***”আধুনিক ক্রীতদাস”***
!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!
শিব প্রসাদ হালদার
কাজ নেই তেমন- তবুও শুধু কাজ
পেটে পেটপোড়া খিদে কিন্তু সময় মতো খাবার নেই
সবার খাওয়া শেষ হবে তবে তার—
উদ্বৃত্ত এঁটোবাসি খাবারের সাথে একটু মিশিয়ে
ব্যস যথেষ্ট—–।
বাবুদের প্রচার -পেট ভালো না,খেলে———
অথচ আত্মভোলা অভাগার খিদের আগুনে
হয়তো পেটে পাথর পড়লেও গলে যাবে।
তার জন্য বরাদ্দ নির্দিষ্ট ফুটো থালায় —–
দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে খাবার সময়ও হুকুম
এত সময় লাগছে কেন?
রাক্ষস হলি নাকি??
কখন বলেছি বড় বালতি ভরে নীচের কল থেকে
দোতালায় জল আন্ কয়েক বার
দেখবি সিঁড়িতে যেন এক ফোঁটাও জল না পড়ে।
জল্লাদির চিৎকার – কি হ’ল?
বেডপ্যানেরটা নর্দমায় ঢেলেছিস—–??
বড্ড গন্ধ – ঘরে থাকতে পারছি না।
মামণি রেগে বলে- “একদম তর্ক করবি না
চাকর চাকরের মত থাকবি—–!”
বড় দাদাবাবুর বড্ড দুঃখ হয়—-
সেই শুধু একটু ভালোবাসে
তাই বলে- “কি আর করবি?
এই নে, শুকনো পাউরুটিটা তাড়াতাড়ি চিবিয়ে
খৈনিটা মুখে পুরে যা”
ছোট দাদাবাবুর দুপুর সাড়ে তিনটার হাঁক-
” বললাম না- নর্দমায় নেমে ওটা খোঁচা –“
ঢলঢলে কুঁচকানো রুগ্ন শীর্ণ দেহের কালো চামড়ায়
সটান চপ্পলের চড় মেরে
কোমরে হাতদিয়ে মেজাজে দাঁড়ায়।
ভীত নির্বোধ ভৃত্য কাঁপতে কাঁপতে নামে নর্দমায়।
ভার সইতে পারেনা
তবুও আস্ত লম্বা বাঁশ দিয়ে বারবার খোঁচায়
রাস্তার এ প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে
রাস্তার নীচে পাকা নর্দমার ভিতরে গুমগুম শব্দ
হুকুম মাফিক সজোরে খোঁচানোর আঘাতে
নর্দমার প্রাচীরের অন্য প্রান্তের প্লাস্টার খসে পড়ে।
রেগে গেলে চুলের মুঠো ধরে নর্দমায় নামায়—
সন্ত্রস্ত চাকর হাঁটু জলে হাত দিয়ে
কালো কালো পচা পাঁক তোলে সদর রাস্তায়।
মানবাধিকারের সীমা লঙ্ঘিত হয় বারবার
সুস্থ বিবেক লজ্জায় মুখ ঢাকে।
সদর রাস্তায় লোকে দেখতে দেখতে যায়
বারবার বাড়ির দিকে তাকিয়ে বিদ্রুপের সুরে বলে
“আদিম যুগের নয়-
ও যে নব যুগের সভ্য কলঙ্কিত সমাজে
আধুনিক ক্রীতদাস! “
—–!!!!!!!!!!!!!–!!!!!!!!!!!!—–