স্বর্গীয় অমর পুরকাইত জীবিতকালে টুকরো কাগজ পেলেই একটা কবিতা লিখে ফেলতেন আর একে ওকে শুনিয়ে যেতেন। তাতেই ওনার আনন্দ ছিল। এই শ্রোতাদের মধ্যে আমিও ছিলাম একজন। কিন্তু লোকে ওনাকে “পাগল” বলে বিদ্রুপ করতো। আমার কাছে তার কবিতাগুলো খু-উ-ব হৃদয়গ্রাহী লাগতো। ওনার কাগজ কিনে কবিতা লিখে তা প্রকাশ করার মতো ক্ষমতা ছিল না। কিন্তু মনের সুপ্ত বাসনা ছিল একদিন তার কবিতাগুলো ছাপাবেন। কিন্তু একদিন, তার সেই সুপ্ত বাসনা নিয়েই তিনি ২০০৬ সালের ১০ই সেপ্টেম্বর পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলেন।
আমাকে পড়তে দেওয়া ওনার শেষ কবিতা দুটি আমার পুরনো কাগজ পত্রের মধ্যে নজরে এলো এবং আমি ‘সবুজ স্বপ্ন’ সাপ্তাহিক পত্রিকার মাধ্যমে তা প্রকাশ করার অনুরোধ করলাম। অতঃপর তাদের সৌজন্যে লেখাটি প্রকাশিত হল।
আমার মনে হয় এভাবেই ওনার জীবিত কালের যে সুপ্ত ইচ্ছেটা ছিল মৃত্যুর পরে অন্তত কিছুটা হলেও তা পূরণ হল।
“বহু যুগের কঠোর তপস্যার ফলে”
অমর পুরকাইত
শুদ্ধ আত্মায় ডাকার ফল
বহু যুগের কঠোর তপস্যার ফলে,
মানব জন্ম পায় যে ভূতলে।
বিশ্বমাঝে আছে যত জীবজন্তু,
সর্বজীবের শ্রেষ্ঠ মানুষ কিন্তু।
একই বিধাতার সবাই সৃষ্টি,
বিভিন্ন রুচির হয় মানব কৃষ্টি।
প্রত্যেকের মধ্যে আছে বিবেক ,বুদ্ধি-
চরিত্র ব্যাবহারে করে কর্মসিদ্ধি।
দারিদ্র কুলে মানব শিশু রূপ ধরে-
জন্ম নিয়ে ছিলেন ‘বামা’ মাতৃ ক্রোড়ে।
শৈশব থেকে তাঁর দেব দেবীর প্রতি-
প্রগাঢ় ভক্তিটাই ছিল চরিত্রের মূল নীতি।
শয়নে স্বপনে সদা ডাকিতেন মাকে,
উদ্ধার করো মা আমাকে মায়ার জাল থেকে।
অন্তিমে যখন আত্ম ভোলায় হলেন দিশাহারা,
শুদ্ধ ডাকে মুগ্ধ হয়ে দর্শন দিলেন ‘মা তারা’।
ভক্তি ভরা ডাকের একাগ্রতার মহিমায়-
মানব সমাজে কীর্তিটুকু রেখে গেলেন অক্ষয়।
শ্রদ্ধেও পাঠকগন,
আমার বিনীত নিবেদন এই যে, যদি কবিতাটি আপনার ভালো লেগে থাকে তবে আশারাখি ওনার আত্মার শান্তি কামনা করবেন।
বিনীত নিবেদক
শ্রী সলিল চক্রবর্ত্তী
–~০০০XX০০০~–
Asadharon….