মুহূর্তের মধ্যেই ভেসেল ও শীপগুলি প্ল্যাটফর্মের চারিদিকে ঘিরে ফেলল।আসলে ওরা আগুন দেখে তাদের সাহায্য করবার জন্য ছুটে এসেছিল।ওদের দেখে অনেকের মনে একটু সাহস জেগে উঠলো।ঠিক এমন সময় আবার বুম করে একটা বিশাল আওয়াজ করে আবার একটা পাইপ ব্লাস্ট করলো।পজিশন আরও মারাত্মক রূপ নিল।সঙ্গে সঙ্গেই প্ল্যাটফর্মের সমস্ত পাওয়ার লাইন ডিসকানেক্ট হয়ে গেল।তখন ওরা সবাই ভীত ও সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে।ছেলে বলতে শুরু করল- “হে ভগবান! আমাদের বাঁচাও আমাদের উদ্ধার কর–” চারিদিকে অন্ধকার। শুধু আকাশের দিকে তাকালে দেখা যাচ্ছে লেলিহান আগুনের শিখা। সে এক বীভৎস বিরূপ দৃশ্য! সঙ্গে সঙ্গেই নিচের থেকে সমস্ত সাপ্লাই ভেসেল, ছোট বড় সমস্ত শীপ তাদের লাইটের ফোকাস প্ল্যাটফর্মের দিকে ফেলতে লাগলো, যাতে তারা আলোতে দেখতে পায়।তখন ওরা বারে- বারে নিচে জলের দিকে লাইট মেরে চেক করে নিচ্ছে যে কেউ আবার জলে ঝাঁপ দিল কিনা!বা কেউ জলে পড়ে গেছে কিনা! তখন সব ভেসেল ও শীপগুলি ওদের সাথে খুব সহযোগিতা করেছিল।সময়ের বিব- র্তনে তারা সবাই কে কোথায় নিজ বাসভূমিতে চলে গেছে, কেউবা এ দেশ থেকে গিয়েছে বিদেশে কিন্তু স্মৃতি মন্থনে সেই দিনের স্মরণীয় সহযোগিতার কথা জীবনে কেউ কোনদিনও ভুলতে পারবেনা। তাদের সেদিনের সেই সহযোগিতা, যুগিয়েছিল প্ল্যাটফর্মের সেফটি অপারেশন টিমের মনের বল। ওরা তখন আগুন নিভানোর জন্য লকার শ্যুট পরে আগুনের দিকে এগিয়ে গেল। তখন আগুন যেভাবে ছড়িয়ে পড়েছে তা কন্ট্রোলের বাইরে চলে যেতে লাগলো।যেকোনো সময় আরও ব্লাস্ট করে প্ল্যাটফর্মের সমস্ত ক্রিউর প্রাণহানি হতে পারতো।এমতাবস্থায় ক্রুদের বের করে আনতে হলে তা করতে হবে একমাত্র ক্রেনের সাহায্যে কিন্তু ক্রেনে বসে ক্রেন অপারেট করা প্রচন্ড রিক্স হয়ে গেল কারণ ক্রেন অপারেটটা ছিল পেছনের দিকে ঠিক যে দিকটায় আগুনটা লেগেছে।জায়গাটা খুব রিস্কের ছিল তাই ভয়ে কেউ ক্রেন অপারেট করতে সাহস পাচ্ছিল না। আগুন বেড়েই চলেছে। হঠাৎ এক অপারেটর সাহস করে ক্রেনের দিকে এগিয়ে গেল কিন্তু প্ল্যাটফর্মের পাওয়ার তো তখন ডিসকানেক্ট করা রয়েছে।তাই ক্রেন চলবে কি করে? তখন হঠাৎ কিছুক্ষণের জন্য ইমার্জেন্সি ইলেকট্রিক লাইন সংযোগ করে খুব তাড়াতাড়ি সবাইকে তুলে বোটে নামানো হলো এবং সাথে সাথেই আবার পাওয়ার ডিসকানেক্ট করে দেওয়া হল। তখন রাত ১২টা ৪৫ মিনিট।বৃষ্টি তখনও অবিরাম হয়ে চলেছে। প্ল্যাটফর্মের সমস্ত অফিসারের হাতে একটা করে টর্চ আর একটা হুইসেল বাঁশি।এতক্ষণে সকলের আপ্রাণ চেষ্টায় আগুন কিছুটা আয়ত্তের দিকে আসতে লাগলো।তবুও তখন ডেঞ্জার পিরিয়ড কাটেনি। সময় বাড়তে লাগলো।প্রচন্ড ঠান্ডায় তখন সবাই কাঁপছে। সময় গড়াতেই লাগলো।কিছুক্ষণ পরে আগুন নিভতে শুরু করলো তবুও জ্বলছে তবে অনেকটা কম।আগুন আয়ত্বে আসলে লাউড স্পিকারে অ্যানাউন্স হল- “আমরা বিপদ মুক্ত তবে সকলে সতর্ক থাকুন-” সঙ্গে সঙ্গেই প্লাটফর্মে লাইট জ্বলে উঠলো।সবার বুকে এলো জল-একটু স্বস্তি! রাত ১টা ৩৫। সেফটি অফিসার সবাইকে সিনেমা হলে যেতে বললেন। হলটি ছিল অনেক বড়।সেখানে একত্রে বহু লোক বসতে পারে।ক্যাম্পবস অর্ডার দিলেন ড্রাই টাওয়েল আনতে।ক্যাটারিং স্টাফ ছুটে গেল গ্যালিতে।তখন তাড়াতাড়ি কেউ পাওয়ার লাইন কানেক্ট করছে, কেউ হট প্লেট অন করছে,কেউবা ওভেন চালু করছে, কেউ চায়ের জন্য দুধ আনতে ছুটছে- কাউকে কিছু বলতে হচ্ছে না।সবাই পরিস্থিতি বুঝে নিজে নিজে কাজে লেগে গেল।স্টুয়ার্ড আর রুম বয় কিছুক্ষণের মধ্যেই ড্রাই টাওয়েল সবাইকে দিয়ে গেল।কিছুক্ষণ পর যারা গরম দুধ খাবে তাদের জন্য দুধ,যারা চা খাবে তাদের জন্য চা এনে মেস বয় দিয়ে গেল।সবাইকে বলা হলো এখন কেউ কোথাও যাবে না,গেলে সেখানে জানিয়ে যাবে কারণ তখনও সম্পূর্ণ বিপদমুক্ত নয়। সবাইকে লাইক জ্যাকেট সঙ্গে রাখতে বলা হলো। তখন রাত ২টো ৫০। অ্যানাউন্স হলো এখন আমরা কিছুটা বিপদমুক্ত। তোমরা যে যার মত রেস্টে যেতে পারো তবে সবাই কেবিনের ডোর খোলা রাখবে যাতে ইমারজেন্সি হলে চট করে বাইরে আসতে পারে। আর বেডের পাশে যেন লাইফ জ্যাকেট থাকে। সবাই তখন যে যার মত রেস্টে গেল।ছেলে তখন একটু গরম জলে স্নান করে ফ্রেশ হয়ে নিল। সে তখন একদম ক্লান্ত- অবসন্ন।চোখ যেন বুঝে আসছে। চলে গেল কেবিনে শুতে। সে সময় কি আর ঘুম আসে?শুধু চোখের সামনে ওই ভয়ংকর দৃশ্য গুলি বারবার ভেসে উঠছে।প্রচন্ড মাথা যন্ত্রণা করছে। সহ্য করতে না পেরে সোজা চলে গেল গ্যালিতে।কড়া করে এক কাপ চা খেয়ে নিলো কিন্তু কোথায় পরিবর্তন? কিছুক্ষণের মধ্যেই ক্যাম্পবস খবর দিলেন BG কোম্পানির উচ্চ-পদস্থ অফিসারেরা আসছেন সার্ভের জন্য। কিছু স্পেশাল ফুড তৈরি করার জন্য অনুরোধ করলেন। তখনও মাথা যন্ত্রণা কমেনি।কিছুই ভালো লাগছে না তবুও কর্তব্যের খাতিরে করতে হবে– কিছুক্ষণ পর দুটো হেলিকপ্টার প্লাটফর্মের হেলিপ্যাডে এসে পৌঁছালো।তাতে করে আসলেন ১৫ জন অফিসার।তার মধ্যে দুইজন ম্যাডাম। প্ল্যাটফর্মে নেমেই প্রথমে সোজা চলে গেলেন সুপারিনটেনডেন্টের কাছে।সবকিছু বিস্তারিত জেনে নিয়ে ডায়রিতে নোট করতে লাগলেন।সবকিছু খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে জিজ্ঞাসা করে গেলেন বার্নিং স্পটে।পোড়া জায়গার ছবি তুলে নিলেন।চলতে থাকল তাদের মিটিং।গ্যালি থেকে স্পেশাল চা, কফি, আর কিছু স্নাক্স দিয়ে ডেকোরেশন করে পাঠিয়ে দেওয়া হল।তাঁদের মিটিং শেষ হলেই আনা হলো মেস রুমে।তখন তাঁদের জন্য স্পেশাল খাবারও সুন্দর করে ডেকোরেশন করে পাঠানো হলো। তারা সবাই সুন্দর সার্ভিস ও খাবারের জন্য তারিফ করলেন এবং যাবার সময় সুপারিনটেনডেন্টকে ডেকে সবার সামনে একটা কথাই বললেন প্লাটফর্মের এবং অন্যান্য কোন জিনিসের ক্ষতি যা হয় হোক কিন্তু কোন ক্রিউর বা স্টাফের যেন কোনো রকম ক্ষতি না হয়। তারা যেন সুরক্ষিত থাকে”এই কমেন্টমেন্টকে সবাই হাততালি দিয়ে অভিনন্দন জানালো।তখন প্রত্যেকের মুখে একটা কথাই ধ্বনিত হল- থ্যাংক ইউ স্যার। সকলের শুভেচ্ছা কামনা করে অফিসারেরা হেলি- প্যাডে পৌঁছালেন।হেলিকপ্টার উড়ে গেল আকাশে।তখন সকলের নজর সেই আকাশের দিকে।তাঁরা চলে গেলে শুরু হলো আবার কাজ। প্রতিদিনের সেই রুটিন মত।তার মাঝেও একদিন আবার লাগল আগুন ঠিক একই জায়গায়।তখন তাদের সেই একই অবস্থা।তবে এবার সময়টা ছিল দিনের বেলা।এদিন আগুন আয়ত্তে আনতে বেশিক্ষণ সময় লাগেনি।এরপরেও ৪-৫ দিন আগুন লাগে। প্রতিদিন এইভাবে সমস্যা জর্জরিত হয়ে লাইফের রিক্স নিয়ে কাজ করতে আর মন চাইছিল না। সব সময় এক আতঙ্কের মধ্যে বুক ধড়ফড় করতো। কখন জানি কি হয়ে যায়! এই প্রফেশনে এসে অনেক সময় অনেক কষ্টের কথা বাড়িতে না জানিয়ে গোপন করে গেছে শুধু আমরা কষ্ট পাব ভেবে,কিন্তু এই ঘটনার পর আগে পিছে অনেক ভেবে চিঠি লিখল বাড়িতে। ওদিকে নেট পরিষেবা সাময়িকভাবে ৩-৪ দিনের জন্য বন্ধ ছিল।চালু হলেই SMS পেলাম একটু অসুবিধায় আছি।ওর বন্ধু পিন্টুকেও মেইল করলো- “একটু অসুবিধায় আছি, বাবার কাছ থেকে জেনে নিস। চিঠি লিখেছি-” কিন্তু ও আমাকে ফোন করে জানতে চাইল তার কি কোন প্রব্লেম হচ্ছে কিনা! আমি চলে গেলাম তাদের বাড়ি।আলোচনা করলাম কিন্তু কিছুই বুঝতে পারলাম না।টেনশন গেল আরও বেড়ে। ঠিক তারপর দিন ডাকযোগে পেলাম তার লেখা চিঠি। তাতে এই অ্যাক্সিডেন্টের কথা বিস্তারিত লিখেছে। আমি চিঠি পড়ছি আর ওর মা ও বোন পাশে বসা। সঙ্গে ওর দিদাও।তিনি সেই দিনই সকালে দত্তপুকুর থেকে এসেছেন।চিঠি সবটা পড়তে পারলাম না। কণ্ঠ ধরে গেল,চোখের জলে ঝাপসা হলো দৃষ্টি!হাত থেকে চিঠিখানা নিয়ে নিল ওর বোন।সেও ভালমতো পড়তে পারছে না।কান্নায় সবাই তখন আমরা বাকরুদ্ধ হয়ে গেছি। এই সময়ে আমাদের সকলের মন থাকতো সর্বদাই চিন্তাযুক্ত।প্রতিদিন সে আমার মোবাইলে SMS পাঠাতো।প্রত্যুত্তরে আমিও পাঠাতাম কিন্তু তা ছিল অত্যন্ত স্বল্প কথায়।আমি একটা রিপ্লাই দিলে সে পাঠাতে পারতো দুটো। তাদের এটা ছিল ফ্রি অফ কস্টে।স্বল্প কথায় SMS করে সব কিছু ব্যক্ত করতে পারতাম না বলে সাইবার কাফেতে গিয়ে মেইল করে বিস্তারিত জানাতাম এবং সেও আমায় মেইল করে তার জমা কথা পাঠিয়ে দিত।আমি প্রিন্ট বের করে বাড়িতে ওর মা ও বোনকে দিতাম।এইভাবে এক বুক ভরা ব্যথা নিয়ে কাটিয়ে দিচ্ছিলাম দিনগুলি।এই সময় আমার মনের সুপ্ত ব্যাথার বহিঃপ্রকাশ ঘটে আমার লেখা কবিতায়।সেই কবিতাটি প্রকাশিত হয় সুভাষ- নগর থেকে সুভাষ ধর সম্পাদিত “জোনাকি” পত্রিকায়। সেই লেখা পড়ে অনেক পাঠক আমার ব্যথায় ব্যথিত হয়ে সমবেদনা জানিয়েছেন।কেউ কেউ আমায় ফোন করে বলেছিলেন-একেই বলে পিতৃত্বের যন্ত্রনা! আমাকে অনেকেই অনুরোধ করেছেন এমন আরও লেখার জন্য। সেই দিনের সেই কবিতাটি– “খোকা আমার” খোকা আমার চাকরি পেয়ে গেছে অনেক দূরে সমুদ্রেতে জাহাজ চড়ে বেড়ায় ঘুরে ঘুরে খোকা ঘোরে আমরা কাঁদি- চিন্তা করি কত কালবৈশাখীর কালো মেঘ,চোখে পড়ে যত মাঝ সমুদ্রে চলছে তারা,উঠছে কত ঢেউ আমার বুকে উঠছে তুফান,দ্যাখেনি তো কেউ চাকরি পেয়ে করছে খোকা,এক মনেতে কাজ সফলতার স্বপ্ন ভেবে,নেই তো এখন সাজ পারছেনা তো বলতে কথা,বাড়ির সাথে ফোনে টাওয়ার ছেড়ে গেছে দূরে-কোন সমুদ্রের কোণে আসবে কবে একটা চিঠি,পথের পানে চেয়ে একটা করে যায় কেটে দিন,অশ্রু পড়ে বেয়ে–!!
৯ জুলাই ২০০৭।বম্বে হাইয়ের কাছে”সিকাল লজি- স্টিকস্”বেসরকারি সংস্থার “সামুদ্রিকা ১০” নামে ভেসেলটি ১৭ জন নাবিককে নিয়ে সমুদ্রে ডুবে যায়। এই সময়ে সমুদ্র থাকে প্রচণ্ড উত্তাল। তার রুদ্রমূর্তি সে দেখেছে স্বচক্ষে। এসব তার জীবনের এক স্মরণীয় স্মৃতি। এই সময়ে আমরা প্রচন্ড বিচলিত হয়ে পড়ি। তখন আমাদের একটাই ছিল প্রার্থনা- সে যেখানে যে অবস্থায় থাকে না কেন,যেন ভালো থাকে—–! অবশেষে এলো সাইন অফের দিন।সেদিন ১৬ই জুলাই ২০০৭।বিকাল চারটার সময় প্ল্যাটফর্মে পৌঁছে গেল হেলিকপ্টার। তখন তার মন বলছে-কতক্ষণে সেখান থেকে আসবে ল্যান্ডে।যেন সেখান থেকে আসতে পার- লেই বাঁচে। কিছুক্ষণ পরেই সে এসে পৌঁছালো ভিলে পারলে হেলিপ্যাডে।ল্যান্ডে নেমেই ট্যাক্সি ধরে সোজা রুমে।সাথে সাথেই আমাকে পৌঁছানো খবর জানিয়ে পেল এক পরম স্বস্তি!আমরাও হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। পরদিন সকাল দশটায় গেল RKHS এর অফিসে।অফিসে পৌঁছানো মাত্রই সবাই তার কাছে জানতে চাইলো সেদিনের ঘটনার বিবরণ।তারা আগে শুনলেও প্রত্যক্ষদর্শীর কাছে ভালো করে জেনে নিতে চাইল।সে যখন বলছে অন্যান্যরা যেন মন্ত্রমুগ্ধের মত শুনে চলেছে।সেদিন অফিসে মিঃ পারেখ ছিলেন না। তিনি এক মাসের ছুটিতে আছেন। অফিসে গিয়ে স্যালারি সংগ্রহ করতে গিয়ে মিঃ পারেখের দেওয়া প্রতিশ্রুতি মতো অর্থ পেল না।তখন অফিসে যিনি দায়িত্বে ছিলেন তিনি বললেন-বর্ধিত স্কেল আগামী মাস থেকে চালু হবে।তাতে সে হলো মনক্ষুণ্ণ!কৌশল করে প্ল্যাট- ফর্মে অ্যাক্সিডেন্টের প্রসঙ্গ তুলে সে সাময়িক স্বস্তি পাবার নামে বাড়ি আসার ইচ্ছা প্রকাশ করে।কিন্তু তার কাজের পারফরম্যান্স ভালো থাকায় আপাততঃ ছুটি দিতে চাইছিলেন না।কিন্তু তখন তার মন ভেঙে গেছে।অবশেষে স্যার তার কথায় রাজি হলেন এবং অল্প দিনের মধ্যেই বাড়ি থেকে ঘুরে আবার মুম্বাই যাওয়ার কথা বলে দিলেন। তখন তার C.D.C ছিলনা।প্রথমে CDC সম্পর্কে কোন ধারণাই তার ছিল না কিন্তু সমুদ্রে কাজ করতে গিয়ে সকলের কাছ থেকে যখন সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারলো তখন কোম্পানি থেকে পাসপোর্ট সহ সমস্ত ডকুমেন্টস রিটার্ন নিয়ে আসে,যাতে বাড়িতে এসেই CDCএর জন্য অ্যাপ্লাই করতে পারে।এ কথা শুনে স্যার সন্তুষ্ট হয়ে তাকে তার সমস্ত ডকুমেন্টস দিয়ে দিলেন।সেখান থেকে রুমে ফিরে অন্যান্য দের সাথে অন্যত্র কাজের জন্য কথা বলতে থাকে। তখন মুম্বাই প্রায় দুই মাস কাটিয়ে বিভিন্ন সংস্থার সাথে যোগাযোগ করতে থাকে।এই সময়ে বাড়ি থেকে আমাদের বারবার ফোন পেতে থাকায় বাড়ি আসার জন্য কাটলো ট্রেনের টিকিট। ২১ শে সেপ্টেম্বর ২০০৭।গীতাঞ্জলি এক্সপ্রেসে দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে হাওড়ায় ১৭ নম্বর প্লাটফর্মে এসে পৌঁছালো।এবার আমি ওর বন্ধু পিন্টুকে নিয়ে যথাসময়ে পৌঁছে গেলাম স্টেশনে।ট্রেন থেকে নেমেই আমায় করল প্রণাম আর বন্ধুকে পেয়ে ধরলো জড়িয়ে। সেখান থেকে সোজা বাড়ি।লাগেজ রেখেই ব্যস্ত হয়ে উঠল তাদের সাথে যাবার জন্য। ততক্ষণে ফোনে ফোনে হয়ে গেছে সবার সাথে যোগাযোগ।বাপ্পা,গনো ওরা চলে এসেছে আমাদের বাড়িতে।দেরি যেন সইছে না।ওরা বন্ধুকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লো——-