পরের দিন আসল সত্য ফাঁস হল। ননীগোপাল এর ছেলে কুহকিনীর পাল্লায় পড়েছে। সে ঠমক ঠমক চলে। সবসময়ই সামনের এক গাছা চুল নাচিয়ে কপালে ফেলে। আবার হাত দিয়ে সেটা তোলে। ছেলে বেণীমাধব তার প্রেমে পড়েছে।
প্রথম প্রেমের আকুতি কেটে প্রেম নেমে এসেছে বাস্তবের পটভূমিকায়। সেদিন ছেলেকে সে জানিয়েছে সরকারী চাকরি না পেলে তার পক্ষে বিয়ে করা অসম্ভব। তবে সে বেণীমাধব কে সুযোগ দিয়েছে। এখন কিছুদিন সে অন্য ঘাটে নোঙর বাঁধবে না।
ননীগোপাল জানে পুত নামক কোন নরক আছে সেখান থেকে মৃত্যুর পর উদ্ধার করে যে সে হল পুত্র। যখন বিয়ের পর বৌ এর বাচ্চা আসার নাম নেই তখন থেকেই ননীগোপাল এর খরচা শুরু। তারপর এ ডাক্তার ও ডাক্তার করে,রোজা বিজে দেখিয়ে, আর শেষে পুত্রেষ্ঠি যজ্ঞ করে তবে মুক্তি। ছেলে জন্মালো। শাঁখ বাজলো। আহা। সেই ছেলে মায়ের কানে ফুসমন্ত্র ঢালছে বাপকে মরতে বলো। নৈলে আর উপায় নেই।
নিশ্চয়ই এই বুদ্ধি ওই কুহকিনীর দেওয়া। ননীগোপাল মনে মনে বললে “শালা! যার শিল যার নোড়া/তারই ভাঙিস দাঁতের গোড়া”। ননীগোপাল মনে মনে ঠিক করল আর একবার যদি বৌ এই কথা বলে তবে ডিভোর্স দেবে বৌকে। তার মতো সিদেসাদা মানুষ কে ওরা পুঁইয়ে মরা ভেবেছে। দাঁড়াও। দেখাচ্ছি মজা। উচিত শিক্ষা দিতে হবে ওদের।
অফিসে এসে চুপ করে থাকে ননীগোপাল। ভীষণ বিমর্ষ দেখায় ওকে। ওর সহকর্মী ভবেশ বুঝতে পারে কিছু একটা হয়েছে। বললে “আরে ননীদা। কী ব্যাপার। মুখটা অমন বাংলার পাঁচ করে আছো কেন। এনি প্রবলেম”। “ধ্যাত্তেরি তোর প্রবলেম। ওসব প্রেম বলে কিছু আছে যদি বলিস তো আমার নামে ,,,,,,,,,,”বলেই ননীগোপাল বলে কোনও শালীকে বিশ্বাস করবি নারে। সারা জীবন গতরপাত করে যাদের খাওয়াচ্ছিস জেনে রাখিস সব গুপ্ত শত্রু। ভবেশ হাঁ করে তাকিয়ে থাকে। বলে “ডাল মে তো কুছ কালা হ্যায়। এই বয়সে প্রেম ট্রেম করো গুরু। খোশমেজাজে থাকতে হবে তো। তিনটে বছর কাটাতে পারলেই এককাঁড়ি টাকা পাবে গুরু। ওসব কারো ছেঁদো কথায় কান দেবে না। সব হিংসে করে। তুমি জাস্ট এনজয় করো । আর সমস্যা কী সেটা বলো”। ননীগোপাল হঠাৎই খুশি হয়ে গেল ভবেশের কথায়।হাসি হাসি মুখ করে বললে “রিটায়ারের পর কত পাবো একটু হিসাব করে বলবি”।