ঘুড়ি
সুপর্ণা দত্ত
✒️✒️✒️✒️✒️✒️✒️✒️✒️
আকাশেতে পাখিরা ডানা মেলে উড়ে যায়
সেই দেখে মানুষের বুদ্ধিটা নাড়া পায়,
কাগজেতে কাঠি জুড়ে সুতো বেঁধে লাটাইয়ে
বাতাসেতে ভর করে ঘুড়ি দিল উড়িয়ে।
ঘুড়ির নক্সা তৈরিতে জ্যামিতিক জ্ঞান থাকা চাই
আর চাই কাগজ,সুতো,খিল,পটি,মাঞ্জা,লাটাই,
গুড্ডি,ঢাউশ,চং,চোঙ হল সুতোওয়ালা ঘুড়ি
ফানুস, বেলুন,হাউই হল সুতোবিহীন ঘুড়ি।
কাগজ,কাপড়,প্লাস্টিকের তৈরি সমদ্বিবাহু ঘুড়ি
অযান্ত্রিক আকাশ যানের জানি পূর্বসূরী,
ঘুড়ি আকাশে উড়ানোর একটা খেলনা শুধু নয়
আলেকজান্ডার উইলসন ব্যবহার করেন ঘুড়ি আবহবিদ্যায়।
আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানে ঘুড়ির আছে অবদান
নানা দেশে নানান আবিষ্কারে ঘুড়ি হয় উপকরণ
লরেন্স হারগ্রেভের তৈরি বক্স ঘুড়ি দেখে
গ্রাহাম বেল ঘুড়িকে বিমান সমস্যার পরীক্ষায় রাখে।
বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিনও ব্যবহার করেন ঘুড়ি
বিজলি ও বজ্রপাতের গবেষণার বিষয়বস্তু করি,
চীন,জাপান ও অন্যান্য পূর্ব এশিয়ার দেশে
ঘুড়ি ওড়ানো রয় প্রতিযোগিতা ও বিনোদনে।
চীন দেশে প্রথম ঘুড়ির উৎপত্তি ঘটে
বাংলা,ভারত, জাপানও ঘুড়ির খেলায় জোটে।
ইউরোপের নানা দেশে ঘুড়ির খেলা হয়,
সব দেশেই ঘুড়ি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
স্বাধীনতা,প্রজাতন্ত্র, মকর সংক্রান্তি
বিশ্বকর্মা পুজোয় ঘুড়ি ওড়ানোয় মাতি,
বহু দেশে ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা হয়
বহু দেশে ঘুড়ি ওড়ানো বিনোদন দেয়।
ঈগল,ড্রাগন,বক্স,সাপ,ব্যাঙ,মাছরাঙা,
ডলফিন,মৌচাক,ফিনিক্স,কামরাঙা,
পাল তোলা জাহাজ, চিল,জাতীয় পতাকা,
কত শত আকারের কত ছবি আঁকা।
পত্ পত্ উড়ছে যে আকাশ জুড়ে
লাল নীল সাদা কালো যেন ভবঘুরে।
কোনোটার পেট কাটা কোনোটার লেজ ঝোলা
কোনোটায় চাঁদ আঁকা কোনোটায় গোল্লা।
এপারেতে কার্তিক ওপারে বাদন্য
ঘুড়ি নিয়ে তৈরি লড়াইয়ের জন্য।
এ বলে ঢিল দে ও বলে সুতো টান
ইচ্ছে করবে তারা ঘুড়ি কেটে খান খান।
পাতলা কাগজেতে চিকন কঞ্চি লাগায়,
বিভিন্ন উপাদানে তৈরি বিভিন্ন নকশায়,
ঘুড়িগুলো উড়ছে যে ভনভন সাঁই সাঁই
ছেলেরাও ধরতে ঘুড়ি ছুটছে যে পাঁই পাঁই।
কাটা ঘুড়ির পিছনে ছুটছে যে ছেলে মেয়ে
কেউ পরে খালে বিলে কেউ পরে রাস্তায়
ন্যারা ছাদে উড়াতে গিয়ে ডিগবাজী খেয়ে
ঘুড়ির পিছনে শেষে অকালেতে প্রাণটা হারায়।
ভেবে দেখো সকলে এই বিশ্ব জগতে
ঘুড়ির মত আমরাও বনবন ঘুরছি,
যতই আমরা উড়ি লাটাইতো তার হাতে
যেখানেই যাই না কেন লাটাইয়ে বাঁধা আছি।
—oooXXooo—