কলকাতার অলি-গলি আজ শূন্যপ্রায়। এক ভয়ানক রোগ বিশ্বজুড়ে তাণ্ডব নৃত্য করে বেড়াচ্ছে। ডাক্তার সমরেশ সেন তাঁর ক্লান্ত চোখের পাতায় অন্ধকার নেমে আসলেও, সেবার প্রতিশ্রুতি নিয়ে পথ হাঁটছেন। সারা ভারতবর্ষের ডাক্তাররা একজোট হয়ে আন্দোলনে সামিল হয়েছেন—আন্দোলন শুধু নিজেদের অধিকারের জন্য নয়, মানবতার জন্য।
সমরেশের জীবনের সমস্ত ক্ষুদ্র স্বপ্ন গড়ে উঠেছিল তাঁর শিল্পপ্রেম ও সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে। ডাক্তারি তাঁর পেশা, কিন্তু মানবতার প্রতি দায় তাঁর জীবনের মূল চালিকা শক্তি। রোগীদের মুখে হাসি ফোটানোর চেয়ে বড় শিল্পের কাজ আর কিছুই হতে পারে না, এটাই তাঁর বিশ্বাস। তাঁর জীবনসঙ্গিনী মাধবীও একজন দক্ষ শিল্পী, গানের সুরে মিশিয়ে দেন জীবনের নানা রং। তাঁদের সম্পর্কের মূলে রয়েছে ভারসাম্য, শ্রদ্ধা আর সহযোগিতা।
অফুরন্ত রোগীর ভিড়। একের পর এক ঢেউয়ে ভাসছে পৃথিবী। সমরেশ সারাদিনের শেষে যখন হাসপাতালের বাইরে দাঁড়ান, তখন নিজের দেহ ক্লান্ত হলেও মন শক্ত। তাঁর চোখের সামনে ভেসে ওঠে সেই মুহূর্ত—এক বৃদ্ধা, মৃত্যুর দ্বারে দাঁড়িয়ে, কাঁদছিলেন কিছুক্ষণের মধ্যে বিদায় নিতে। সমরেশ তাঁর হাত ধরে বলেছিলেন, “আবেগকে দূরে সরিয়ে রাখুন। আপনাকে আমি ফিরিয়ে আনব।” সেই দিনটি ছিল এক নজিরবিহীন প্রতিজ্ঞার দিন।
ভয়াবহ পরিস্থিতি, কিন্তু মানুষ এক হয়ে লড়াই করেছে। রাস্তায় ক্ষুধার্ত মানুষের মুখে অন্ন তুলে দিতে দেখা যায় কিছু সমাজকর্মীকে। আর সমরেশ, হাসপাতালের শয্যায় মুমূর্ষুদের জন্য অক্লান্ত সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। কোনও রোগীকে ফিরিয়ে দেন না। তাঁর মনের গভীরে বদ্ধমূল ধারণা—“মানবতা যদি বাঁচে, পৃথিবীও বাঁচবে।”
সমরেশের জীবনের সমস্ত ক্ষুদ্র স্বপ্ন গড়ে উঠেছিল তাঁর শিল্পপ্রেম ও সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে। ডাক্তারি তাঁর পেশা, কিন্তু মানবতার প্রতি দায় তাঁর জীবনের মূল চালিকা শক্তি। রোগীদের মুখে হাসি ফোটানোর চেয়ে বড় শিল্পের কাজ আর কিছুই হতে পারে না, এটাই তাঁর বিশ্বাস। তাঁর জীবনসঙ্গিনী মাধবীও একজন দক্ষ শিল্পী, গানের সুরে মিশিয়ে দেন জীবনের নানা রং। তাঁদের সম্পর্কের মূলে রয়েছে ভারসাম্য, শ্রদ্ধা আর সহযোগিতা। এখন দুইদিন হয়ে গেল সমরেশ বাড়ি ফেরেননি। দিনরাত এক করে হাসপাতালের রুগীদের পাশে দাঁড়িয়ে তিনি নিজের পরিবারকেও ভুলে গেছেন। কিন্তু মাধবী ভোলেননি। তিনি জানেন, সমরেশের যত্ন নেওয়ার কেউ নেই। তাই আজ সকালে একটু সময় করে খাবার নিয়ে চলে এসেছেন হাসপাতালে। সমরেশের ক্লান্ত মুখ দেখে মাধবী চিন্তিত হয়ে উঠলেন। তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে, কাঁধে আলতো করে হাত রেখে বললেন, “তুমি কিন্তু একটুও বিশ্রাম নিচ্ছো না?” সমরেশ একটু হাসলেন, চোখে অপার ক্লান্তি। “সময় কোথায়?” উত্তর দিলেন। মাধবী কিছু না বলে তাঁর মাথায় স্নেহের হাত বুলিয়ে দিলেন। তারপর নিজের হাতে খাবার তুলে দিয়ে বললেন, “খাও, আমি তোমার পাশে বসে আছি।” সমরেশ মুখে কিছু বলতে পারেন না। এতদিনের কাজের চাপে তিনি যেন নিজেকে ভুলেই গিয়েছিলেন। কিন্তু মাধবীর উপস্থিতি তাঁর মধ্যে নতুন প্রাণের সঞ্চার করল। হাসপাতালের করিডোরে বসে, কাজের ফাঁকে মাধবী তাঁকে খাইয়ে দিচ্ছেন, আর সমরেশের চোখে জল এসে যাচ্ছে। কতদিন পর এমন এক মুহূর্ত পেলেন, যেখানে শুধুই তিনি আর মাধবী, কোনও রুগীর আর্তনাদ নেই, কোনও ব্যস্ততা নেই। সমরেশের মন ও শরীরের ভারসাম্য তাঁকে আরও শক্ত করে তোলে। জীবনের প্রতি তাঁর সহমর্মিতা দিন দিন বেড়েছে। মাধবীর দেওয়া ছোট্ট গানের সুর মাঝে মাঝে তাঁকে মনে করিয়ে দেয় জীবনের সূক্ষ্মতম মাধুর্যগুলো। এই ভারসাম্য তাঁকে শক্তি জোগায়, আবার তাঁকে নরম করে তোলে। তাঁর কাঁধে বিশাল দায়িত্ব—সামাজিক অবস্থা ও চিকিৎসার সেতুবন্ধনে দাঁড়িয়ে থাকা এই মানুষটি বুঝতে পেরেছেন যে, শুধু চিকিৎসা নয়, সমাজকে বাঁচানোই তাঁর কাজ। একদিন, মাধবী বলেছিল, “সমরেশ, তুমি ডাক্তারি করো, কিন্তু তুমি যেন সবসময় একজন শিল্পীর মতো বাঁচো।” সেই কথা আজও তাঁর জীবনের মন্ত্র হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এভাবে একের পর এক ঢেউয়ের আঘাত সামলে এগিয়ে চলে সমরেশ। তাঁর চোখে ভাসে মুমূর্ষুদের মুখ, যে মুখে এখন নতুন জীবন ফিরে আসছে। জীবনের প্রতি তাঁর অগাধ সহানুভূতি আর দায়িত্ববোধ তাঁর সবচেয়ে বড় শক্তি। সমরেশের মন ও শরীরের ভারসাম্য তাঁকে আরও শক্ত করে তোলে। জীবনের প্রতি তাঁর সহমর্মিতা দিন দিন বেড়েছে। মাধবীর দেওয়া ছোট্ট গানের সুর মাঝে মাঝে তাঁকে মনে করিয়ে দেয় জীবনের সূক্ষ্মতম মাধুর্যগুলো। এই ভারসাম্য তাঁকে শক্তি জোগায়, আবার তাঁকে নরম করে তোলে।
তাঁর কাঁধে বিশাল দায়িত্ব—সামাজিক অবস্থা ও চিকিৎসার সেতুবন্ধনে দাঁড়িয়ে থাকা এই মানুষটি বুঝতে পেরেছেন যে, শুধু চিকিৎসা নয়, সমাজকে বাঁচানোই তাঁর কাজ। একদিন, মাধবী বলেছিল, “সমরেশ, তুমি ডাক্তারি করো, কিন্তু তুমি যেন সবসময় একজন শিল্পীর মতো বাঁচো।” সেই কথা আজও তাঁর জীবনের মন্ত্র হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
এভাবে একের পর এক ঢেউয়ের আঘাত সামলে এগিয়ে চলে সমরেশ। তাঁর চোখে ভাসে মুমূর্ষুদের মুখ, যে মুখে এখন নতুন জীবন ফিরে আসছে। জীবনের প্রতি তাঁর অগাধ সহানুভূতি আর দায়িত্ববোধ তাঁর সবচেয়ে বড় শক্তি। তিনি মনে মনে গেয়ে ওঠেন “জীবনমরণের সীমানা ছাড়ায়ে,. বন্ধু হে আমার, রয়েছ দাঁড়ায়ে, এ মোর হৃদয়ের বিজন আকাশে. তোমার মহাসন আলোতে ঢাকা সে,………..।