মনের সুপ্ত বেদনা ব্যক্ত করতে মাঝে মাঝে সাইবার কাফেতে গিয়ে আমার লেখা চিঠি স্ক্যান করে মেইল করতাম।কখনও কখনও তার মা ও বোনও চিঠি লিখেছে।সেই চিঠিও স্ক্যান করে মেইল করে পাঠিয়েছি এবং ছেলের মেইলের প্রিন্ট এনে ওর মা ও বোনকে দিয়েছি।এই ভাবেই চলছিল তখনকার দিনগুলি।কিন্ত ৯ই জুনের পর বেশ কয়েক দিন মেইলে যোগাযোগ করতে পারিনি।সামুদ্রিক ঝড় ঝাপটায় ইন্টারনেট পরিষেবার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।২৯ শে জুন চলন্তাবস্থায় কোথাও কোন প্লাটফর্মের টাওয়ার পেয়ে যাওয়ায় ফোনে যোগাযোগ হয়।তখনই আমাকে এই বিপর্যয়ের কথা জানায়।২ রা জুলাই ২০১১বোনের জন্মদিন।সারাটি দিন মনটা খারাপ লাগছিল।দোকানে ব্যস্ত থাকায় তার দেওয়া দুই দুইবার মিসড কল শুনতে পাইনি।রাত্রে যখন তা দেখতে পাই তখনই দোকান বন্ধ করে বাড়ি এসে ফোনে যোগাযোগ করি।বোনের সাথে কথা বলে হ্যাপি বার্থডে জানায়।তখন বলে বোনের জন্মদিনের শুভেচ্ছাটুকু জানাবার জন্যই বারবার মিসডকল দেয়। হয়তো এই দিনটার জন্যই দাদার মন উতলা হয়ে উঠে ছিল। এই সপ্তাহে শীপে কর্মরত দুইজন অসৎ কুচক্রী সহ কর্মীর অশালীন উগ্র আচরণে সে হয় ক্ষুব্ধ। সাথে সাথে ক্যাপ্টেনকে ঘটনাটি জানিয়ে দেয়।তিনি তাদের ওয়ার্নিং দেওয়া সত্ত্বেও দ্বিতীয় দিনে আবার এমন দুর্ব্যবহার করায় ছেলে সঙ্গে সঙ্গেই T.K UNNI কে ব্যাপারটি জানিয়ে কোম্পানির হেড অফিসে কমপ্লেইন করে।পরে ঘটনার সন্তোষজনক প্রতিকারের ব্যবস্থা না দেখতে পাওয়ায় ১২ ই জুলাই সাইন আপ করে চলে আসে মুম্বাই।সেখান থেকে ১৪ ই জুলাই সকাল ১১ টা ২৪ মিনিটে কলকাতা এয়ার পোর্টে এসে পৌঁছায় ।প্লেন বিলম্বে অবতরণ করায় আমি অ্যারাইভাল গেটে অপেক্ষায় থাকি।বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত প্যাসেঞ্জার আসতে দেখে মনে হতে লাগলো- এই বুঝি আসছে। বারবার আরাইভাল বোর্ড ফলো করছি আর অপেক্ষা করেই চলেছি। অবশেষে দূর থেকে দেখলাম সে হাত নেড়ে পৌঁছানো বার্তা দিচ্ছে।গেট পেরিয়ে আসতেই লাগেজ নিয়ে উঠে পড়লাম ট্যাক্সিতে।তখন সোজা বাড়ির দিকে– বেশ কিছুদিন বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে আনন্দে কাটাতে লাগলো।মনে মনে সিদ্ধান্ত নিল আর সমুদ্রের মাঝে জাহাজে চাকরি করবে না।সিদ্ধান্ত নিল হরিসাহা হাটে হোলসেল ব্যবসা করবে।বেশ কিছু টাকা ব্যয়ে জায়গা জোগাড় করা হলো।সারারাত জেগে দোকানদারি করা একার পক্ষে অত্যন্ত রিক্স হয়ে পড়ে।তাই আমাকে বাধ্য হয়ে সহযোগিতা করতে হতো।চলছিল মোটামুটি ভালোই।হঠাৎ ২৪ শে ডিসেম্বর ২০১১ সন্ধ্যায় সেরি- ব্রাল অ্যাটাকে ওর দাদু শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তারপর সে আমাকে নিয়ে বিচলিত হয়ে পড়ে। তখন ব্যবসায়ী জীবন থেকে আমাকে মুক্ত করতে চাইল কিন্তু ভাগ্যের লিখন কে খন্ডাতে পারে?সমুদ্রে চলমান দেশ-বিদেশের জাহাজে চিপ কুকের পোস্টে চাকরি করে এমন দোদুল্যমান ব্যবসায়ে অর্থাগম যথাযথ মনে হল না।তাই আবার নেটে যোগাযোগ করতে লাগলো।আবার যোগাযোগ করলো দুবাইয়ে CARLO স্যারের সাথে।ডাক এলো এবার সেখান থেকে।জয়েনিংয়ের জন্য যোগাযোগ করা হলো মুম্বাই AIRBORNE অফিসের NAVEEN KHOLEE এর সাথে।খবর এলো ৮ই আগস্ট জয়েনিং।উপায়ন্তর না দেখে ৭ই আগস্ট ২০১২ ভোর ৫টা ৫৫ মিনিটের ZET AIRWAYS এর ফ্লাইটে মুম্বাই রওনা হয়ে যায়। ৯ই আগস্ট দুবাই থেকে ফোন করে জানালো ভালো ভাবেই পৌঁছেছে এবং OCEAN SHELL SHIPPING PVT LTD এর M/S IRON BUTTERFLY বিশাল বড় শিপে জয়েনিং করেছে। ২৫শে আগস্ট ফোনে জানতে পারলাম সম্ভবত জাহাজ সোমালিয়া অতিক্রম করে সাউথ আফ্রিকায় যাবে।শুনেই মুহূর্তের মধ্যে নানান দুশ্চিন্তা দানা বাঁধতে লাগলো কারণ প্রায়ই কাগজ খুললেই দেখা যায় সোমালিয়ায় জলদস্যুদের উপদ্রব।আমায় বড় ভাবিয়ে তুললো। ২৭শে আগস্ট দুবাই থেকে একটা নতুন সিম নিয়ে তাতে লাইফ টাইম ইনকামিং ফ্যাসিলিটি নিল।দেশবিদেশে অবস্থান কালেও বিশেষ সুবিধার ব্যবস্থা থাকায় বাধ্য হয়ে এই সিম সংগ্রহ করে।১১ই সেপ্টেম্বর ২০১২ ভারতীয় সময় ৪টা ২৪ মিনিটে তাদের শীপ রওনা হয়ে গেল পাকিস্তানের উদ্দেশ্যে।করাচি হয়ে আবার দুবাই ফিরে আসবে।পাকিস্তানে যাবার সময় মাঝ সমুদ্রে জল দস্যুদের উপস্থিতি উপলব্ধি করে।সঙ্গে সঙ্গেই ক্যাপ্টেনের সতর্কতায় সকল ক্রিউদের মাস্তুলে পৌঁছে যাবার নির্দেশ দেন।সবাইকে সেখানে ঘোরাঘুরি করতে দেখে দূর থেকে জলদস্যুরা আর সামনে এগোতে সাহস পায়নি।শীপ সামনে এগিয়ে চলে সদা সতর্কতার সাথে।করাচি পোর্টে আনলোডিংয়ে সপ্তাহখানেক সময় লাগবে জানায়।পাকিস্তানের বিভিন্ন জায়গায় এই সময় সন্ত্রাসমূলক কার্যকলাপ বেড়ে যায়।অহরহ বিভিন্ন শহরে হতে থাকে বিস্ফোরণ।তাই প্রতিনিয়ত চিন্তাযুক্ত থাকতাম। তারমধ্যেই ২১শে সেপ্টেম্বর দুপুরে করাচি থেকে রওনা হয়ে মুম্বাই এসে পৌঁছায়। ২৮ সেপ্টেম্বর ভোর চারটে নাগাদ তাদের শীপ সাউথ আফ্রিকার জিবুতি পোর্টের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে যায়। যাবার আগে জাহাজের ক্রিউরা ওই দেশে যাওয়ায় অমত প্রকাশ করে।পরে কোম্পানির সাথে আলো- চনায় সিদ্ধান্ত হয়, ফুল সিকিউরিটি নিয়ে রওনা হবে। কিন্তু পরে দেখা গেল রূট পরিবর্তন করে ঘুরপথে যাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।যাতে মাঝ সমুদ্রে জল- দস্যুদের কবলে পড়তে না হয়। সেই মতো রওনা হয়েও তিন তিনবার তারা আক্রান্ত হয় কিন্তু নাবিকেরা সবাই সর্বদা সমবেত ভাবে সজাগ থেকে প্রহরা দিতে থাকে ফলে বারবার আক্রমণের চেষ্টা করলেও সফল হয় না। এই সময়ে রাতের অন্ধকারে ক্যাপ্টেন ব্যবহার করেন অত্যাধুনিক বাইনোকুলার যার মাধ্যমে রাতের অন্ধ- কারেও দূর থেকে পরিষ্কার দেখা যায়। ১১ই অক্টোবর ২০১২ AJMAL PORT এ পৌঁছে রাত ১২ঃ৫১ মিনিটে ফোন করে এই ঘটনার কথা জানায়।জিবুতি পৌঁছে ল্যান্ডে নেমে যখন আমায় ফোন করার জন্য টেলি- ফোন বুথ খুঁজতে বেরিয়েছে তখন পথের মাঝে ছিনতাই বাজদের কবলে পড়ে।তার কাছ থেকে ২০০ ডলার তারা ছিনতাই করে নেয়। তারাও ছাড়বার পাত্র নয়। তখন তাদের কাছে SEAMAN BOOK সহ IDENTITY CARD ছিল।সঙ্গে সঙ্গেই পৌঁছে গেল নিকটস্থ পুলিশ স্টেশনে।পুলিশ সমস্ত ঘটনা শুনে বাড়িয়ে দেয় সহযোগিতার হাত। তাদের সাথে নিয়ে জিপে উঠেই সঙ্গে সঙ্গে ছুটলো ওদের খোঁজে। একটু এগিয়ে যেতেই তাদের দেখতে পেয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো জীপ। তাদের পালিয়ে যাবার চেষ্টা ব্যর্থ হল। পুলিশ দ্রুততার সাথে তুলে আনল তাদের।উদ্ধার হল অর্ধেক ডলার।বাকিটা ইতিমধ্যেই বেহাত হয়ে গেছে। ততক্ষণে ধৃত অভিযুক্তদের দেখে তাদের প্রচন্ড মায়া হল। জীর্ণ শীর্ণ খেতে না পাওয়া অভুক্তাবস্থায় দেখে তাদের তরফ থেকে উদ্ধার তো দূরের কথা মনে হল উল্টে তাদের আরো কিছু সাহায্য করতে পারলে মানসিক- ভাবে একটু শান্তি পেত কিন্তু পুলিশের সহযোগিতায় বেরিয়ে এমন সহানুভূতি বিদেশের মাটিতে দেখাতে সাহস পেল না।পুলিশ পরদিন তাদের আবার আসতে বলে। যাতে বাকি ডলার উদ্ধার করা যায় কিন্তু বড্ড অভাবী এই আফ্রিকাবাসীর অভুক্ততার নিদারুণ অবস্থার কথা ভেবে তারা পরদিন আর বাকি ডলার উদ্ধারের জন্য যায় না এবং সেই দিনই জিবুতি থেকে শীপ দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে যায়।১০ই নভেম্বর তারা দুবাই এসে পৌঁছালো। মিসডকল পেয়ে সাথে সাথে রিংব্যাক করে কথা বলে জানতে পারলাম তাদের দুঃসাহসিক অভিজ্ঞতার কথা।২১শে অক্টোবর ২০১২ রাত১২টা ৫২ মিনিটে তার একটা SMS পাই- “বাবা! আমরা প্রাণে বেঁচে গেছি—” সেই থেকে প্রতিটি মুহূর্ত ছিলাম প্রচন্ড দুশ্চিন্তায়।কারণ ১লা নভেম্বর ২০১২ তাদের জাহাজ রওনা হয়ে যাবার পর ফোনে কোনরকম যোগাযোগ করতে পারিনি। শুধু গুগলে সার্চ করে তাদের শীপের অবস্থান দেখে বুঝে নিতাম তারা কোন্ দেশের কোথায় অবস্থান করছে।পরে দুবাই এলে জানতে পারি মাঝ সমুদ্র দিয়ে চলার সময় কোন প্লাটফর্মের কাছ দিয়ে যাবার সময় মিসডকল দিলে রিংটোন শুনতে পেতাম কিন্তু কল রিসিভ করতে পারতো না। মোবাইলে স্বল্প ব্যালেন্সে কল রিসিভ করলেই বিদেশের রোমিং বাবদ তা কেটে যেত।ফলে পরবর্তীতে মিসড কল দিয়ে কোথাও উপস্থিতির সংকেতটুকুও পাওয়া থেকে বঞ্চিত হতাম। এই ভয়ে আমরা উভয়েই শুধু মিসড কল দিয়ে সন্তুষ্ট থাকতাম। প্রতিটি দিন এক অব্যক্ত ব্যথা বুকে নিয়ে কাটিয়েছি। ঐ সমস্ত দিনগুলির সেই অভিজ্ঞতা আজও তার স্মৃতি পটে জমা হয়ে আছে। বন্ধুদের সাথে দীর্ঘদিন কোন যোগাযোগ না থাকায় দুবাই আসার পর ১১ই নভেম্বর ২০১২ রাত্রে আমার সাথে কথা হয়। তখন এই নূতন ফোন নম্বরটা ওদের জানিয়ে দিতে বলে।জানি বন্ধুদের জন্য এতদিনে হয়তো মনটা ছটফট করারই কথা কারণ ছেলেবেলা থেকে তারা একত্রে বড় হয়েছে। স্কুল থেকে কলেজ- একসাথে পড়াশোনা।সেই বন্ধুত্ব অটুট রাখতে ছেলে সব সময় অগ্রণী ভূমিকা নিত।এ ব্যাপারে ওর স্যাক্রিফাইস ওর বন্ধুদের জীবনে কিছু কিছু স্মরণীয় হয়ে আছে কিন্তু সে বিদেশে চলে গিয়ে জানে না যে সেই বন্ধুত্বের বন্ধনে এসেছে পরিবর্তনের ছোঁয়া।আমি যখন পিতৃত্বের যন্ত্রণায় প্রতিনিয়ত ছটফট করেছি, চোখের বারিতে উপলব্ধি করেছি সকলের স্বার্থান্বেষী দৃষ্টিভঙ্গি।সেই ব্যথা তখন আমার নিজের তাই আমাকেই নিরবে সহ্য করতে হয়েছে পিতৃত্বের এই বুকফাটা যন্ত্রণা। যখন দুবাই এসে পৌঁছালো তখন বন্ধুদের পরিবর্তিত পরিস্থিতি সম্পর্কে জেনেও তার মোবাইলের নতুন নম্বরটি জানিয়ে দিতে বলে। যে বন্ধুত্বের গভীরতা উপলব্ধি করে ২৭শে জুলাই ২০০৪ সালে একদিন লিখেছিলাম “বন্ধন” গল্পটি।আজও সে কথা আমি ভুলিনি। তখন পত্রিকা অফিস থেকে অতিরিক্ত ৩০ কপি সংগ্রহ করে বন্ধুদের চাহিদা মেটাতে হয়েছিল।প্রত্যেক বন্ধু-বান্ধবীর ঘরে ঘরে পৌঁছে গিয়েছিল সেই বন্ধুত্বের “বন্ধন” কিন্তু সেই আন্তরিকতার বন্ধন যে আজ কতটা আলগা হয়ে গেছে সে দূরে থেকে এমনটা হয়তো উপলব্ধি করতেও পারছে না!তাই তার মনের ব্যথা না বাড়িয়ে সেই নম্বরটা প্রথমে জানালাম পিন্টুকে।স্বেচ্ছায় হোক আর অনিচ্ছায় হোক সে ফোন একটু করলো স্বল্প সময়ের জন্য এবং তার মাধ্যমে নম্বরটা পেল বাপ্পা। আগ্রহের সাথেই বাপ্পা ফোন করলো।তার মনে আছে সুপ্ত ব্যথা যা ছেলের সাথে একান্তে শেয়ার করতো।তাদের সাথে ক্ষণিকের যোগাযোগে জানায় পর দিনই তাদের জাহাজ শারজা হয়ে ইরাক রওনা হবে। IRON BUTTERFLY এক বিশাল বহুতল বিশিষ্ট শীপ। জলের তলে অবস্থান করছে তার অনেক তলা।লৌহজাত দ্রব্যাদি এক দেশ থেকে পরিবহন করা হতো অন্য দেশে। কখনও তাতে করে গিয়েছে বড় বড় রোড রোলার।কখনও বড় বড় ট্রাক।কখনও এক বন্দর থেকে মাল বোঝাই করে গিয়েছে অন্য বন্দরে।সেখান থেকে অতিরিক্ত মাল বোঝাই হয়েছে। কখনো হেলে পড়েছে একদিকে।দ্রুত ডাক পড়েছে ইঞ্জিনিয়ারদের। চেকিং চলেছে।কখনও বা ধরা পড়েনি বিপত্তির উৎস। অবশেষে বুঝতে পারল জাহাজের নিচে ছিদ্র দিয়ে খুব মন্থরগতিতে জল চুইয়ে এই বিপত্তি। সঙ্গে সঙ্গেই মাল নামিয়ে মেরামত। তারপর আবার যাত্রা শুরু।এমনি করে কেটেছে দেশ-বিদেশের সমুদ্রের মাঝে।এসব কথা শুনে মনে ব্যথা পাব তাই এ ধরনের কোন কথা আমাদের কাছে মন খুলে প্রকাশ করত না। বিভিন্ন দেশে থাকাকালীন মোবাইলে যখন যতটুকু কথা হয়েছে তা আমি ডাইরিতে লিপিবদ্ধ করে রাখতাম। সেইসব ডায়েরির পৃষ্ঠা থেকে সংগ্রহ করে, আর বন্ধুদের কাছে ব্যক্ত করা অভিজ্ঞতা শুনে তাও বিভিন্ন সময়ে লিপিবদ্ধ করতাম ডাইরিতে।আজ সেই সব স্মৃতি একত্রে মিশিয়ে ব্যক্ত হয়েছে আমার ভাষায়- “সমুদ্রের সেই দিনগুলি” সমুদ্রে প্রথম যাবার সময় তাকে বারবার একটা অনু- রোধ করেছিলাম দেশ-বিদেশে যখন যেখানেই থাকুক না কেন যখন যেখানে যে অবস্থার সম্মুখীন হবে তখন সেই স্মরণীয় ঘটনা সংক্ষেপে ডায়েরির পাতায় লিপি- বদ্ধ করে রাখবে।সুযোগ মতো যদি আমি সমর্থ হই তবে তার মনের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিলিপি গ্রন্থা- কারে প্রকাশ করব।কথাও রেখেছিল।প্রথম ছয় মাস পর যখন বাড়ি এলো তখন দেখলাম ওর ডাইরির পাতায় স্থান পেয়েছে সুখ দুঃখের স্মরণীয় স্মৃতি!সেই পঁচিশ পৃষ্ঠা আমি জেরক্স করে ডায়েরিটা রেখে দিলাম যথাস্থানে।তাকে বুঝতে দিলাম না।পড়ে বুঝলাম তার সুপ্ত বেদনার অভিব্যক্তি ঘটছে তার সেই লেখাতে। আমি হলাম অত্যন্ত খুশি। ভাবলাম এই লেখার উপর ভিত্তি করেই আমি আমার সুযোগ মতো এ বিষয়ে একটা বই লিখব। ১২ ই নভেম্বর ২০১২ আমাদের ক্লাব “কিশোর মিলন” এর শ্যামা পূজা উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হল। ফাংশানের স্টেজ তৈরি হল আমাদের বাড়ির গেটের সামনেই।নৃত্যানুষ্ঠানের কলাকুশলীদের আমাদের ঘরে এবং বাড়ির ছাদে ড্রেসিং ও মেকাপের জন্য অনুরোধ জানালে সানন্দে তাদের সেই ব্যবস্থা করে দিই।
ধারাবাহিক নিবন্ধ “সামুদ্রের সেই দিনগুলি” প্রচার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। “সবুজ স্বপ্ন” ওয়েব ম্যাগাজিনের উত্তরোত্তর শ্রীবৃদ্ধি কামনা করি
অসংখ্য ধন্যবাদ 🙏🙏🙏