ডারবানের মাটিতে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞাসা করে ওরা জানতে পারলো সেখানে সমস্ত খাবার দাবার সহ সব জিনিসপত্র বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি হয়ে এখানে এসে মাত্র তিন-চারটি ডিস্ট্রিবিউটারের মাধ্যমে সাপ্লাই করা হয়।তাই জিনিসপত্রের দাম এমন ঊর্ধ্বমুখী।এমন গরিব দেশে এহেন অগ্নিমুখী দ্রব্যমূল্যে এখানকার গরীব মানুষের কথা ভাবতে ভাবতে ওরা হেঁটে চলেছে। সময়ের দিকে ওদের মোটেও খেয়াল নেই। রাত্রের অন্ধকার অনেক আগেই দিনের আলোকে গ্রাস করে নিয়েছে।আরো একটু এগিয়ে যেতেই ওদের চেতনা জাগলো। ততক্ষণে রাস্তায় রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছে সিকিউরিটি গার্ড। চতুর্দিকে তারা রাউন্ড দিয়ে চলেছে। সবার কাছে একটা করে বড় বন্দুক,একটা ছোট,একটা নাইফ,একটা ছোট লাঠি আর একটা করে টর্স। সবার পরিধানে মিলিটারি ড্রেস।১৫-২০ মিনিট অন্তর জিপ গাড়ি এসে টহল দিচ্ছে।ওরা অনেকক্ষণ ধরে এটা লক্ষ্য করেছে কিন্তু কিছুতেই বুঝতে পারছে না কেন সিকিউরিটি গার্ডের এত আনাগোনা? সহসা সাহস করে ওরা এগিয়ে গেল রাস্তার পাশে একটা মিলিটারি ক্যাম্পে।ক্যাম্পটা ছোট।সেখানে তারা কথা বলে জানতে পারলো এই দেশে টুরিস্টদের পক্ষে মোটেও নিরাপদ নয়।এখানে আছে ভিন্ন ধরনের ক্রিমিনাল। সবসময় মারামারি গুলিগালা নানান ধরনের অপরাধ মূলক কাজ অহরহ হয়ে চলেছে। সব শুনে মনে হল এ যেন এক অরাজকতার রাজ্য।এইসব সিকিউরিটি বেসরকারি তবে সরকার অনুমোদিত।ওরা রাস্তা ধরে হাঁটতে লাগলো।দেখতে পেল রাস্তার পরে দলে দলে ছেলেরা ফুটবল খেলছে।কোথাও বা রাস্তার পাশে অনেকে টানছে গাঁজা। জায়গায় জায়গায় কুড়ি পঁচিশ জনের মতো এক একটা দল।প্রত্যেক জায়গায় ছেলে- মেয়েরা ছন্নছাড়া বাউন্ডুলের মতো ঘোরাঘুরি করছে। ওরা হেঁটে চলেছে আর স্থানীয় সবাই তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে তাদের।এমনভাবে তাকানো দেখে ওদের মনে ভয়ের সঞ্চার হল।একেতো অপরিচিত দেশের অচেনা অজানা জায়গা।রাস্তাঘাট কিছুই চেনে না। হাঁটতে হাঁটতে ওরা সী বিচ থেকে অনেকটা ভেতরে চলে এলো।তখন ওরা হঠাৎ থমকে গেল।আর সামনে এগোবার সাহস পেল না।শুরু করল পিছাতে।রাস্তায় মেয়েরা ওদের ডাকাডাকি করতে লাগল।ওরা ভয় পেয়ে গেল আরও।কোন দিকে না তাকিয়ে হাঁটার গতি দিল বাড়িয়ে। আর তখন ওরা কোম্পানির নির্দেশের কথা বারবার স্মরণ করে উপলব্ধি করল সেই নির্দেশ অমান্য করে তারা যে কতটা ভুল করেছে! বেগতিক বুঝে ওদের মাথায় উপস্থিত বুদ্ধি এলো। ওরা সোজা চলে গেল রাস্তার পাশে আর একটা মিলিটারি ক্যাম্পে। সেখানে গিয়ে তারা বিস্তারিত সব জানালো। তখন ক্যাম্পে তাদের পরিচিতি পত্র দেখতে চাইলে সঙ্গে সঙ্গেই তারা তাদের নিজ নিজ নেভির আইডেন্টি কার্ড ও পাসপোর্ট শো করল।তারা বুঝতে পারল, এরা সম্পূর্ণ নতুন তাই না বুঝে এমন পরিস্থিতিতে এসে পড়েছে।এই মুহূর্তে তাদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে সাহায্যের অনুরোধ জানানো।নেভির স্টাফ ভেবেই কালবিলম্ব না করেই ওয়াকিতে ফোন করলো কন্ট্রোল রুমে। মুহূর্তেই জীপ এসে হাজির।দুজন সিকিউরিটি নেমে এলো গাড়ি থেকে।ওরা তাদের সাথে নিয়ে একটু স্বস্তিতে হাঁটতে শুরু করল। ছেলে চিরকাল একটু অন্য প্রকৃতির।প্রচন্ড পরোপকারী এবং একটু দয়ালুও বটে।কেউ কখনও তার কোনরকম উপকার করলে প্রতিদানে তাকে কিছু না দিতে পারলে নিজেকে যেন ঋণী মনে করতো। ভিন্ন দেশে বিপদকালীন মুহূর্তে এমন সহানুভূতি পেয়ে কি দেওয়া যায় শুধু ভাবছে।সিকিউরিটি নিয়ে ওরা হেঁটে চলেছে সবাই তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে।ওদের যেন মনে মনে আনন্দ লাগছে।লোকে ভাবছে,এরা নিশ্চয়ই কোন ভিআইপি নতুবা কোন গেস্ট।দলে দলে ছেলে মেয়েরা ওদের দেখে ডাকতে লাগলো।কেউ কেউ ওদের গায়ের কাছে চলে এলো। তখন রাতও হয়ে গেছে প্রায় পৌনে নটা।ওদের ডাকাডাকির অসংযত অশালীন আচরণে সিকিউরিটি কাঁধের বন্দুক হাতে নামিয়ে বলল-DON’T TOUCH HIM THEY ARE OUR GUEST।ওরা তখন পিছিয়ে গেল।শুরু করল আবার হাঁটা।কিছুটা এগিয়ে গিয়ে ওদের বিদেশি টাকা চেঞ্জের প্রয়োজনে ঢুকলো একটা দোকানে। আশে পাশে সমস্ত দোকানপাট অনেক আগেই বন্ধ হয়ে গেছে।দোকানে ঢুকেই দেখল চারটি ছেলে দাঁড়িয়ে। তারাও কাস্টমার।দোকানদার একটা অল্প বয়সের মেয়ে। প্রচন্ড কালো হলেও দেখতে ভালো।ডাগর ডাগর চোখে ওদের দিকে বারবার তাকাতে লাগলো। কিন্তু কিছুই বলছে না।যেন পাত্তা দিল না।ওদের দিকে তাকিয়ে চলেছে আর ব্যস্ততার সাথে ছেলেগুলির সাথে আদান-প্রদান সারছে।ওরা চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলো। কিছুক্ষণের মধ্যেই তাদের ছেড়ে দিয়ে ওদের কাছে জানতে চাইল- তারা কোন কারেন্সি চেঞ্জ করবে? ডলারের কথা শুনেই মেয়েটি তখন ওদের বলল- আপনাদের এতক্ষণ দেরি করিয়েছি কেন বুঝতে পারলেন?ওরা জানালো দেখুন আমরা এখানে সম্পূর্ণ নতুন- কিছুই জানিনা, কিছুই চিনি না- তাই বুঝতে পারছি না।শুনেই মেয়েটি বলল- সে তো প্রথম দর্শনেই বুঝতে পেরেছি।দেখুন প্রতিদিন আমাকে নানা ধরনের কাস্টমারের সাথে আদান-প্রদান করতে হয়। সেই অভিজ্ঞতায় অতি সহজেই লোক চিনতে পারি। এখানে এই অবস্থায় এত রাতে আপনারা এসে মারা- ত্মক ভুল করেছেন।তখন মেয়েটি বলল,এই ছেলেগুলি সবাই ক্রিমিনাল। এদের মত অনেকেই অহরহ আসছে যাচ্ছে। আপনাদের ডলার চেঞ্জ করা দেখলে রাস্তা থেকে সব কেড়ে নিতো।এত রাত অব্দি কোন দোকান এখানে খোলা থাকে না।আপনাদের দেখে দোকান বন্ধ করতেও পারছি না।তখন ওদের কাছে জানতে চাইলো,এই সিকিউরিটি গার্ড ওরা কিভাবে পেল। সব শুনে মেয়েটি বলে উঠলো-YOU ARE VERY LUCKY MAN তাই এত রাতে এই মুহূর্তে ওদের এমন সহানু ভূতি পেয়েছেন। ওরা এ কথা শুনে আরও আতঙ্কিত হল।এমতাবস্থায় কি করবে ভেবে ভীষণ চিন্তিত হয়ে পড়ল।উপায়ান্তর না দেখে তখন ওই সিকিউরিটি গার্ডদের বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো,তাদের পোর্টে পৌঁছে দেবার জন্য।তখন রাত সাড়ে নটা বেজে গেছে। ওদের অনুরোধের সমর্থনে মেয়েটিও সায় দিয়ে সহানু- ভূতি দেখালো।সেও সিকিউরিটি গার্ডদের বিশেষভাবে রিকোয়েস্ট করল।তখনকার ঐ অসহায় অবস্থায় ওদের পক্ষে এমন অনুরোধ জানানোতে ওদের কাছে খুব ভালো লাগলো।ওরা খুশি হল।ঠিক ওই মুহূর্তের কথা ওরা ভুলতে পারছিল না।ওরা রাজি হয়ে ইশারায় ওদের গাড়িতে উঠার নির্দেশ দিল।গাড়িতে ওঠার আগে ওরা মেয়েটিকে জানাতে ভূললো না- THANK YOU VERY MUCH——– দোকান থেকে বেরিয়েই ওরা এল রাস্তায়। চলতে গিয়ে চিন্তা করলো, তাদের সাথে যখন সিকিউরিটি গার্ড আছে তখন ভয় কিসের?এখানকার একটু চাক্ষুষ অভিজ্ঞতা অর্জন করে নিই কিন্তু ওদের তা বলা যাবে না। তাই ঘুরিয়ে বলল- দেখুন!আপনারা আমাদের এই অসময়ে এমন উপকার করেছেন তাই এখানকার এই মুহূর্তের স্মৃতি কোনদিন ভুলতে পারবো না। আমরা আপনাদের কিছু দিতে চাই।শুনে ওরা খুশি হলো। ওদের সম্মতিতে ওদের সঙ্গে নিয়ে ঢুকলো একটা ক্লাবের মধ্যে। ঢুকতেই সিঁড়িতে দেখতে পেল অনেক মেয়েরা সেখানে দাঁড়িয়ে।কারো কারো মুখে সিগারেট। কোন দিকে না তাকিয়ে সোজা উপরে উঠে যেতে লাগলো। ভিতরে ধোঁয়ায় ভর্তি যেন দম বন্ধ হয়ে যাবে। আড় চোখে তাকিয়ে দেখতে পেল বেশিরভাগ মেয়ে কালো।দুই একজন সাদা।ভেতরে ঢুকতেই সিকিউরিটি গার্ড দেখে ওরা ভাবলো,এরা আবার কারা, সঙ্গে সিকিউরিটি নিয়ে এসেছে? সবাই ঘন ঘন তাকাতে লাগলো।ওরা ব্যস্ত ভাবে চলে গেল কাউন্টারে।চট করে পাঁচটি বিয়ার নিল।ফেরার পথে দেখল এক বিশ্রী উৎশৃংখল পরিবেশ।ছেলেমেয়েরা টানছে চুরুট কেউবা গাঁজা, কেউ খাচ্ছে কিস কেউবা——সে এক বিশ্রী অশালীন বেশ।ওদের যেন দম বন্ধ হয়ে যেতে লাগল। মেয়েগুলি ওদের বারবার ডাকতে লাগলো। তখন কোন দিকে আর না তাকিয়ে ওরা বেরিয়ে এলো। তাড়াতাড়ি নিচে এসে একটা দোকান থেকে নিল এক প্যাকেট সিগারেট।গাড়িতে উঠতেই ড্রাইভারকে বলতে লাগলো সব ঘটনার বিবরণ। আর সবার হাতে তুলে দিল এক একটি বিয়ারের বোতল।সাথে সাথে গাড়িতে বসেই তার সদব্যবহার করল।ওরা সবাই খুশি। গাড়ি চলছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই এসে পৌছালো ওদের কন্ট্রোল রুমের সামনে।গাড়ি থেকে সিকিউরিটি নেমে বলল- এখান থেকে সোজা রোড ধরে চলে যান। আর কোন ভয় নেই তবে একটু হাঁটতে হবে বেশি। সামনে গিয়ে একটা গলি পড়বে।সেখান দিয়ে ক্রস করলে রাস্তা অনেকটা কম হবে।কিন্তু একটু রিক্স হয়ে যাবে কারণ ওখানে আছে কিছু ক্রিমিনাল। আপনারা বরং একটা ট্যাক্সি নিয়ে সোজা চলে যান।এ কথা শুনে ওরা ভাবল- ট্যাক্সি করলে তো ভাড়া গুনতেই হবে।ওরা নিঃস্বার্থে এতটা উপকার করল তাই সেই ভাড়ার টাকাটা যদি ওদের দিয়ে দেওয়া হয় তাহলে নিরাপদে পৌঁছাতে পারবে। প্রস্তাবটা দেওয়ায় ওরা রাজি হয়ে গেল। মুহূর্তেই জীপে করে পৌঁছে গেল পোর্টে। ওরা হাতে হাত মিলিয়ে জানালো কৃতজ্ঞতা। নির্ভয়ে তখন ওখানে তুলে নিল ওদের সাথে ছবি।তখন রাত দশটা। শীপে পৌঁছাতেই অন্যান্য নাবিকেরা ওদের ঘিরে ধরল সব জানার জন্য।সমস্ত বিবরণ শুনে সবাই চমকে উঠল।ওরা তখনও ঐ দোকানদার মেয়েটির আন্তরিক সহানুভূতির কথা বারবার স্মরণ করে চলেছে- “আপনারা অত্যন্ত ভাগ্যবান।এই সিকিউরিটি না পেলে আজ আপনাদের কাছে কিছুই থাকত না। সমস্ত কিছু কেড়ে নিয়ে——- ডারবান পোর্টে মাত্র তিন দিনের মতো অবস্থান করে তারা রওনা হয়ে গেল ওয়েস্ট আফ্রিকার অ্যাঙ্গোলায়। ২৭শেজানুয়ারি ২০১৪ রাত ১১ টা ৩৪ মিনিটে আমায় ফোন করে জানায় সে আমাকে মেইল করেছে। পরের দিন সাইবার কাফেতে গিয়ে তার পাঠানো আমার মেইলে সম্প্রতি চীন ও ডারবানে তার ক্যামেরায় তোলা বিভিন্ন স্মরণীয় মুহূর্তের ছবি,আমার পেনড্রাইভে তুলে নিয়ে আসি।সঙ্গে তাকে এক পৃষ্ঠা চিঠি স্কান করে তার মেইলে পাঠিয়ে দিয়ে যেন স্বস্তি অনুভব করি। কারণ এই সময়ে যেটুকু কথা হতো তা স্যাটেলাইট ফোনে সুদূর অ্যাঙ্গোলা থেকে তার খরচ ছিল ব্যয়বহুল তাই ইচ্ছা থাকলেও প্রাণ খুলে কথা বলতে পারতাম না। এই সময়ে ছেলের সাথে বন্ধু বিট্টুর ফেসবুকে চ্যাটিং হোত।এই সময়ে বিট্টু সহ অনেক বন্ধুবান্ধবদের সাথে চ্যাটিংয়ে দেশের নানান খবর জানতে পারতো। ১৪ই ফেব্রুয়ারি ওর জন্মদিন।মনটা বড্ড খারাপ লাগছিল। সকালে উঠেই ওর মা ও বোনকে নিয়ে চলে গেলাম দক্ষিণেশ্বর মায়ের মন্দিরে।পুজো দিয়ে প্রার্থনা জানা- লাম। মনে মনে কিছুটা স্বস্তিও পেলাম। সোজা এসেই চলে গেলাম সাইবার কাফেতে।আমাদের সবাইর পৃথক পৃথক তিনখানা চিঠি স্ক্যান করে মেইল করলাম, তাতে আমরা সবাই জানালাম হ্যাপি বার্থডে! ওই দিনই রাত ১০:৫২ মিনিটে আমাদের ফোন করলে শুভ জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে কথা বললাম। সবার মনটা যেন হল শান্ত। এই সময়ে সবার সাথে ফোনে যোগাযোগ করতে না পারলেও ল্যাপটপে ফেসবুকে দেশ-বিদেশের বন্ধুবান্ধবদের হতো নিয়মিত যোগাযোগ।কর্মসূত্রে বিদেশের কয়েকজন সহকর্মীসহ দুজন ক্যাপ্টেনের সাথেও ছিল নিয়মিত যোগাযোগ।পরে জানতে পারি জন্মদিনে কমপক্ষে শতাধিক হিতাকাঙ্ক্ষিরা তাকে উইশ করেছে।শুনে খুশি হলাম।১লা মার্চ ২০১৪ দুপুরে ফোন করে জানালো ওদের শীপ পোর্ট থেকে কমপক্ষে ৫০ কিলোমিটার দূরে অ্যাঙ্কার করে দাঁড়িয়ে আছে। সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ে নেট পরিষেবা ব্যাহত হওয়ায় মেইল করতে পারছেনা তবে ভালো আছে।চার পাঁচ দিনের মধ্যেই শীপ পোর্টে পৌঁছে যাবে।পরে জানলাম ৫ই মার্চ তারা পৌঁছে যায় পোর্টে। অ্যাঙ্গোলায় কর্মরত অবস্থায় এক অনভিজ্ঞ সেই দেশের ক্রিউর রিকুটমেন্টে শীপে ধীরে ধীরে এক চাপা অসন্তোষের আবহাওয়া সৃষ্টি হতে থাকে।শীপের মধ্যে সব সময় আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে চলাফেরা এবং এ ব্যাপারে পক্ষপাত মূলক আচরণে আস্তে আস্তে মতানৈক্য দেখা দেয়।শীপে প্রত্যেক ক্রিউর কাজের রিপোর্ট নিয়মিত ভাবে ক্যাপ্টেনের মাধ্যমে কোম্পানিতে পৌঁছে যেত।এ সময়ে ছেলেও কিছু কিছু রিপোর্ট করায় কোম্পানি কিছু সিদ্ধান্ত নেয়।তাদের শীপ তখন TOTAL GAS CO. এর অধীনে কর্মরত।ওই কোম্পানি চার মাসের বেশি কোন ক্রিউকে সে দেশে এককালীন কাজ করার অনুমতি দেয় না।ফলে এগ্রিমেন্টের মেয়াদ শেষ হবার আগেই কোম্পানির নিয়ম অনুযায়ী যাদের সময়সীমা চার মাস অতিক্রম হয় তাদের রিলিভার দিয়ে অন্যত্র পাঠাবার সিদ্ধান্ত নেয়।এমতাবস্থায় তাঞ্জানিয়ায় পাঠাবার সিদ্ধান্ত নেয় ছেলেকে। সেইমত ২১ শে মার্চ ২০১৪ অ্যাঙ্গোলা এয়ারপোর্ট থেকে রওনা হয়ে 22 শে মার্চ দুবাই এয়ারপোর্টে এসে পৌঁছায় এবং সেখান থেকে পরবর্তী নির্ধারিত ফ্লাইটে মুম্বাই এয়ারপোর্টে পৌঁছে যায়।সেখান থেকে সোজা বেলাপুর রুমে পৌঁছে আমায় বিস্তারিত জানায়। একটু ফ্রেশ হয়ে আর সময় নষ্ট করতে চাইলো না।বেরিয়ে পড়ল COC র জন্য মুম্বাইয়ের অফিসে।