“ভাগ্য চক্র”
✍️ শিব প্রসাদ হালদার
শম্ভু সোমনাথ বাবুর বিশ্বস্ত শিশু শ্রমিক।বছর সাতেক হ’ল বাড়ির কাজের মাসি মন্থরার হাত ধরে এ বাড়িতে এসেছে।তার বয়স আজ বারো।এখানে এতটা বছর কেটে গেলেও কোনদিন তার গ্রামের বাড়ির জন্য প্রাণ কাঁদেনি।তার বাড়ি কাক দ্বীপের প্রত্যন্ত গ্রাম প্রফুল্ল নগরে।জন্মদাতা পিতার মূখ দর্শনের সৌভাগ্যটুকুও তার হয়নি।কলকাতার কোলে মার্কেটৈর সামনে গাড়ি চাপা পড়ে তার বাবা মারা যায়।কাজ করতো মুটিয়ার।একটি ভারী সবজির ঝুড়ি ম্যাটাডোরে তুলতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে যেতেই চলন্ত গাড়িতে থেতলে গেল মাথা।ঘটনাস্থলেই সব শেষ।সেদিন বাড়িতে যখন এই মর্মান্তিক দুঃসংবাদ পৌঁছায় তখন তার মা প্রচন্ড প্রসব বেদনায় ছটফট করছে।বিধাতার কি নিষ্ঠুর পরিহাস!যমরাজা যেন জোর করে কেড়ে নিল তার মাকেও!তার মা পরের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করতো।প্রচন্ড অ্যানিমিয়ায় ভূগছিল।টাকার অভাবে ঔষধ ঠিকমতো জুটতোনা।পুষ্টিকর খবারতো দূরের কথা।জন্ম নিতে যে শিশু পিতৃমাতৃহীন হয়ে পড়ল তার কপালে আর কতটা সুখ আশা করা যায়!বিধাতার হিসাব বুঝা দায়।দু’দিনের ব্যবধানে বাবা-মাকে হারালেও বিধাতা কিন্তু শম্ভুর প্রতি ততটা নির্দয় হয়নি।নিকটবর্তী এলাকার এক সহৃদয় বৃদ্ধ শশাঙ্কবাবুর দয়ায় শম্ভু আশ্রয় পেল তাঁর পরিবারে।বড় পুত্রবধূর পুত্র-স্নেহেই শম্ভু একটু একটু করে বড় হোতে লাগলো।
শশাঙ্ক বাবুর দুই ছেলে।সন্তোষ আর পরিতোষ। বড় ছেলে পরিতোষ গ্রামের জমি জমা ও চাষবাস দেখাশোনা করতো।নিজের যত কষ্টই হোক না কেন সে সব মানিয়ে নিতো।একমাত্র ভাইয়ের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটুক-সে কখনো মনে প্রানে চাইতো না।উপযুক্ত শিক্ষায় ভাইকে শিক্ষিত করে তোলা ছিল তার একমাত্র লক্ষ্য।পরিতোষের বিয়ের বারো বছর পর তাদের ঘরে জন্ম নেয় এক ফুটফুটে পুত্র সন্তান কিন্তু বছর না ঘুরতেই হঠাৎ মারাত্মক নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে এক সপ্তাহের মধ্যেই মারা যায়।পরিতোষের স্ত্রী প্রমিলা দেবী হয়ে পড়ল সন্তান হীনা।পুত্রশোকে যখন উতলা তখনই সে শম্ভুকে পেয়ে পুত্র স্নেহে বুকে টেনে নিল।কিন্তু সে সুখ বেশিদিন সইল না।
সাংসারিক স্বচ্ছলতা থাকা সত্বেও পরিতোষ বেশি পড়াশোনা করতে পারেনি।কিন্তু ছোট ভাই সন্তোষ সাচ্ছন্দেই চালিয়ে গেছে পড়াশুনা।কমপ্লিট করেছে গ্রাজুয়েশন।গ্রাম্য পরিবেশে সন্তোষ মানুষ হলেও এবার তার গায়ে লাগল শহুরে হওয়া।কলেজের ক্লাস ছেড়ে মাঝেমধ্যে ঘুরেছে শহরের রাস্তায় রাস্তায়।রেস্তোরাঁ থেকে হোটেল- ইডেন থেকে মিলেনিয়াম পার্ক—-। বন্ধুদের মতো বান্ধবীও জুটেছে অনেক।তাদের নিয়ে কখনো গিয়েছে সিনেমায় কখনো বা থিয়েটারে।ধীরে ধীরে গভীর মেলামেশা—– অবশেষে বিয়ে করতে হলো শহরতলীর মেয়ে শান্তাকে।অত্যাধুনিক সজ্জায় সজ্জিতা শান্তা নববধূ রূপে এলো গ্রামের বাড়িতে।নতুন পরিবেশে পৌঁছে তার অস্বস্তি ক্রমেই বাড়তে লাগল।কয়েকদিন যেতেই শুরু করল অশান্তি।শ্রদ্ধেয় শ্বশুর ভাসুর কে পর্যন্ত অশ্রদ্ধা করতে লাগল।শম্ভু সন্তোষদের রক্তের কেউ নয় কিন্তু সরল শিশু তাদের সবাইকে নিজের ভেবে জানত।সে সব সময় জানত প্রমিলা দেবী তার গর্ভধারিনী মা।শান্তা যখন শম্ভুর জন্ম বৃত্তান্ত জানতে পারল তখন থেকেই সে তাকে অন্য দৃষ্টিতে দেখতে শুরু করলো।বেড়ে গেল তার প্রতি বিরক্তিবোধ আর সেই ঘৃণ্য বোধশক্তির জ্বলনে ঘৃতাহুতি দিল এক অনিচ্ছাকৃত অঘটন।এক দিন অসাবধানতায় তার হাত থেকে পড়ে গিয়ে ভেঙে টুকরো টুকরো হল একটা মূল্যবান গিফট সেট।যেটা তার বিয়েতে প্রিয় বন্ধুদের কাছ থেকে বিশেষ উপহার স্বরূপ পেয়েছিল।তার পর থেকেই সে শম্ভুকে সহ্য করতে পারতো না।সরল শিশু শম্ভুর প্রতি দিনে দিনে প্রচন্ড বিরূপ হতে লাগল।শুরু করল তার উপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে অত্যাচার।কত কষ্টই মুখ বুজে সহ্য করেছে শম্ভু।প্রথম প্রথম বাড়ির সকলের অসাক্ষাতে তাকে দিয়েছে বাসি ভাত,বাসি তরকারি।কখনো পেটপোড়া ক্ষিধেয় দিয়েছে আধপেটা খাবার। করেছে কত গালাগালি। কিছুদিন যেতেই যখন এই দুরাচার প্রকাশ্যে এলো তখন প্রমিলা দেবী প্রথম প্রবল প্রতিবাদ করলেন কিন্তু সমস্যার কোনো সমাধান হল না।হল হিতে-বিপরীত।অত্যাচার আরও বেড়ে গেল।অতিষ্ঠ হয়ে প্রতিবেশীদের মুখেও বলতে শোনা গেল- “বাবা! একি দজ্জাল বউ–!” শুরু হলো প্রায় ঝগড়া ঝাটি। কথায় কথায় খোটা দিয়ে বলতে লাগলো- “কোথাকার কোন্ জাতপাত,কোন্ বংশের কার পাপের ফল——-তাকে নিয়ে এত আদিখ্যেতা। পরের ছেলেকে আপন ভেবে লালন-পালন করলে কি আপন হবে?একদিন ওই ছেলে শূল হয়ে দাঁড়াবে!বরং ওকে এখনই দূর করে দেওয়াই ভালো——-।” বাৎসল্যের ব্যথায় ভেঙ্গে পড়লেন প্রমিলা দেবী।দিনের পর দিন সহ্য করতে না পেরে ব্যবস্থা করলেন শম্ভুকে অন্যত্র রাখবার।ওই গ্রামেই মন্থরা পরের বাড়ীতে কাজ করে।সে গাঁয়ের অনেক অসহায় ছেলে-মেয়েদের শহরে বাবুদের বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছে।শম্ভুর অন্যত্র আশ্রয়ের জন্য শেষমেষ তাকে বলা হল।
একটা সরল শিশুর প্রতি প্রবল নিষ্ঠুরতা হয়তো অভিশাপ হয়ে দাঁড়ালো।বিধাতাও হয়তো তাই শান্তার প্রতি বিরূপ হয়ে উঠল।যে শান্তা একটা সরল শিশুকে সামান্যটুকু ভালোবাসা দিতে পারে না সেই অপরাধে হয়তো তাকে অপরাধী করলো।বিয়ের পর দশ বছর কেটে গেল শান্তার কোলে আসেনি কোন সন্তান।অনেক গাইনোক্লোজিস্ট দেখিয়ে অনেক চিকিৎসা করেছে কিন্তু কোনো ফল হয়নি।চোখের জল ঝরিয়ে শম্ভুকে সরিয়ে দিয়েছে অন্যত্র কিন্তু সংসারের অশান্তি শান্ত হয়নি।স্বভাব যাবে কোথায়?শান্তার স্বভাব পরিবর্তন হলো না।দিনে দিনে অশান্তি বেড়েই গেছে।তার মন ছুটেছে গ্রাম ছেড়ে শহরে সংসার গড়তে।শান্তার ক্রমাগত চাপে পড়ে সন্তোষ বাড়ি ছেড়ে দমদমে ভাড়া বাড়িতে চলে এলো।সেখানে গড়ে তুলল স্বামীকে নিয়ে সুখের সংসার।বৃদ্ধ শশাঙ্কবাবু এই অশান্তি সইতে পারলেন না।তিনি শয্যাশায়ী হলেন। মাসখানেকের মধ্যেই তিনি চিরবিদায় নিলেন।সংসারের ভাঙ্গনে ভেসে গেল শান্তি।সেই অশান্তির মাঝে শম্ভুর স্বস্তির সন্ধানে তার হাত ধরল মন্থরা।তার নিঃস্বার্থ সহায়তায় শম্ভু আশ্রয় পেল সোমনাথ বাবুর বাড়িতে।
সোমনাথবাবুর স্ত্রী সান্ত্বনা দেবী নিঃসন্তান। পঁয়তাল্লিশ বছরের দাম্পত্য জীবনে মাতৃত্বের আপন আনন্দ অনুভব করতে পারেননি।অনেক চিকিৎসা করেছেন।করেছেন অনেক দেবদেবীর কাছে মানত। কিন্তু কোন কৃপায় ততদিনে তার মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হয়নি।শম্ভু শিশু শ্রমিক হিসাবে তাদের বাড়িতে থাকলেও তার প্রতি প্রমীলা দেবীর সহানুভূতি ছিল অনেক।মাতৃত্বের মাঝে ছোট্ট শিশুর অমানবিক কষ্ট তিনি দেখতে পারতেন না।তাই বাড়ীর পুরনো ভৃত্য পরিমলের উপর পরিস্কার নির্দেশ ছিল তাকে দিয়ে যেন কোন পরিশ্রমের কাজ করানো না হয়।তবুও সতর্কতার মাঝে ঘটে গেল অঘটন।কলতলা থেকে বালতি ভর্তি জল নিতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে যায়।ভেঙ্গে যায় বাঁপায়ের হাড়।নর্থ পয়েন্ট নার্সিংহোমে প্লাস্টার হল।চার সপ্তাহের পুরো বিশ্রাম।সেই বিশ্রামের ফাঁকে সান্ত্বনা দেবী খবর পাঠালেন কাজের মেয়ে মন্থরাকে।সে এখন এখানে কাজ করেনা। ডায়মন্ড হারবারের একটা নার্সিংহোমে আয়ার কাজ করছে। খবর পেয়ে সে ছুটে এলো শম্ভুকে দেখতে।শম্ভুর প্রতি মন্থরার সহানুভূতিও কম ছিল না।সেই তাকে বেঁচে থাকার আশ্রয়ের সন্ধান দিয়েছিল।শম্ভুর আজ এই দুঃসময়ের মাঝে সুদিনের সূর্য উঁকি মারলো। মন্থরার মুখে আজ শম্ভুর জন্মকালীন সমস্ত শোকের পূর্ব ইতিহাস প্রকাশ পেয়ে গেল। এই মর্মান্তিক কাহিনী সান্তনা দেবীর মনকে বড্ড নাড়া দিল। তিনি শম্ভুকে আপন সন্তানরূপে দেখতে শুরু করলেন।
শম্ভু কাজের ফাঁকে ফাঁকে পড়াশোনা একটু আধটু করতো।তাতে সাহায্য করতো বাড়ির পুরনো ভৃত্য পরিমল।তার সহানুভূতিতে শম্ভু পেয়েছে উৎসাহ।সান্তনা দেবী এই উৎসাহ দেখে খুশি হলেন। সোমনাথ বাবুকে বলে তিনি শম্ভুকে স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিলেন।দুঃস্থ পরিবারে জন্ম হলেও পড়াশোনার প্রতি তার প্রবল আগ্রহ ছিল। বুদ্ধি-বিবেচনা ছিল বয়স অনুপাতে অত্যন্ত প্রখর।তাছাড়া তার আদর মাখা মুখখানা অতি সহজেই মানুষের মায়া টেনে নিত।বাড়ির কাজের ছেলে হলেও সে সকলের মন জুগিয়ে নির্দিষ্ট পড়া- শোনা করে নিত।বাৎসরিক পরীক্ষায় পঞ্চম শ্রেণীতে পঁয়ষট্টি জনের মধ্যে সে হল প্রথম। প্রাণঢালা প্রশংসা পেল সকলের।
সোমনাথ বাবুর সজ্জন হিসাবে যথেষ্ট সুনাম আছে।তার বাবা সোমেনবাবুর বড় ইচ্ছা ছিল একটা আদর্শ স্কুল প্রতিষ্ঠার।তিনি দেখতে চেয়ে ছিলেন প্রতিষ্ঠিত স্কুলে পড়াশোনা করবে শত শত ছেলেমেয়ে। শিক্ষার আলোয় আলোকিত হয়ে সার্থক হবে সকলের সমষ্টিগত স্বার্থ।কিন্তু সে স্বপ্ন সার্থক হবার আগেই তিনি স্বর্গবাসী হলেন।মৃত্যুর একমাস আগেই শিক্ষা মন্ত্রীকে দিয়ে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন।সোমনাথ বাবু তাঁর বাবার সেই ইচ্ছার পূর্ণরূপ দিলেন। প্রতিষ্ঠা করলেন বিবেকানন্দ প্রাথমিক বিদ্যালয়।সোমনাথ বাবু সেই স্কুলের সেক্রেটারি।দুটো বছর যেতেই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা অনেক বেড়ে গেল।মুষ্টিমেয় শিক্ষক-শিক্ষিকা দ্বারা উপযুক্ত শিক্ষাদান ব্যাহত হতে লাগল।স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি সিদ্ধান্ত নিল- আরও শিক্ষক শিক্ষিকা নিয়োগের।দৈনিক সংবাদপত্রে দেয়া হল বিজ্ঞাপন।জমা পড়ল অনেক আবেদনপত্র।যদিও রিকুটমেন্ট হবে মাত্র তিনজন।
শান্তার ক্রমাগত অশান্তির জেরে সন্তোষ গ্রামের সমস্ত জমি জমা বিক্রি করে হিসাব চুকিয়ে আসলে বাড়ির সাথে আর কোন যোগাযোগ রাখেনি। রাখবার মুখটিও ছিলনা।নানারকম ঝুটঝামেলা করে বাড়ির অন্যান্যদের ঠকিয়ে সমস্ত টাকা জমা করলো নিজের নামে ব্যাংকে।এই অবিচার বিধাতা হয়তো সহ্য করলেন না।কিছুদিনের মধ্যে সন্তোষের অফিসের ঝামেলায় তার চাকরি চলে যায়।চাকরি হারিয়ে প্রাথমিক পর্যায় সামলিয়ে নিল গচ্ছিত টাকার দম্ভে।কিন্তু জমানো টাকা শেষ হতে কতদিন? কিছুদিনের মধ্যে জমা টাকা যখন শেষ হয়ে গেল তখন সমস্ত দম্ভ শেষ।খুঁজতে লাগলো অন্য যেকোনো চাকরি কিন্তু পেল না।ছোটখাটো ব্যবসা করল কিছু দিন কিন্তু তাতেও লোকসান। এবার শান্তা দু পয়সা রোজগারের আশায় সচেষ্ট হল।কিনলো একটা সেলাই মেশিন।সেলাই শিখে সংসারের স্বচ্ছলতা আনতে চাইল কিন্তু তাতেও তেমন সাফল্য এলো না। এবার টিউশনি করার সিদ্ধান্ত নিল।পরিচিতদের কাছ থেকে এ জন্য সহযোগিতা চাইল কিন্তু যদিও দুই একজন ছাত্র পেল তারা এক মাস না হতেই পড়া বন্ধ করে দিল।তার নিজের স্বভাব দোষে যোগ্যতার যোগ্য মূল্য পেত না।সব সময় নিজেকে শিক্ষার দম্ভ দেখিয়ে উচ্চশিক্ষিতা হিসেবে জাহির করবার স্বভাব ছিল। বিশেষ করে অপ্রয়োজনে অভদ্র অশালীন কর্কশ ব্যবহারে ভাড়াবাড়িতেও লোকের কাছে হয়ে উঠল অপ্রিয়।তবুও আজ তাকে কিছু একটা করতেই হবে।
সংসারের অবস্থা যখন সম্পূর্ণ বেহাল হয়ে পড়লো তখনই বিজ্ঞাপন দেখে বিবেকানন্দ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরির জন্য আবেদন করল।বায়োডাটা অনুযায়ী তার নাম প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হল। চাকরিটা আজ তার একান্ত দরকার।সেক্রেটারি বাবুকে একটু সুপারিশের জন্য দুই একজনকে বিশেষ ভাবে অনুরোধ করল।কিন্তু কেউ তাতে তেমন গা করলো না।অবশেষে শান্তা ঠিকানার সন্ধান নিয়ে ছুটলো সেক্রেটারি বাবুর বাড়িতে।আজ সে মানসিক ভাবে তৈরি হয়ে নিয়েছে।যেভাবে হোক সেক্রেটারি বাবুকে নিজের সমস্যাটা সঠিকভাবে বুঝিয়ে বলবে।যদিও বাড়তি হাব-ভাব দেখিয়ে লোককে সুযোগ মতো কনভেন্স করার যোগ্যতা তার যথেষ্ট আছে তবুও এই মুহূর্তে যেন সমস্যার পরিপ্রেক্ষিতে নিজেকে বড় নার্ভাস লাগছে। তবুও চেষ্টা তাকে করতেই হবে—-।
সকাল দশটা।বেরোবার জন্য শান্তা তৈরী হোয়ে নিল। আহত আত্মবিশ্বাস নিয়ে সে পৌঁছালো সোমনাথ বাবুর বাড়িতে কিন্তু দুর্ভাগ্য-দেখা মিলল না।নিরাশ চিত্তে ফিরে এলো তবুও উদ্যোমে ভাটা পড়ল না। সে পরের দিন ছুটলো সকালে। কলিংবেল চাপতেই দরজা খুলে বেরিয়ে এলো গৃহভৃত্য।বাবুর সাথে দেখা করতে এসেছে জেনে ড্রইং রুমে বসতে বলে চলে গেল। শান্তা গিয়ে বসল ড্রইংরুমে।শুধু সময়ের অপেক্ষায়।কখন সেক্রেটারি বাবু দোতলা থেকে নিচে নামবেন।অব- শেষে প্রায় আধা ঘন্টা পরে তিনি নীচে নেমে এলেন।তখন অনেকেই সেখানে সাক্ষাতের অপেক্ষায়।এক এক করে সকলের সাথে তিনি কথা বলছেন। হঠাৎ ড্রইংরুমে স্কুলড্রেসে ঢুকলো একজন ছাত্র।পিঠে স্কুল ব্যাগ। আজ পরীক্ষা শুরু। সোমনাথবাবুর পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে উঠে দাঁড়াতেই দৃষ্টি পড়ল শান্তার দিকে। শম্ভু থমকে গেল!শান্তা চমকে গিয়ে বলে উঠলো একি শম্ভু তুই এখানে——-?
–~০০০XX০০০~–