✍ বন্ধন পাল
কবি পরিচিতি :-
মধ্য কলকাতায় জন্ম। পারিবারিক পটভূমিতে সঙ্গীত-বাদ্য ও সাহিত্যচর্চার পরিবেশ ছিল। প্রথাগত শিক্ষা হিন্দু স্কুলে শুরু হওয়ার পর প্রখ্যাত তবলাবাদক পণ্ডিত শ্যামল বসুর কাছে তবলায় তালিম নেওয়া শুরু। হিন্দু স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও নারায়ণদাস বাঙুর মাল্টিপারপাস স্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগে কৃতিত্বের সঙ্গে উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ হওয়ার পর বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পান। ১৫ বছর বয়সেই কলকাতা প্রথম ডিভিশনে ক্রিকেট খেলা শুরু করে বাংলা স্কুল দলে নির্বাচিত হন। বিশ্ববিদ্যালয়-ক্রিকেটে দক্ষতার পরিচয় দেওয়ায় বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের “ক্রিকেট-ব্লুজ” সম্মান পান। কলেজে পড়ার সময় সাহিত্যচর্চা অব্যাহত থাকে। কর্মজীবন শুরু হয় জবলপুরে কেন্দ্রীয় সরকারি ডাক্তার হিসেবে। সেখানে আকাশবাণী জবলপুর থেকে আমন্ত্রিত তবলা-শিল্পী হিসেবে পাঁচ বছর বহু অনুষ্ঠান করেছেন। কলকাতায় ফিরে আসার পর শুধুমাত্র কবিতা রচনায় মনোনিবেশ করেন। বিভিন্ন লিটল্ ম্যাগাজিন ও ত্রৈমাসিক পত্র-পত্রিকায় তাঁর বহু লেখা প্রকাশিত হয়েছে। কলকাতা বইমেলা ২০১৮,২০১৯ এবং ২০২০-তে তাঁর কাব্যগ্রন্থ :
মনমরা মন্থর মেঘ (২০১৮), আয়ত আঁধার আদুল আলো (২০১৯), চেনা ঘুঙুরের শব্দ (২০২০) প্রকাশিত হয়।
“হরিণের মুখ “
তারুণ্যের শক্তি পায়ে বেঁধে নিয়ে ছুটে ছুটে এসে
দাঁড়িয়ে পড়েছি,হতবাক-প্রায় হরিণের মতো!
কমে আসা দিঘিজলে ফুটে ওঠা ছবি—
নিজের মুখের ছবি— বৃদ্ধের মতন পরাজিত—
ভেসে আছে ভেঙে পড়া বিশ্বাসের কাছে।
সে-মুখে উজাড় করে ঢেলে দেওয়া ভালোবাসা আছে
তোমার দিগন্তে ভাসা একফালি চাঁদের বিলাস,
সে কোথায় হারিয়েছে : এখন হারানো সব বস্তুরাশি যেন
নেমে যায় ভূপৃষ্ঠের নীচে থাকা আশ্চর্য উদাস
নির্যাসহীন খনিজে,এত ভাগ্যহীন !
ব্যথিত চাঁদের আলো, মুখ কালো করে রাখা দিন
পৃথিবীর ছাদে বসে দুর্ভাগ্যের আলোচনা করে,
ওদের গভীর চোখে মরুভূমি ব্যাপ্ত হতে থাকে
অধরে স্থবির ভাষা ওষ্ঠের প্ররোচনায় নড়ে আর ঝরে
আমার মুখের ছবি ভয়ংকর পাপী!
আমার অস্থির ছবি দিঘিজলে ভিজে মনস্তাপী
হয়ছে,তবুও রুদ্ধ সততার কাটেনি জড়তা
হীনমন্য হাত দু’টি কাঁপছে পরোক্ষ উপেক্ষায়।
নিজেই নিজের কাছে সাক্ষ্য দিতে চাওয়া কাতরতা
লক্ষ করে পরিশ্রান্ত হরিণের মুখ হয়ে যাই।
——-___——- ০০+-+০০ ——-___——-