রঙের বাহার
সুপর্ণা দত্ত
পৃথিবী জুড়ে দেখছি কত
আছে অনেক রঙের বাহার,
রঙের উৎস আছে কোথায়
আছে তাহা জানা কাহার?
রঙের উৎস হল আলো
যার কারণে সবকিছু রঙিন হল,
বিভিন্ন তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের তফাতে
বিভিন্ন রঙ ধরা পড়ে চোখেতে।
সূর্যের সাত রঙের মিশ্রণ
বর্ণালী রঙ দেখার মাধ্যম,
প্রকৃতিতে প্রাপ্ত খনিজ রঞ্জক
রঙের মাতৃপদার্থ বা বাহক।
তেল, জল,আঠা জাতীয় পদার্থ
রঙের মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার্য,
রঙ নেয় সাধারণত তুলির সাহায্য
সমতল পৃষ্ঠের উপরে তা প্রযোজ্য।
প্রায় আশি হাজার বছর আগে
প্রথম রঙ্গক আবিস্কারের মাধ্যমে
সাদা,কালো,লাল,হলুদ,বাদামী
পাঁচটি রঙের প্যালেট হয় জানি।
রঙ হল মানুষের জীবনের অংশ
রঙ ছাড়া জীবনটা বিবর্ণ বিধ্বংস,
হাসি কান্না সুখ দুঃখ নিয়েই জীবন
ব্যক্ত হয় অনুভূতি করে রঙকে বরণ।
লাল,কমলা,হলুদ বাদামী রঙ উষ্ণ
উত্তেজনা,উদ্দীপনা,প্রফুল্লতায় গণ্য,
ঠান্ডা রঙ হল নীল আর সবুজ
নিরাপত্তা,শান্তি ঠিক যেন অবুঝ।
বাদামী,ধূসর, কালো রঙ বারোমাসে
জীবনের দুঃখ, বিষণ্ণতা নিয়ে আসে,
রঙই বোঝায় মানুষের জীবন বর্ণন
ব্যক্তিগত সম্পর্কের সাধারণী করণ।
বয়স, মেজাজ, মানসিক স্বাস্থ্য
রঙের উপলব্ধিতে হয় প্রভাবিত,
ছোটবেলার পছন্দ লাল,কমলা
ধীরে ধীরে ফিকে হয় যখন বৃদ্ধবেলা।
চীন,ভারত,জাপানের চিকিৎসায়
বিভিন্ন রঙের ব্যবহার করা হয়,
কমলা বিষণ্ণতা,হলুদ ডায়াবেটিস
সবুজ আলসার,নীল-বেগুনী মৃগী।
বসন্তে হয় এক রঙের খেলা
লাগায় সবার মনে খুশির দোলা,
বসন্তের রঙে সাজে সবাই
প্রকৃতির রূপ হয় রঙিন তাই।
আকাশ যেন আগুন রঙে রাঙ্গা
নানান রঙের আবিরে মাখা,
লাল-নীল আর হলদে-সবুজ
মনকে করে তোলে অবুঝ।
শিমুল, পলাশ, কৃষ্ণচূড়া
অমলতাস আর হাসনুহানা
রাধাচূড়া,স্বর্ণশিমুল,পালামফুল
বসন্তেই ফোটে অশোক ফুল।
ফুলের আবির ফুলের রঙ
খেলি সবাই রঙের দোল,
বর্ণ-জাতি-ধর্ম বিভেদ ভুলে
বসন্ত উৎসবে মাতি মন খুলে।
আনন্দের মাঝে কিছু অঘটন ঘটে
মারামারি খুনোখুনি অশান্তি বটে
অহিংসা ভুলে কেউ হিংসায় মাতে
খুশির দোল ভেজে দেহের রক্তে।
বিশ্বজুড়ে আরও একটা রঙ আছে
যাকে নানা রাজনীতির দল বাছে,
ক্ষমতা বুঝে কেউ রঙ বদলায়
কাজ নয় শুধু রঙবাজী দেখায়।
ক্ষমতার জোরে যার চক্ষু রাঙ্গা হয়
ক্ষমতা হারালে মুখ বিবর্ণ হয়ে যায়,
রঙের বাহার আছে এই বিশ্ব জুরে
বর্ণালী স্থান পায় মানুষের মন জুরে।