আমার রবীন্দ্রনাথ
উপাসিকা চ্যাটার্জ্জী
ব্যর্থ সময় আমাকে ঘিরে ধরেছে যতবার, ততবার রিক্ত হাতে নতজানু হয়ে বসেছি সেই বোধি বৃক্ষ স্বরূপ কবির কাছে।
আলোক কিরণ আমার মস্তক স্পর্শ করেছে, আশীর্বাদ যেন শির চুমে হৃৎপিণ্ডের স্পন্দনে স্পন্দনে, শিরায় শিরায় ছড়িয়ে পড়েছে।
চোখ মেলে দেখেছি , মুছে গেছে সব সংকোচ।
পরাজয়ের গ্লানি আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রাখতে পারেনি আর।
পৃথিবী ছাড়িয়ে সমস্ত মহাশূন্যে ব্যাপৃত যে নাম, সে নাম ধ্বনিত হয় আমার সমস্ত সত্ত্বা জুড়ে।
মনের আরশিতে মুক্তধারার মতো যে চিরায়ত প্রতিবিম্ব, কালের যাত্রায় তা মলিন হয় না এতটুকু।
সূর্যের টানে ঘূর্ণায়মান পৃথিবীর মতোই তোমাকে ঘিরে অস্তিত্বের আবর্তন।
তোমার কবিতায়, গানে, ছবিতে, প্রতিটি লেখায়, প্রতিটি রেখায় গভীর জীবনবোধে আত্মদর্শন।
তাই, আজীবন সুন্দরের পূজায়, সত্যের উপাসনায়
ব্রতী করেছি নিজেকে।
আমি যেন জন্ম জন্মান্তর ধরে এক কবিকে দেখছি।
যেন ছোট্ট শিশুর মতো আমার সকল আবদার তোমার কাছে, তোমার স্নেহের প্রশ্রয় আমাকে নির্ভীক করে তোলে।
উত্তাল সমুদ্রের বুকে দুরন্ত ডিঙ্গায় অভিযান, কিংবা
স্রোতস্বীনী নদীর অবিরাম ছুটে চলা মহাসাগরের পানে।
চিরকালীন যাত্রাপথে তোমারই অমৃত বাণী,
নিঃশঙ্ক চিত্তে তাই নূতনেরই জয়গান গাই।
আমার মানস ভূমে উত্তোরণের প্রতি সোপানে
শাশ্বত রবীন্দ্রনাথ।
–~০০০XX০০০~–