেকের জন্য। নতুন ক্যাপ্টেন দায়িত্বভার বুঝে নিলে পুরনো ক্যাপ্টেন ছুটিতে বাড়ি চলে যান কিন্তু দিন দশেক কাটতে না কাটতেই নতুন ক্যাপ্টেনের স্বরূপ প্রকাশিত হতে লাগলো।তার ব্যবহারে শীপের অধিকাংশ ক্রিউ প্রচন্ড ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলো।চীফ কুকের উপরেও ইচ্ছা মতো নানা রকম খাবারের ফরমাইজ করতে লাগলেন।শীপের নির্দিষ্ট সময় স্মরণিকা উপেক্ষা করে বিভিন্ন খাদ্য খাবারের অর্ডার করতে থাকেন যা তার পক্ষে সব সময় পূরণ করা সম্ভব হয় না। আসলে গ্যালীর ডিপার্টমেন্টটা এমনই একটা সেকশন যেখানে দেশ-বিদেশের সকল ক্রিউরা নিজ নিজ পছন্দমাফিক মেনু পাবার চেষ্টা করে কিন্তু চীফ কুককে কোম্পানির নির্ধারিত বাজেটের মধ্যে তা পূরণ করতে হয় অন্যথা হলে কোম্পানি কৈফিয়ৎ তলব করবে।এমতাবস্থায় এই সেকশনের দায়িত্ব সঠিকভাবে চালনা করার জন্য সব সময় সচেতন থাকতে হয়।সেই ভাবে সে তার কর্মসূচি পালন করার চেষ্টা করে।অবশ্য ছোটখাটো অনিয়ম তাদের হামেশাই মানিয়ে নিতে হয়।এবং সে তা সবসময় করেছেও।
২২ শে সেপ্টেম্বর ২০১৪ ইতালি থেকে পাঠানো তার ৫ পৃষ্ঠা ইমেইলে তার মনের আশা আকাঙ্ক্ষার কথা সব ব্যক্ত করে। আমি তা পড়ে অভিভূত হই।তার সেই আশা পূরণ হবে কিনা জানিনা তবে বিধাতার কাছে তা পূরণের স্বপক্ষে আবারও জানালাম প্রার্থনা।২৬ শে সেপ্টেম্বর আলবেনিয়া থেকে ফোনে আমার সাথে কথা হয়।সেই মতো পরদিন তার মেইলে পছন্দমত ১৩ খানা ছবি পাঠাই।সেগুলো পেয়ে খুশি হয়।তারমধ্যে হঠাৎ ২৯শে সেপ্টেম্বর রাত্রে আমায় ফোন করে জানায় শীপ থেকে ১১জন ক্রিউকে দেশে ফিরিয়ে আনছে।শুনে প্রচন্ড চিন্তিত হয়ে পড়লাম।ওইদিন রাত্রে আলবেনিয়া এয়ারপোর্ট থেকে ইস্তানবুল এয়ারপোর্ট।সেখান থেকে দুবাই এয়ারপোর্টে হয়ে ৩০ শে সেপ্টেম্বর দুপুরে মুম্বাই এসে পৌঁছায়।১লা অক্টোবর ANDROMEDA SHIPPING কোম্পানির অফিসে গিয়ে কোম্পানির বর্তমান পরিস্থিতি উপলব্ধিতে মুম্বাই না থেকে বাড়ি আসবার জন্য অন লাইনে রেলের টিকিট কেটে পাঠিয়ে দিলাম।সেই মতো ৩রা অক্টোবর ২০১৪ সকালে বাড়ি আসে।দীর্ঘ দিন পর বাড়ি এসে সবার সাথে মিলিত হয়ে খুশি হল।কেটে গেল দুর্গাপূজা, লক্ষ্মী পূজা।তখন যোগাযোগ করলো ANDROMEDA SHIPPING কোম্পানির সঙ্গে।অন্যশিপে জয়েনিংটা সময় সাপেক্ষ বুঝতে পেরে যোগাযোগ করতে লাগল অন লাইনে।একই সাথে SCARLET STAR শীপ থেকে আসা চেন্নাইয়ের মিঃ কলির সহযোগিতায় কয়েকটি কোম্পানি থেকে কল আসে কিন্তু পছন্দমাফিক না হওয়ায় পরে অন লাইনে যোগাযোগ করে V.SHIPS SHIPPING COMPANY র সাথে।সেইমত পার্ক সার্কাসের অফিসে গিয়ে দেখা করলেই শুরু হয় ইন্টারভিউ পর্ব—-
(চলবে——)