এইবছর অঘ্রাণ মাসে সবেমাত্র বিয়ে হয়েছে, ভুঁচকির একমাত্র ছেলে কুঁচকির। শ্বশুরবাড়ি থেকে কুঁচকি যৌতুক বাবদ নগদ কিছু নেয় নি। তাই ভুঁচকির বেয়াই মানে কুঁচকির শ্বশুর, কুঁচকিকে খাট, আলমারি, লেপ, কম্বল, আলনা, দোলনা সবই দিয়েছে। এই যৌতুক নিয়ে তাই ভুঁচকির মনে মনে একটু ক্ষোভও রয়েছে। কারণ ভুঁচকি তার বিয়েতে যৌতুক বাবদ নগদ এক লক্ষ এক টাকা কুঁচকির দাদুর কাছ থেকে আদায় করেছিলো। এই নিয়ে ভুঁচকির বৌ, মানে কুঁচকির মা পাঁচির সাথে ভুঁচকির মন কষাকষি রোজকার ঘটনা।
তা সেইদিন মানে ৩০শে ডিসেম্বর রাত্রিবেলা খাওয়াদাওয়ার আগে ভুঁচকি এবিপি আনন্দে ২০২৪-এর সারা বছরের বিশেষ বিশেষ ঘটনার ঝলক দেখছে। সঙ্গে একটু ছোট করে বিপির পেগ কাজু/চানাচুর/ছোলাভাজা দিয়ে চলছে। রাতে বৌমা, পানুর আব্দার মতো রেওয়াজি খাসি রান্না করেছে কুঁচকির মা পাঁচি। যদিও মাসখানেক ছেলের বিয়ে হয়েছে কিন্তু পাঁচি এখনও ছেলের বৌকে হেঁশেলের দায়িত্ব দেয় নি। খুব চালাক কিনা। কুঁচকি মাংস-ভাত পেট ভরে সাঁটিয়ে পাশের ঘরের বিছানায় শুতে গেছে। পাঁচি আর পানু, ভুঁচকির জন্য ওয়েট করছে।
কুঁচকি বিছানায় গিয়েই হাঁক পাড়ছে, “মা কম্বল কোথায়?”
পাঁচি, টেলিভিশন-এর আওয়াজ উপেক্ষা করে বলে উঠেছে, “দ্যাখ বাবা! কম্বল বিছানায় আছে।”
কুঁচকি আবার চেঁচিয়ে উঠে জোরে চিৎকার করে জিজ্ঞাসা করছে, “মা কম্বল কোথায়?”
পাঁচি আবারও বলে উঠেছে, “দ্যাখ বিছানায় আছে।”
কুঁচকি গলার স্বর সপ্তমে চড়িয়ে আবার একই কথা ওর মাকে জিজ্ঞেস করছে।
পানু, মা-ছেলের এই কাণ্ড দেখে মিটকি মিটকি হাঁসছে।
ভুঁচকি! অনেকক্ষণ ধরে পানু আর কুঁচকির এইসব কথা পাশের ঘর থেকে শুনছিলো। এবার ভুঁচকি, গ্লাসে এক সিপ দিয়ে ওদের দুজনের থেকেও উচ্চস্বরে বলে উঠেছেঃ
“পাঁচি ছেলেকে বলো যে, কম্বলের এখনও খাওয়া হয় নি। খেয়েদেয়ে আসছে। এখন হাতের কাছে যা পাচ্ছিস, তাই নিয়েই থাক।”
ভুঁচকির এই উত্তর শুনে কুঁচকি একদম চুপ। আর পাঁচি-পানু হেসে খুন।