(আমরা পত্রিকার পক্ষ থেকে সবাই আপনার দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।)
রূপবহ্নি
*********
✍ শ্যামাপ্রসাদ সরকার
(এক)
হিন্দুকুশ পর্বতের ক্রোড়ে যে ক্ষুদ্রকায় জনপদ একদা ভারতবর্ষের ইতিহাসে অপরিচিত হইয়া মুখ লুকাইয়া ছিল একদিন তাহারই অন্দরে বিতৃষ্ণা ও প্রতিশোধের অগ্নি বহ্নিমান হইয়া উঠিতে পারে তাহা সেদিন কেহ বুঝিতে পারে নাই।
হে মানবসভ্যতা! বারংবার ঘাত প্রতিঘাত ও রিরংসার ফলস্বরূপ ক্ষতবিক্ষত হইয়াও তুমি সেই অচেতনই রহিয়া গেলে। প্রেম ও শান্তির শঙ্খ তো কতবারই বাজিল, কত মহামানবের কন্ঠে ধ্বনিত হইল ঐশী ও পরম ভ্রাতৃত্বের আশ্বাসবাণী, তাও তুমি অযথা হিংসা ও রণভেরীর আড়ালে আপন রক্তলোলুপ ক্রূরতাকে বাঁচাইয়া রাখিয়াছ। সেইদিনও যেমন তাহাকে রক্তপান করাইয়া লালন করিয়াছিলে।
**********
কাবুল নদীর (কোফেন) তীর বরাবর যে ক্ষুদ্রকায় জনপদটির কাহিনীর কথা আজ বলিতে বসিয়াছি তাহার নামটি ইতিহাসে আজ পরিচিত। কিন্তু সেইদিন তাহা তক্ষশীলা নগরীর উপপ্রান্তের একখন্ড পার্বত্যভূমি অপেক্ষা বিশেষ কিছুই ছিলনা। গিরিকন্দরের অধিবাসীরা কৃষিকর্ম অপেক্ষা পশুপালন ও যুদ্ধব্যবসায়েই পটুত্ব অর্জন করিয়াছিল। তাহাদের রাজার নাম ছিল অম্ভি।
অম্ভি আজন্ম ক্রূর প্রকৃতির হইলেও অন্তরে সে ভীরু। তাহার আস্ফালনের প্রাবল্যে সেই ভীরুতাকে সে লুক্কায়িত রাখে। মুন্ডচ্ছেদ ও মৃত্যুদন্ড ব্যতিরেকে অপর কোনও শাস্তিপ্রদানের অভিরুচি ছিলনা। এতদসত্ত্বেও তাহার দুইটি গুণ ছিল। সে ছিল কন্দর্পকান্তি ও সুদেহী। আর সুরশৃঙ্গারের সুরে সে গিরিকন্দরকে ভাসাইয়া লইয়া যাইতে পারিত। যৌবনকালে তাসার এই বৈপরীত্যই তাহার অনুরাগিণীদের চিত্তহরণের নিমিত্ত হইত। এক্ষণে রাজনটী সৌগন্ধা তাহার প্রণয়ী। তাহাদের যূথবদ্ধ রূপ দেখিলে অম্ভির ক্রূরতা সম্পর্কে লোকেও সন্দিহান হইত। বসন্তপূর্ণিমার নিশাকাল তাহাদের সঙ্গীত ও প্রেমের অন্তরঙ্গতায় হিন্দুকুশের শিখরে শিখরে ধ্বনিত হইত।
*******
দেশে এখন যুদ্ধবিগ্রহ কিছুদিন বন্ধ রহিয়াছে। রাজ্যবিস্তারে অম্ভী সচেতন নহে। সে একজন কড়া শাসনকর্তা রূপে জনপদটিকে তাহার পদতলে চাপিয়া রাখিয়াছে। তাহার বিলাসব্যসনের খরচ যোগাইবার উপায় হল বিবিধ করপ্রণয়ন আর অনাদায়ে শূলদন্ড বা মুন্ডচ্ছেদ। নারকীয় শাস্তিপ্রদানে অচিরাচরিত পদ্ধতি আবিস্কারে তাহার উৎসাহ বেশী। তাহার প্রমোদকাননে নটী ও বারবনিতাদের গমনাগমন বড় বিসদৃশ। আজকাল তার ব্যভিচারের মাত্রাটিও বৃদ্ধি পাইয়াছে।
দুঃসংবাদটি সেদিন আনন্দ সহকারে বহন করিয়া আনিয়াছিল স্বয়ং সৌগন্ধা। সে অন্তঃসত্ত্বা। অম্ভীর ঔরসেই তাহার গর্ভে বীজ বপন হইয়াছে। আসন্ন পিতৃত্বের পুরস্কার স্বরূপ অম্ভী তাহার অর্নগত সন্তানের মাতাকে দিল মৃত্যুদন্ড। একজন নর্তকী হইয়া সে রাজবংশধরের মাতৃত্বলাভের অধিকার যাচনা করে ভুল করিয়াছে । সেই সামান্য কথাটিই তাহাকে বোঝাইবার জন্য এই ব্যবস্থা। অম্ভি তাহার বিশ্বস্ত গুপ্তচর শতানীককে ডাকিয়া গোপনে এ কর্মের ভার দিল। হিন্দুকুশের পার্বত্যকিনারা হইতে পূর্ণগর্ভা সৌগন্ধাকে নীচের অরণ্যে নিক্ষেপ করিতে হইবে। পতনে মৃত্যু না হইলেও অরণ্যের সিংহের ভোজ্য তাহাকে হইতেই হইবে। আর সেই কর্মটি সাধিত হইলে অম্ভী স্বয়ং তাহা নিজচক্ষে পরিদর্শন করিবেন।
************
(দুই)
সৌগন্ধা মরিবার পরে আরো ষোড়শবর্ষ অতিক্রান্ত হইয়াছে। সেদিনের সেই ক্রূর যুবাটির পরিবর্তে একজন অম্ভি এখন মধ্যবয়সী গোষ্ঠীপতি। সিন্ধু নদ ও ঝিলাম নদীর মধ্যবর্তী স্থানে তাহার রাজধানীটি বর্তমানে স্থানান্তরিত হইয়াছে। তবে বর্তমানেও প্রজাগণ যে সুখে আছে একথা বলিবার উপায় নাই।
সম্প্রতি রাজ্যে এক ভাস্করের আগমন ঘটিয়াছে। তাহার প্রস্তর কাটিয়া অপরূপ মূর্তি নির্মাণের কুশলতার সংবাদ অম্ভীর কর্ণে আসিল। তৎক্ষণাৎ সে রাজঅতিথিশালায় আপ্যায়িত হইল। সমস্ত রাজধানীর স্থানে স্থানে রাজার মূর্তি বসাইয়া তাহাকে এই নগর সজ্জিত করিতে হইবে। দিবারাত্র প্রস্তর আর ছেনী হাতুড়ির শব্দ তাহার কর্মশালা হইতে ঝঙ্কৃত হয়। ইতিমধ্যে কয়েকটি অপরূপ আবক্ষ মূর্তি নির্মাণ করিয়া সে রাজার পারিতোষিক লাভ করিয়াছে।
শতানীক বৃদ্ধ হইলেও এখনো রাজভূত্যের ন্যায় চরবৃত্তি করে। তাহার উপস্থিত বুদ্ধিমত্তা ও শ্যেনদৃষ্টি বহিরাগত শত্রুদের খবর আনয়নে সাহায্য করে। সে খবর পাইয়াছে গ্রীক সমরজয়ী আলেকজান্দার ব্যাকট্রিকা এবং বুখারা জয় করিয়া সিরদরিয়া অবধি অগ্রসর হইয়াছে। শীঘ্রই সে হিন্দুকুশ পাহাড়ের পূর্বদিকে অগ্রসর হইবে ও আগামী গ্রীষ্মে সিন্ধু নদের নিকটে পৌঁছাইয়া যাইবে। এই সিন্ধুনদের অদূরেই অম্ভির রাজ্য গান্ধার আর তাহার রাজধানী তক্ষশীলা।
*********
ভাস্করের নাম আমেন্দার। সে জাতিতে বর্ণসংকর। তাহার পিতা বাহ্লীক জনগোষ্ঠীর আর মাতা এশীয় যাযাবর ক্ষত্রপ জাতির। পার্বত্যপ্রজাতির জাতক বলিয়া সেও সুন্দরকান্তি। তাহার শৈল্পিক দেহতনুর সঙ্গে উজ্জ্বল ও নির্মলদৃষ্টির চক্ষুদ্বয় বড়ই সুন্দর।
সম্প্রতি এক নবীন নাগরিকার সাথে তার পরিচয় ঘটিয়াছে। তাহার নাম গন্ধর্বসেনা। নিকটবর্তী রাজ্য পুষ্কলাবতীতে তাহার বাস। প্রসাধনী ভেষজ ও সুগন্ধীর পশরা লইয়া সে তক্ষশীলা আসিয়াছিল।আমেন্দারের সাথে তখনই তার পরিচয়। একের সৌন্দর্য অপর সৌন্দর্যকেও আকর্ষণ করে। ইহাই যৌবনের ধর্ম। এক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হইল না।
শতানীক তাহার কুটিরে বসিয়া বিগতকালের স্মৃতি রোমন্থন করিতে বসে। তাহার বয়স হইয়াছে। চক্ষু বুজিলে এখনো এক অপরূপা নারী তাহার মানসচক্ষে ভাসে। তাহার প্রণয়কে সেদিন উপেক্ষা করিয়া অভাগী রাজসহচরী হইতে গিয়াছিল। ভাগ্যের পরিহাসে তাহার হস্তেই সে আবার ফিরিয়া আসিল। তাহার নাম সৌগন্ধা। অম্ভির দেয় মৃত্যুদন্ডের পরোয়ানা লইয়া সে রাত্রেই সৌগন্ধাকে অতিগোপনে পুষ্কলাবতীতে তাহার এক আত্মীয়গৃহে স্থানান্তরিত করে। সৌগন্ধার সমস্ত পরিধেয় ও অলঙ্কার এক ক্ষত্রপ নারীর মৃতদেহে সাজাইয়া মৃতদেহটি হিন্দুকুশের কিনারা হইতে নীচে নিক্ষেপ করে। পাহাড়ের শানুদেশের গুল্মে সেই বস্ত্রের অংশবিশেষ আটকাইয়া যায়। অম্ভি র প্রতীতি হয় যে সৌগন্ধা নিশ্চিতরূপে মরিয়াছে।
*********
শতানীকের সহিত সৌগন্ধার আর দ্বিতীয়বার দেখা হয় নাই। কন্যাসন্তানের জন্ম দিবার কালে সূতিকার জ্বরে তাহার মৃত্যু হয়। শতানীক তাহার আত্মীয়গৃহেই তাহার অনাথ সন্তানটিকে পালন করিয়াছে। ‘গন্ধর্বসেনা’ও তাহার মাতার ন্যায় রূপসী। সর্ববিদ্যার সহিত তাহাকে সে আরও একটি বিদ্যার শিক্ষা দান করিয়াছে। তাহা হইল তাহার আহরিত সর্বশ্রেষ্ঠ বিদ্যা ‘গুপ্তচরবৃত্তি’!
***********
(৩)
সেদিন তক্ষশীলায় গন্ধর্বসেনা শুধুই তার পণ্যসম্ভার লইয়া বাণিজ্য করিতে আসে নাই। তাহাকে একটি গোপনপত্রে স্বয়ং সিরোতিতাস নামক গ্রীকসমর উপদেষ্টা গোপনে নিযুক্ত করিয়াছিল তক্ষশীলার অস্ত্রভান্ডার ও সমরায়োজন জানিয়া আসিবার জন্য। পুষ্কলাবতীর রাজা অষ্টক অম্ভির জামাতা। অর্থাৎ উহাদের জোটবদ্ধতায় বাধা প্রদান করিলে আলেকজান্দারের বিজয়াভিযান নিষ্কন্টক হইবে এ আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
শতানীক দেখিল এই শেষ সুযোগ। যে ক্রুর অম্ভি একদিন গর্ভস্থ গন্ধর্বসেনা আর তার মাতা সৌগন্ধার মৃত্যুর কারণ হইয়াছিল তাহাকে উচ্ছেদ করিবার এমন সুযোগ হাতছাড়া করিলে তাহার উচিত শাস্তি আর কখনোই হইবে না। সে জানে অম্ভি এতটাই নারীলোলুপ গন্ধর্বসেনাকে একবার দেখিলে সে কামার্ত হইয়া পড়িবে। সেই কৌশলেই তাহাকে সসৈন্যে আলেকজান্দারের হাতে তুলিয়া দিলে তার প্রতিশোধ স্পৃহার পূরণ ঘটে।
আমেন্দার পরমযত্নে গন্ধর্বসেনার মূর্তি গড়িতেছে। তাহার দুজনেই পরস্পরের প্রতি পঞ্চশরে আহত। মূর্তি নির্মাণকালের বিরতিকাল ক্রমে উপভোগ্য রতিবিহারে পরিণত হইতেছে। আমেন্দারের চক্ষুদুটি বড় নির্মল আর গন্ধর্বসেনার যৌবনশ্রী ততোধিক সুচারু। বিধাতা এইদুই নরনারীকে যেন আপন মনের মাধুরী মিশায়ে রচনা করিয়াছে। শুষ্ক পার্বত্যকন্দরে তাহার অকালবসন্তের আগমন ঘটাইল।
*********
আমেন্দারের কর্মশালায় আসিয়া গন্ধর্বসেনা ও তার মূর্তিটি দেখিয়া অম্ভি একাধারে ক্রোধিত ও বিস্মিত হইল। তাহাদের মুখে কিছু বলিল না বটে কিন্তু তাহার প্রমোদকাননে আমেন্দার ও তার নায়িকাটির সাথে আলাপনের আমন্ত্রণ জানাইল। তাহার অভিসন্ধি এই যে প্রথমে বিষপান করাইয়া আমেন্দারকে হত্যা ও প্রয়োজনে ওই সুন্দরীটিকে বাহুবলে বলাৎকার করা। তক্ষশীলার যে সুন্দরী রাজার পরিবর্তে এক সামান্য ভাস্করকে প্রণয়কুসুমের অর্ঘ্য দান করে তাহাদের উভয়ের একজনের প্রাণ ও অন্যজনের যৌবন রাজকর হিসাবে প্রদান করাই বিধেয়। অম্ভির মনোজগতে চাঞ্চল্য জাগে। সুন্দরী নারীমাংস যে বড়ই সুস্বাদু।
ইতিমধ্যে এক অভিনব নৌ সেতুর সাহায্যে সিন্ধুনদ অতিক্রম করিয়া আলেকজান্দারের বাহিনী অতিগোপনে ভারতবর্ষের মাটি স্পর্শ করিল। সে রাত্রে আলেকজান্দারের শিবিরে শতানীক আর সিরোতিতাস এক গোপন বৈঠকে বসিল। তাহারা স্থির করিল কিছু ছদ্মবেশী গ্রীকসৈন্য অম্ভির প্রমোদগৃহে লুক্কায়িত অবস্থায় থাকিবে। আমেন্দার ও গন্ধর্বসেনার সহিত অম্ভি ওই স্থলে প্রবেশ করিলে গন্ধর্বসেনার ইশারায় তাহারা অতর্কিতে অম্ভিকে বন্দী করিয়া লইবে। তবে এ কাজটি অতি দ্রুত সমাধা করিতে হইবে। নচেৎ আমেন্দারের প্রাণসংশয় হইতে পারে। শতানীকের পরামর্শমত গন্ধর্বসেনা কঞ্চুলিকার ভিতরে লৌহজালিকা পরিধান করিয়া থাকিবে। অম্ভির তরবারি তাহাকে স্পর্শ করিতে পারিবেনা। সে ঠিক করিয়াছে এর পূর্বেই গন্ধর্বসেনাকে তাহার অতীত ইতিহাস জানাইতে হইবে। সৌগন্ধার প্রতি অবিচারের শোধ লইবে তাহার কন্যা গন্ধর্বসেনা!
*******
শতানীকের মুখে তাহার মাতার বঞ্চনার কাহিনী শুনিয়া গন্ধর্বসেনার নাসারন্ধ্র স্ফূরিত হইল। আহত মার্জারিনীর মত তাহার তন্ত্রীতে প্রতিশোধের আগুন জ্বলিয়া উঠিল। তাহার জ্ঞানে শতানীকই তাহার পিতা, অত্যাচারী, নারীলোভী অম্ভিকে সে পিতার মর্যাদা দিতে অক্ষম। সে ভাবিতেছে আলেকজান্দারের শ্বাপদ বাহিনীর হস্তে অম্ভিকে তুলিয়া দিয়া বৃদ্ধ শতানীক ও আমেন্দারকে লইয়া সে এ দেশ ছাড়িয়া অন্যত্র সংসার পাতিবে। তাহার জীবনের আরাধ্য এখন কেবল মন্দার।
********
অম্ভির প্রমোদগৃহটি প্রস্তরনির্মিত। পূর্বে এইস্থলে তার কৃত অনেক ব্যভিচারের চিহ্ন বন্দী হইয়া আছে। আজও অজস্র অসহায় রমণীর ক্রন্দনশ্বাস যেন এই পাতালপুরীতে দমবন্ধ করিয়া দেয়। অম্ভি উৎকৃষ্ট দ্রাক্ষারস নিজের হস্তে আমেন্দার ও গন্ধর্বসেনাকে পরিবেশন করিতে উদ্যোগী হয়। আমেন্দার এই ষড়যন্ত্রের বিষয়ে পূর্ব হইতে অবগত। বিশেষ ইশারা করিয়া সে পানপাত্রটি মাটিতে সশব্দে ছুঁড়িয়া দিতেই প্রায়ান্ধকার ভেদ করিয়া গ্রীক সৈন্যদিগের শাণিত অসির তীক্ষ্মাগ্র অম্ভিকে ঘিরিয়া লইল। নিরস্ত্র অম্ভি এরজন্য প্রস্তুত হইবার সুযোগ পায় নাই। ফলতঃ সে বিনাশর্তে আলেকজান্দারের সৈন্যের কাছে বশ্যতা স্বীকার করিল।
*********
আকামেনিদীয় সাম্রাজ্যের গান্ধার প্রদেশ ও সংলগ্ন অন্য সমস্ত রাজা ও গোষ্ঠীপ্রধানগণ ধীরে ধীরে আলেকজান্দারের বশ্যতা স্বীকার করিয়াছে। আলেকজান্ডার স্বয়ং পুষ্কলাবতীর রাজা অষ্টককে হত্যা করিয়া অশ্বক জাতিকেও তাঁর নিকট পরাভূত করিয়াছেন।
তাহাদের অসীম কৃতিত্বের জন্য আমেন্দার ও গন্ধর্বসেনাকে পুরস্কৃত করিয়াছেন স্বয়ং আলেকজান্দার।
সিন্ধুনদের প্রান্তে শতানীক আমেন্দার ও গন্ধর্বসেনার হাতে হাত রাখিয়া একছড়া মুক্তার হার বাঁধিয়া দিল। আজ তাহারা যুগলে সিন্ধু নদের দক্ষিণে যাত্রা করিবে। এ জীবনের যে কটি দিবসের আয়ু অবশিষ্ট আছে তাহা সে জন্মভূমির সীমানার বাহিরে কাটাইতে চায় না।
শতানীক মনেপ্রাণে গন্ধর্বসেনাকে তাহার জন্মের অভিশাপ হইতে মুক্ত করিয়া ভাস্কর আমেন্দারের সহিত এক নূতন জীবনের পথে অগ্রসর করিয়া দিতে চায়। রাত্রিশেষের নবোদিত অরুণরেখার কাছে গন্ধর্বসেনার সুখই তাহার আজ একমাত্র প্রার্থনা।
********সমাপ্ত*******