দৃশ্য:-কৈলাস শিখরে নন্দীর সংগে আলোচনায় রত শিব , প্রকৃতির অপূর্ব শোভা বর্ধন হচ্ছে | এমন সময় দুর্গার প্রবেশ |
দূর্গা:–কি গো–কি হলো,শুনতে পারছো ?
শিব:–শুনছিতো , বলো কি বলতে চাও |
দূর্গা:–বলছি ,এবার বাপের বাড়ি যাবো কোন যানে চড়ে ?
শিব:–কেন ,ঘোটকে যাও
দূর্গা:–ঘোটক বলছে ,ওর পায়ে ব্যাথা ,যেতে পারবে না |
শিব:–তা হলে গজে যাও |
দূর্গা:–গজেও হবে না | গতবার গজে করে যাবার সময় পায়ে যে কুলের বিচিটা আটকে গিয়েছিলো সে জায়গাটায় আবার নাকি ওর ব্যাথা হচ্ছে |
শিব:–তা হলে নৌকায় যাও |
দূর্গা:-নৌকায়ও হবে না , পাল্কিতেও হবে না | নৌকা পরে থেকে থেকে ফুটো হয়ে গেছে | পালকিরও ছাদ ফুটো হয়ে গেছে | কবে থেকে বলছি বিশ্বকর্মাকে ডেকে নৌকোটা ,পাল্কিটা ঠিক করে নিতে ,শুনলে কথা | নন্দীভিড়িঙ্গিকে নিয়ে সারাদিন কেবল গাজায় দম দিয়ে বসে থাকো | কোন হুস আছে তোমার | এখন কি করে যাবো কে জানে |
শিব:-দাড়াও ব্যবস্থা করছি |
দূর্গা:–কি ব্যবস্থা করবে শুনি |
শিব:–মর্তে আমার এক ভক্ত আছে , তার একটা মস্ত বড়ো ওলা গাড়ির কারখানা আছে | ওকে বললেই একটা গাড়ি পাঠিয়ে দেবে |
দূর্গা:–যা করার তা তাড়াতাড়ি করো , আর কদিনই বা বাকি আছে |
শিব:–দেখছি –দেখছি –দেখছি |এত রেগে গেলে হবে |
দূর্গা:–না রাগবে না | একটা কথা যদি আমার শোন | শিব:–(ফোন হাতে নিয়ে)হ্যালো—-হ্যালো
লক্ষণ টাটা:–হ্যালো , আপ কোন বল রাহা ?
শিব:–আমি স্বর্গ থেকে মহেশ্বর বলছি |
লক্ষণ টাটা:–(বিস্মিত হয়ে) বলিয়ে –বলিয়ে প্রভুজি |
শিব:-কেমন আছো ?
লক্ষণ টাটা:–আপকা আশীর্বাদমে আচ্ছাই হায় |
শিব:-বলছি ,তোমাদের মা এবার বাপের বাড়ি যাবেন , কিন্তু—আমার এখানকার সব যান অচল ,তাই তোমাকে একটা ওলা পাঠাতে হবে |
লক্ষণ টাটা:–আজ এক হপ্তা হো গিয়া ,হামরা লিবার লোক বোনাসকে লিয়ে স্ট্রাইক চালু কর দিয়া | হাম লোক লিবার লোককো বোলা আভি হামারা কুছ প্রব্লেম হায় দিয়ালীমে বোনাস মিলেগা, লেকিন লিবার লোক বাত নেই মানতা | কোই কাম নেহিবি করতা | আভি ক্যায়া করেগা সোচ রাহা |
শিব:–এতো বিরাট সমস্যা দেখছি | এদিকে তোমার মা তোমার গাড়ির আশায় বসে আছে |
দূর্গা:–কি হয়েছে ?
শিব– বলছে গাড়ি আসবে না
দূর্গা:–(রেগে গিয়ে) কি ! আসবে না মানে ! তা হলে আমরা যাবো কি করে ?
শিব:–তোমরা বরংচ এক কাজ করো , আমার বাহন বৃষভে চড়ে এই বছরটায় যাও |
দূর্গা:–বৃষভে ! তুমি যেমন ধীরজ তোমার বৃষভও তেমন ধীরজ | ওর পিঠে করে গেলে এ বছর আর আমার বাপের বাড়ি যেতে হবে না | আগামী বছরে পৌঁছবো | বুঝতে পারলে | যতসব | এখন কি হবে কি জানি | এদিকে ছেলে মেয়েরাতো মামার বাড়ি কখন যাবো ,কখন যাবো করে আমাকে পাগল করে দিলো | জানি না ,যা হোক একটা ব্যবস্থা করে দাও |
শিব:– দাড়াও দেখছি কি করা যায় | কোনরকম বলে কয়ে ঘোড়াকেই রাজি করাতে হবে
দূর্গা:–যা করার এক্ষনি করো | (দুর্গার প্রস্থান , নারদের প্রবেশ)
নারদ:– নারায়ণ , নারায়ণ , নারায়ণ
শিব:–আরে ! দেবর্ষি যে۔۔ আমি মনে মনে আপনার কথাই চিন্তা করছিলাম |
দেবর্ষি:–হেতু ?
শিব:– বলছিলাম কি , দেবী দূর্গার এবার বাপের বাড়ি যাওয়া নিয়ে খুব সমস্যা হচ্ছে |
দেবর্ষি:– কেন ?কেন ?
শিব:–আমাদের সব যানগুলো প্রায় অকেজো | এক মাত্র ঘোটক একটু চলা ফেরা করতে পারে | তাও তেমন না |পায়ে ব্যাথা | এই মুহূর্তে —
দেবর্ষি:– এই ব্যাপার , আপনি কিচ্ছু ভাববেন না | আমি আপনাকে ঘোটকের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি |
শিব:– কেমন কেমন ?
দেবর্ষি:–ইন্দ্রের ঘোড়াশালে এখনো একশত ঘোড়া আছে | জগৎ জননীর প্রয়োজনের কথা বললে উনি ঘোড়া দিয়ে দেবেন |
শিব:– তাই ! ঠিক বলছেন ?
দেবর্ষি:– হে হে
শিব:–ঠিক আছে ,তা হলে বলে দেখুন |
দেবর্ষি:– দেখার দরকার নেই | আপনি নিশচিন্ত থাকুন |
শিব:– যাক আপনি চিন্তার হাত থেকে বাঁচালেন | যাই দেবী দুর্গসকে খবরটা দিয়ে আসি |