মুম্বাইয়ে R.K MARG এর NAU BHAVAN এ GOVT. OF INDIA MINISTRY OF SHIPPING এর অফিসে পৌঁছে সব রকম খোঁজ খবর নিয়ে ২৬ শে মার্চ২০১৪ নির্দিষ্ট ফর্ম পূরণ করে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সহ জমা করে দেয়।পরে জানতে পারে ওই সার্টিফিকেট ইস্যু হলে ডাকযোগে পৌঁছে যাবে তার কোয়ার্টারের ঠিকানায়।এবং সময় লাগতে পারে প্রায় দিন দশেক।এবার চেষ্টা শুরু করলো D.C.E (DENGEROUS CARGO ENDORSMENTS) সার্টিফিকেট পাবার জন্য।৩রা এপ্রিল ২০১৪ এক হাজার টাকা এবং ১১২৪ টাকার দুটি D.D তৈরি করে নির্দিষ্ট ফর্ম পূরণ করে MUMBAI CMMI FACILITATION CENTRE এ জমা করে সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট টোকেন।সার্টিফিকেট তৈরি হতে এখানে সময় লাগবে এক সপ্তাহের মতো। এই সময়ে আমরা বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যাবার জন্য বারবার বলতে লাগলেও সময় অভাবে আসতে রাজি হয় না। এদিকে অ্যাঙ্গোলা থেকে আসার সময় সে বাড়ির জন্য কিছু কিছু জিনিসপত্র নিয়ে আসে।সে গুলি সব প্যাকেট করে বাড়ির ঠিকানায় পার্সেল করে পাঠিয়ে দেয়।যথাসময়ে সেগুলি বাড়ি এসে পৌঁছেও যায়।এই সময়ে বাড়ি আসার জন্য বারবার ফোন পেয়ে নানান চিন্তা ভাবনায় অবশেষে এক সপ্তাহ সময় বের করে বাড়ি আসার জন্য রওনা হল।বাড়ি এসে পৌঁছায় ১৩ ই এপ্রিল সকালে।আমি তখন হরিসাহার হাটে।বাড়ি পৌঁছে আমাকে ফোন করে পৌঁছানো সংবাদ জানালে খুশি হলাম।দীর্ঘ ২০মাস পর ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে সেও পেল যেন এক অন্য আনন্দ! তার এই অল্প বয়সেও এসেছে অনেক বন্ধু, আবার হারিয়েও গেছে অনেকে।সুখে অনেক বন্ধু মিলে যায় কিন্তু দুঃখে মিলে কজন?কিন্তু তার বন্ধুদের মাঝে বাপ্পা ব্যতিক্রম।ও সব সময় তার পাশে থেকে উভয়ে উভয়ের সুখ দুঃখ শেয়ার করেছে।বিদেশে থাকাকালীন সব সময় ফেসবুকে করেছে যোগাযোগ। আবার কত বন্ধু তো লুকিয়ে লুকিয়ে ফেসবুক ঘেঁটেছে কিন্তু–!তাই বাড়ি এসেই পরদিন চলে গেল বারাসাতে বন্ধু বাপ্পার সাথে দেখা করতে।দীর্ঘদিন পর কাছে পেয়ে সে কি আনন্দ তাদের!যে বন্ধু ছিল এক দিনে এক নম্বর,কালের বিবর্তনে সেই বন্ধনে হয়েছে স্খলন তবুও শিষ্টতার খাতিরে মুম্বাই যাওয়ার সময় হয়ে যাওয়ায় ১৮ ই এপ্রিল বিকালে গেল ওর সেই দিনের এক নম্বর বন্ধুর বাড়ি দেখা করতে।যাবার পথে অনেকের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করে গেল। প্রত্যেকের কাছে পেল এক অকৃত্রিম ভালবাসার পরশ!ওদের বাড়ি থেকে দেখা করে এলো অনেক রাত্রে বাড়ি। আসার পর শুনলাম ওর মুখে বিস্তারিত বর্ণনা।তবে সে সব রইলো স্মৃতির পাতায় জমা—।যার অনুপ্রেরণায় আজ চাকরি সূত্রে দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়াবার সুযোগ অর্জন করতে পেরেছে,বাড়ি এসেই তাঁর বাড়িতে যেতে কিন্তু ভুল করেনি মোটেও।যখন তার শিক্ষক পঙ্কজদার বাড়িতে না জানিয়ে গিয়ে হাজির, তখন চাক্ষুষ দেখে অবাক হয়ে যান।কথা শেষে প্রাণ খুলে তিনি করলেন আশীর্বাদ যাতে তার কর্মজীবনে উত্তরোত্তর সুনাম বৃদ্ধি হয়।তারা তখন উভয়ে প্রচন্ড খুশি। স্বল্প সময়ের জন্য বাড়ি এসে সবার সাথে ঠিক মতো দেখা-সাক্ষাৎ করে উঠতে পারল না।মুম্বাই ফিরে যাবার তাগিদে ব্যস্ততায় তৎকালে ট্রেনের টিকিট কাটা হলো ।স্বল্প দিনের সংক্ষিপ্ত সফর সেরে ২২শে এপ্রিল ২০১৪ সকালে হাওড়া থেকে দুরন্ত এক্সপ্রেসে মুম্বাই রওনা হল। যাবার সময় মা ও বোন গেল দমদম ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে।ট্রেন প্লাটফর্মে ঢোকার আগেই মা ও আমাকে প্রণাম করে বোনকে ভালো থাকিস বলে হাসিমুখে উঠে পড়ল ট্রেনে।আমি সঙ্গে গেলাম হাওড়ায়।নির্ধারিত সময় সকাল আটটা কুড়ি মিনিটেই ট্রেন ছেড়ে গেল।আমি হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে ফিরে এলাম বাড়িতে।পরদিন সকালে মুম্বাই পৌঁছে বেলাপুরে সোজা না গিয়ে প্রথমে লাগেজ নিয়েই চলে গেল MUMBAI CMMC FACILITATION CENTRE এ। সেখানে নির্দিষ্ট টোকেন দিয়ে সংগ্রহ করল THE COMPANY OF MASTER MARINERS OF INDIA D.C.E সার্টিফিকেট। সঙ্গে সঙ্গেই আমায় ফোন করে তার প্রাপ্তি সংবাদ জানিয়ে দিল।আমি খুশি হলাম। সেখান থেকে সোজা বেলাপুর রুমে পৌঁছে ডাকযোগে প্রাপ্ত C.O.C হাতে পেল। তখন সে মহা খুশি।একটু রেস্ট নিয়ে ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে পড়ল নতুন অফিসের খোঁজে। অ্যাঙ্গোলায় থাকাকালীন সহকর্মীদের মাধ্যমে অনেক নতুন নতুন কোম্পানির ঠিকানা ও ফোন নাম্বার সংগ্রহ করে।সৌভাগ্যবশত সেইসব কোম্পানির মধ্যে ANDROMEDA SHIPPING (INDIA) PVT.LTD এর ADMIN OFFICER অল্প বয়স্ক MR.PRODDUT BISWAS এর সাথে সুভাষ নগর সুপার মার্কেটে আমাদের দোকান শম্পা স্টোর্সে পরিচয় হয়ে যায়।আমার ছেলের কথা শুনে সেও খুশি হয়।আমি উভয়ের মাঝে ফোনে যোগাযোগ করিয়ে দিই।সেইমত তাদের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ হতে থাকে।পরে ছেলে বাড়ি আসলে সাক্ষাতে তাদের সামনা সামনি বিভিন্ন কথাবার্তার পর ছেলে ঐ কোম্পানিতে যোগাযোগের সিদ্ধান্ত নেয়।সেই মতো ২৩শে এপ্রিল আন্ধেরিতে ঐ অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করে।সেখানে বায়োডাটা দেখে পরদিন আবার যেতে বলেন।সেই মতো সেই দিন গেলে কোম্পানি তার CDC ও পাসপোর্ট জমা নিয়ে নেয় এবং প্রয়োজনীয় ট্রেনিং- য়ের জন্য নির্দেশ দেয়।সেই মতো নির্দিষ্ট ট্রেনিং সেন্টার খোঁজাখুঁজির পর বেলাপুর B.P.MARINE ACADEMY তে যোগাযোগ করলে নির্ধারিত ডেট পড়ে প্রায় তিন সপ্তাহ পরে তবুও ট্রেনিংয়ের নির্দিষ্ট ফিস জমা করে দেয় এবং অপেক্ষা করতে থাকে যদি কোন ক্যান্ডিডেটের অনুপস্থিতির ফলে সেই গ্যাপে প্রশিক্ষণ নেয়া যায়।সেই মতো ৫ই মে থেকে ৯ই মে এই পাঁচ দিনে ঐ একাডেমিতে ট্রেনিং চলতে থাকে।ওইসব নির্দিষ্ট দিনে বিভিন্ন স্পটে গিয়ে PROFICIENCY IN SURVIVAL CRAFT & RESCUE BOATS OTHER THAN FAST RESCUE BOATS এর প্রশিক্ষণ নেয় এবং ৯ মে CAPT:A.M.KHALFAY এর কাছ থেকে পেল কোর্স সফলতার সার্টিফিকেট।১০ই মে গিয়েANDROMEDA SHIPPING(INDIA)PVT.LTD এর আন্ধেরি অফিসে গিয়ে সেই সমস্ত সার্টিফিকেট জমা করলে শুরু হয় প্রসেসিং।অপেক্ষায় থাকে কখন আসবে জয়েনিংয়ের ডাক।১৬ই মে অফিসে যোগাযোগ করলে জয়েনিংয়ের জন্য রেডি কিনা জানতে চাইলে যেকোন মুহূর্তে যাবার জন্য প্রস্তুত জানিয়ে দেয়।চলে অপেক্ষা।১৯শে মে ফোন এলো মেডিকেল টেস্ট করার জন্য।সেই মতো নির্দিষ্ট সময়ে অফিসে পৌঁছে যায়।তার ফাইল ওপেন করে দেখল NUCI র পিএফ নাম্বার রেজিস্ট্রি করা হয়নি।সেইমতো অবিলম্বে এই নম্বর জমা করার নির্দেশ দেয়।পরদিন একুশে মে ২০১৪ NUSI BHAVAN এ গিয়ে এই কার্ড করিয়ে অফিসে PF নম্বরটা জানিয়ে দেয়।এবং এই দিনেই কোম্পানির নির্দেশ মত তাদের তালিকা অনুযায়ী কুকের নির্দিষ্ট পোষাকাদি সংগ্রহ করে আনে এবং যেকোনো মুহূর্তে কোম্পানির কল এলে যাবার জন্য লাগেজ রেডি রাখার নির্দেশ দেন।আর শুধু চলে সময়ের অপেক্ষা।কখন জয়েনিং এর নির্দেশ আসবে।৩১শে মে আমার ইমেইলে NUCIর সব ডকুমেন্টস এবং কার্ডের জেরক্স মেইল করে পাঠালে আমি তার প্রিন্ট বের করে আনি।৬ই জুন কোম্পানি থেকে কল এলে অফিসে গিয়ে এগ্রিমেন্ট তৈরি হলে তার জেরক্স কপি স্ক্যান করে আমাকে মেইল করে দেয়।তখন জানতে পারলাম ইস্তানবুল থেকে জয়নিং হবে।শীপের নাম SCARLET STAR.এগ্রিমেন্ট কপিতে স্বাক্ষর করে আমাকে ফোন করে জানালো ওই দিন ভোররাতে ফ্লাইট।টিকিটসহ সমস্ত কাগজপত্র তার হাতে পৌঁছে গেছে।অফিসের কাজকর্ম সেরে সোজা চলে এলো বেলাপুর রুমে।তখন রাত আটটা।সবার সাথে দেখা সাক্ষাৎ করে ব্যস্ততার মধ্যে সারতে হলো প্রস্তুতিপর্ব।ঐ দিনই ছেলের সবচেয়ে আপন সাথী ক্যাম্পাইজি তার দেশের বাড়িতে ব্যাঙ্গালোরে গিয়েছেন।মোবাইলে যোগাযোগ করেও না পেয়ে মনটা হল খারাপ।৭ই জুন ভোর ৫:৫৫ মিনিটে মুম্বাই ছাত্রপতি শিবাজী টার্মিনাল -২ থেকে TURKEY AIRWAYS এর ফ্লাইটে এবারের জার্নি ডাইরেক্ট মুম্বাই থেকে ইস্তানবুল।রাত দুটোয় রিজার্ভড ট্যাক্সি কোয়াটারের সামনে এসে দাঁড়ালো।তখন সে ব্যস্ত অনেক বন্ধু-বান্ধবদের ফোন রিসিভ করায়।কথা বলছে সবাইর সঙ্গে ফেসবুকে সকলের পাঠানো শুভেচ্ছা বিনিময়ে।সকলের আশীর্বাদ মাথায় নিয়ে রাত দুটো ১৫ মিনিটে উঠল ট্যাক্সিতে।শুরু হল যাত্রা। আমি বাড়িতে সারারাত জেগে রইলাম।সারা দিনের পরিশ্রান্ত শরীরে ক্লান্তির কথা ভেবে বড় দুঃখ হচ্ছিল। দিনের পর দিন সে দূরে থেকে কি কষ্টটাই না করে চলেছে!ফোন এলো রাত আড়াইটায়।ওর মা ও বোন অন্য ঘরে তখন ঘুমিয়ে পড়েছে।মন খুলে কথা বললো।যখন বলতে চাইলো-গভীর সমুদ্রে দুর্ঘটনার কথা কিছু বলা যায় না।যদি–! শুনতেই বুকের মধ্যে মোচড় দিয়ে উঠলো।থামিয়ে দিলাম। শুরু করলো অন্য কথা।এইভাবে সাড়ে চারটা অবধি বিভিন্ন প্রসঙ্গে কথা বললাম।প্রতিদিন মর্নিং ওয়াকে যাবার জন্য ঘড়িতে অ্যালার্ম বেজে উঠলো,আমি তখন ওর মাকে ডেকে দিয়ে ফোনটা হাতে তুলে দিলাম।মা ও বোনের সাথে আধাঘন্টা কথা বলল।আমি পাঁচটায় বেরিয়ে পড়লাম মর্নিংওয়াকে।পাঁচটা পঁচিশে ছেলে আবার ফোন করলো।কথা বলল আমার প্রাতঃভ্রমনের সঙ্গী সঞ্জীব ও নেপচুনের সাথে।ওর কথায় ওদেরও খুব ভালো লাগলো।প্রাতঃভ্রমন সংক্ষিপ্ত করে পৌনে ছটায় বাড়িতে পৌঁছে গেলাম।ছটা তিন বাজতেই আবার ফোন করল।তখন প্লেনে উঠে পড়েছে।সামান্য লেট আছে।কিছুক্ষণের মধ্যে ছাড়বে জানালো।তারপর আর কোন যোগাযোগ হলো না।দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর তার কোন মিসড কল না পেলেও আমি বারবার মিসডকল দিতে থাকি।তারপর ৭ তারিখে দুপুর বিকাল ও সন্ধ্যায় চারবার মিসকল দেয়।পরে ৮ই জুন বিকাল তিনটার সময় ফোন করে জানায় তারা সবাই মিলে ইস্তানবুলে TASHAN HOTEL এ আছে।খুব সুন্দর পরিবেশে অভিজাত হোটেল এটা। চতুর্দিকে ওরা অনেক জায়গায় ঘুরেছে।১১ তারিখে সকাল ৭ঃ০৮ মিনিটে পর পর তিনবার মিসডকল দিয়ে জানিনা কি বার্তা দিল।আমি যথারীতি মিসড কল দিয়ে গেলাম।তারপর শুধু অপেক্ষা।ওই দিনই আর মিসডকল না দিলেও আমি মিসডকল দিলে রিংটোন শুনতে পাই।সেই মত রাত দশটায় ব্যস্ত ভাবে একটা চিঠি লিখে মেইল করে পাঠিয়ে দিলাম।মেইল খুলতে পারবে কি না ভেবে রাত বারোটায় একটা SMS করে এই খবরটা জানিয়ে দিলাম।পরদিন অর্থাৎ ১২ তারিখে সকাল দশটায় মিসডকল দিয়ে দেখি টাওয়া- রের বাইরে চলে গেছে।বুঝলাম শীপে জয়েনিং হয়ে গেছে।তখন থেকে শুধু অপেক্ষা।তারপর ১৪ই জুন সন্ধ্যায় পেলাম পরপর দুটি মিসডকল।আমি মিসড- কল দিয়েই একটা SMS পাঠিয়ে দিলাম।মেইল খুলতে না পারলেও অন্তত SMS এর মাধ্যমে কিছু খবর পাবে এই ভেবেই এমনটা করলাম।১৭ই জুন ২০১৪ রাত ১২ঃ০৩ মিনিটে আমি তখন ঘুমন্তাবস্থায় হঠাৎ মোবাইলের রিংটোনে ঘুম ভেঙ্গে যেতেই ফোন ধরলাম।ফোন রিসিভ করতেই শুনতে পেলাম-“বাবা!আমি সুদীপ বলছি” অস্পষ্ট কণ্ঠস্বর।বলল আমরা এখন ইতালিতে।ভালো আছি।একটা বিশেষ কার্ডের মাধ্যমে ৫জন মিলে এই ফোন করছি।২৫ ডলারে মাত্র ৪২ মিনিট কথা বলা যাবে।ভারতীয় টাকায় প্রতি মিনিটে ৩৫০টাকা।তাও স্পষ্ট শোনা যায় না।কোন চিন্তা করতে হবে না।সবই ঠিকঠাক চলছে। মা ও বোনের সঙ্গে পরে কথা বলবো।আমি বললাম মা ও বোন কাছে আছে। ওরা কথা বলার শব্দ শুনে পাশের ঘর থেকে এ ঘরে ইতিমধ্যে এসে বসেছে।ওর মাকে ফোন দিতেই লাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।পরে আর ফোন করেনি।বুঝলাম খুব ব্যয় সাধ্য এবং সবাই মিলে সকলের বাড়ির সাথে সামান্য সময়ের জন্য কথা বলতে পেরেছে।ছেলের সাথে কথা বলে যখন জানতে পারলাম SCARLET STAR শীপে নিজের ল্যাপটপে ইন্টারনেট যোগাযোগ করবার ব্যবস্থা নেই তখন জানিয়ে দিলাম যখনই মোবাইলের টাওয়ারের এক্তি- য়ারের মধ্যে পৌঁছানোয় রিংটোন শুনতে পাবো তখনই SMS এর মাধ্যমে কিছু খবরাখবর জানিয়ে দেবো।আপাততঃ এভাবেই সন্তুষ্ট থাকব-জানিয়ে দিলাম। ১৮ই জুন রাত ৯টা ৩৩ মিনিটে ছেলের একটা ফোন পেলাম।মাত্র দু মিনিট কথা হল।শুনে ভালো লাগলো। শীপের ক্যাপ্টেন সহ সকল ক্রিউ তার কাজে প্রচন্ড খুশি।সন্তানের নিন্দায় যেমন পিতা-মাতার মনে লাগে আঘাত তেমনি তাদের প্রশংসায় বুক ভরে ওঠে। খবরটা শুনে পিতা হিসেবে আমারও অন্যথা হয়নি। তখন সে MALTA এলাকার সমুদ্রের মাঝেই অবস্থান করছে।তখন মোবাইলের টাওয়ারে যোগাযোগ সম্ভব হচ্ছিল।২৩শে জুন সন্ধ্যায় পরপর দুইবার একই নম্বর থেকে মিসডকল পেলাম। সঙ্গে সঙ্গেই ওই নম্বরে রিং ব্যাক করলাম কিন্তু ২৪৮ টাকা ৮৭ পয়সা ব্যালেন্স থাকা সত্ত্বেও শুনতে পেলাম- যথেষ্ট ব্যালেন্স নেই, আপনার অ্যাকাউন্ট রিসার্চ করুন।সঙ্গে সঙ্গেই ১১১ টাকা রিচার্জ করে কল করলাম। কথা বললাম মাত্র ৫৯ সেকেন্ড।লাইন ডিসকানেক্ট হয়ে গেল।বারবার মিসডকল দিতে লাগলো ছেলে।সত্যি কথা বলতে কি, আমার ধারণা ছিল না প্রতি মিনিটে ঐ UK নম্বরে কল চার্জ ছিল প্রতি মিনিটে ২৫০ টাকা।