প্রায় ১৫ দিনের পর, মহামায়া মহিষাসুর মর্দিনী রূপে দেবীপক্ষের সূচনা করেন। সে ভয়াবহ যুদ্ধ অবশ্য আমাদের প্রথম বিশ্বযুদ্ধ বা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মত নয়, সে যুদ্ধে যে মা নিজের হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছিলেন… সমস্ত ত্রিলোকের রক্ষাকারিনি জগৎ জননীর আরাধনায় বাঙালি কি খামতি রাখতে পারে?? আমাদের ধমনীতে যে কেল্টিক রক্ত নয়, বাঙালি রক্ত বইছে,,, সেজন্যই তো শহুরে বাঙালির জীবনে কাশফুল দেখার আশ না মিটলেও কাশফুলের ঘ্রাণ কেন জানি তার বহু পরিচিত। যুগ পাল্টেছে, দিন এগিয়েছে,,, এখন আর মানুষের জীবনে সময় নেই। কিন্তু, কিভাবে যেন উমার আগমনে সবার জীবনের গতি ধীর হয়ে যায়, মানুষ তার সারা বছরের জমানো সময় এই দিন কটায় নিশ্চিন্তে খরচ করে। তার আগমন যে সারা বিশ্বব্যাপী।চারদিকে রোশনাই, আলোয় আলোয় আলোকিত হয়েছে পথঘাট, নতুন সাজে সেজে উঠেছে ত্রিভুবন, আনন্দে মাতোয়ারা মানুষ…. ৩৬০ দিনের অপেক্ষার পর কিভাবে যে দেখতে দেখতে এই পাঁচটা দিন কেটে যায় তার উত্তর নেই। অবশ্য সব কথার কি এর উত্তর থাকতে আছে? দুপুরের রোদে কোথায় যেন একটা ম্লান ছাপ এসে গেছে, সেই আলতো রোদের ছোঁয়ায় সব যেন সোনালি বর্ণের লাগে। আবার মায়ের থাকার জন্য সে যে ঘরের পর ঘর, এক এক ঘর এক এক সাজের। তিনি যে কোথায় যাবেন তা বুঝে কুল পান না, আর আমরাও তাকে দেখে তার পেছন পেছন ছোটার রাস্তা খুঁজি। মায়ের হাতে যেমন আমরা তৈরি, ঠিক তেমনি তার সন্তানের হাতেই তিনি সেজে উঠছেন। কখনো তার চক্ষুদান আবার কখনো গয়না, আবার সেই মায়াময়ী মায়ের হাতে অস্ত্র তুলে দিই আমরা আমাদের রক্ষার্থে…. বছরের এই পাঁচটা দিন খুব অল্প সময়ের হলেই বা কি? তা যে বাঙালির মনে ঠিক দাগ কেটে যায়। কিন্তু শেষের দিনটা? মা চলে যাবেন? আসবেন না আর? তা কেন… আসছে বছর যে আবার হবে।