আদিম কল্পনার স্বর্গলোক হতে বিজ্ঞান খুঁজে পায় হে দেবী!
তুমি আদিতে ছিলে বরফের স্বপ্ন, হিমালয়ের বুকে এক শ্বেতশুভ্র ধারা, শিবের জটায় বন্দি এক অতল রহস্য, তারপর ধীরে ধীরে নেমে এলে— জননী হয়ে, আশীর্বাদ হয়ে, হলাহল পেরিয়ে জীবন দানে উন্মুখ।
তোমার তীরে জেগে উঠেছে সভ্যতা, তোমার কোলে জন্ম নিয়েছে ইতিহাস, তোমার ঢেউয়ে ভেসেছে রাজসূয় যজ্ঞের ধূপ, ভাগীরথের তপস্যার প্রতিধ্বনি, দ্রৌপদীর লজ্জার কান্না, কর্ণের দানশীলতা, যুদ্ধের শঙ্খধ্বনি, আশ্রমের সন্ধ্যাবাতি— সবই মিশে আছে তোমার গভীর স্রোতে।
তীরে তীরে বৃক্ষশাখে পাখিদের কলকাকলি, নদীর বুকে মাঝি-মাল্লার গানের প্রতিধ্বনি, দুই কূলে বিস্তীর্ণ সমভূমি, নগর, বন্দর, বন-উপবন আর তীর্থক্ষেত্রে মানুষের সমাগম। তুমি যৌবনের স্বপ্ন, বার্ধক্যের বারাণসী, ইলিশ, খলিশ, রোহিতের প্রাণভরা জলধারা, কোটি কোটি প্রাণী, মানুষ আর শস্যক্ষেত্রের তৃষ্ণার বারি, আশ্রয়, আলো, অন্নের স্নেহদাত্রী— তুমি পুণ্যসলিলা গঙ্গা!