(কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার শুরুহল আম্বেদক উৎসব: পুরস্কৃত আম্বেদকর বিশেষজ্ঞ নীতীশ বিশ্বাস।
গত ৫ই ডিসেম্বর ২০২২, একযুগ পরে আবার শুরু হল *কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালে আম্বেদকর উৎসব*ও সেই উপলক্ষে আম্বেদর সেমিনার ও আম্বেদকরের নামে গুণীজন সংবর্ধনা তথা আম্বেদকর পুরস্কার প্রদানের মহতি অনুষ্ঠান*। এ দিন বেলা আড়াইটায় অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক আশিসকুমার চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন নবায়িত সিনেট হলে এটাই প্রথম প্রকাশ্য অনুষ্ঠান। আম্বেদকরের অবদানের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে আম্বেদ কর চর্চার গুরুত্ব তুলে ধরেন। সকলকে স্বাগত জানিয়ে ভাষণ দেন রেজিস্ট্রার ড.দেবাশিস দাস ।
এর পর উপাচার্য সমাজ ভাষা গবেষক ও আম্বেদকর বিশেষজ্ঞ, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন জয়েণ্ট রেজিস্ট্রার নীতীশ বিশ্বাস , সাহিত্যিক কল্যাণী ঠাকুর ও সমাজ সেবী মেঘনাদ হালদার কে পুরষ্কার জ্ঞাপক মানপত্র ও অন্যান্য উপহার দিয়ে সংবর্ধনা জানান।সম্মাননা পত্র পাঠ করেন অন্যতম আহবায়ক অধ্যাপক সনৎকুমার নস্কর । তিনি তার উপস্থাপন বক্তব্যে বলেন “আপনার বিচিত্রমুখী কর্মোদ্যোগ ও নিরন্তর সৃষ্টিযাপন আমাদের বিস্মিত ও উদ্বুদ্ধ করে। …..যে অদম্য সাহসিকতা, কর্মনিষ্ঠা, অধ্যবসায় ও সাংগঠনিক দক্ষতা আপনি দেখিয়েছেন তা এককথায় অনন্য। আপনার কর্মক্ষেত্রের পরিসর ছড়িয়ে আছে মাতৃভাষার অধিকার রক্ষার আন্দোলনে, সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে, আম্বেদকর চর্চায়, দলিত সাহিত্যের নিবিড় পাঠানুশীলনে। অন্যায় ও অসাম্যের বিরুদ্ধে আপনার দৃঢ় প্রতিবাদ আমাদেরকে মুগ্ধ করে। সাহিত্য-সংস্কৃতির জগতে আপনার সম্পাদিত ‘ঐকতান গবেষণাপত্র’ এক তীক্ষ্ণ হাতিয়ার স্বরূপ, যা বাংলা আকাদেমির লিটল ম্যাগ পুরস্কারে সম্মানিত। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত অবস্থায় আপনি যেসব গুরু দায়িত্ব নিজ স্কন্ধে বহন করে গেছেন তার জন্য কর্তৃপক্ষ আপনাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছে। আপনার সুচারু পরিচালনায় এ প্রতিষ্ঠানে ক্রিয়াশীল ছিল মাতৃভাষা সমিতি, আম্বেদকর মিশন, দলিত-(সংখ্যালঘু) ছাত্রছাত্রীদের জন্য ফ্রি কোচিং, এসসি-এসটি সেল এবং আরও অনেক কিছু। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে আপনি হয়েছেন দলিত সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক, পশ্চিমবঙ্গ ন্যায় মঞ্চের রাজ্য কমিটির সহ-সভাপতি। আপনার লেখনী চির সৃষ্টিমুখর। অনেকগুলি মৌলিক ও সম্পাদিত গ্রন্থের জনক আপনি। সারাজীবনের সারস্বত ও সাংগঠনিক পুরস্কার স্বরূপ পেয়েছেন একাধিক পুরস্কার। সেগুলি আপনার গুণের স্বীকৃতি, আপনার চরিত্রের অলংকার। আজ আপনাকে আম্বেদকর পুরস্কারে সংবর্ধিত করতে পেরে আমরা আনন্দিত। আপনার কর্মশীল জীবন আরো সতেজ, প্রাণবন্ত ও সৃষ্টিমুখর হয়ে উঠুক এই আমাদের প্রার্থনা।” এক্ষেত্রে
এদিনের সেমিনারের বক্তাদের মধ্যে ছিলেন অধ্যাপক বঙ্কিমচন্দ্র মন্ডল, সুব্রত বাগচি, অনিল সরকারও সাহিত্যিক মনোহর মৌলি বিশ্বাস।
আমাদের প্রতিনিধিকে আম্বেদকর পুরস্কার প্রাপক প্রবীণ আম্বেদকর গবেষক নীতীশ বিশ্বাস বলেন,” *এ পুরস্কার তার জীবন সাধনার একবড় স্বীকৃতি। তার দুই দশকের বেশী বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যকালে তিনি প্রায় এক দশক এই পুরস্কার প্রদানে মুখ্য দায়িত্ব পালন করে করেছিলেন । যা তৎপর ১২ বছর বন্ধ থাকার পরে যে আবার তা শুরু হল এই তার এক বড় আনন্দ* ।
এই উৎসবের পরিচালনায় ছিলেন অধ্যাপক সিদ্ধার্থ সাহা, আশিস সানা, মন্মথ বিশ্বাস ও ড. সুবল বারুই সহযোগিতা করেন পঙ্কজ তাঁতী ও জয়ন্ত বিশ্বাস প্রমূখ।এর সঙ্গে।আমাদের নিজস্ব সংযোজন হল : * নীতীশ বিশ্বাসকে ত্রিপুরা সরকার তার সম্পাদিত পত্রিকা ঐকতান গবেষণা পত্রের সম্পাদক হিসেবে বাংলা ভাষা সাধনা ও দলিত সাহিত্য আন্দোলনের জন্য প্রদান করে অদ্বৈত মল্লবর্মণ পুরষ্কার ২০০৫। তিনি পেয়েছেন দিলীপ পাল সম্পাদিত বিখ্যাত পত্রিকা শব্দ সেনা প্রদত্ত পশ্চিম বঙ্গে বেসরকারি উদ্যোগে প্রথম সাহিত্যিক সোমেন চন্দ পুরষ্কার ২০২১ আর লিটল ম্যাগাজিন লাইব্রেরি ও গবেষণা কেন্দ্রের পক্ষ থেকে তার চার দশকের ভাষা আন্দোলনের অক্লান্ত যোদ্ধা রূপে *ভাষাসৈনিকপুরষ্কার ২০২১* এ সম্মানিত করা হয়।” তিনি দিল্লি আম্বেদকর একাডেমী র আম্বেদকর পুরস্কার পেয়েছেন ১৯৯৮ সালে আর এবার তাকে নিউবারাকপুর আম্বেদকর কালচার কলেজ প্রদান করে আম্বেদকর সমাজ আচার্য পুরস্কার ও সম্মাননা।)
Nitish Biswas, former Joint Registrar (Professor Rank ) of Calcutta University. Writer & Reasercher. Editor, Aikatan Gaveshana Patra.
ভালো নেই
নীতিশ বিশ্বাস
আমি ভালো নেই
আমরা ভালো নেই সুনেত্রা –
কবে যেন ভালো ছিলাম?
সেই কোন সকালে!
তারপর আর ভালো নেই।
আমরা ভালো নেই সুনেত্রা –
কবে যেন ভালো ছিলাম ?
এখন আর মনে নেই।
সেই শৈশবে
তোমার সঙ্গে নুরজাহানদের বাড়ি
আড়িয়ালখাঁর পাড়ে,
এইছের নৌকা করে পাড়ি।
রমজানদের কলাবাগানে
ছুটির দিনে ছোটাছুটি।
আঁখের জমিতে গেলেই
রমেশচাঁচার আঁখ ভেঙ্গে দেওয়া –
তোমাদের বাড়িতে কার্তিক পুজো
কত দূর আকাশে আলো জ্বলতো,
শ্যামল কাকা যেন আকাশ প্রদীপ।
সেই সব ছেড়ে যবে চলে এলাম।
কি যেন এক অন্ধ ভয়ে,
দমবন্ধ দিনের মতো –
গৃহহীন গৃহে পথহীন পথ ভেঙে
সেই থেকে ভালো নেই, সুনেত্রা।
তুমি, আমি, নুরজাহান, পান্না,