ননীগোপাল এ পাড়ার নাম করা লোক। তাই বলে ভেবে বসবেন না জজ ব্যারিস্টার। আসলে কেন জানি না ননীগোপালকে সবাই চেনে। কদিন আগে ননীর গিন্নি আপশোষ করছিল ছেলেটার বিয়ে হচ্ছে না। ননীগোপাল বললে “এখনকার মেয়ে। আগে দেখবে সরকারী কাজ করে কিনা পাত্তর। ওসব প্রেম পীরিত সব টাকার খেল। ভালোবাসার মৃত্যু হয় টাকা না থাকলে।” ননীগোপাল এর বয়স সাতান্ন। অবসরের আর তিন বছর আছে। হঠাৎই ওর বৌ কোত্থেকে জেনেছে চাকরি করতে করতে মরে গেলে বৌ পেনশন পাবে। আবার ছেলে চাকরি পাবে। সেদিন অফিস থেকে বাড়ি ফিরতেই ননীগোপাল এর কপালে জুটল গরম বেগুনী আর মুড়ি। ননীগোপাল এর সন্দেহ হল। অন্য দিন এক কাপ চা এর জন্য হেদাতে হয়। আর আজ নিজের কপাল দেখে নিজের হিংসে হচ্ছে।
বৌ আজ সিরিয়াল দেখেনি। গা ঘেঁষে বসলে। ননীগোপাল কিছুই বুঝতে পারছে না কী ব্যাপার। হঠাৎই বৌ বললে “তোমার অনেক বয়স হল। জীবনের সব তোমার দেখা হল”। ননীগোপাল দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে মুখ ফসকে বলে ফেলেছে “হ্যাঁ। এখন ভালোয় ভালোয় পরপারে যেতে পারলে হয়”। ব্যাস! ক্যাচিং কাকে বলে। বৌ বললে “তুমি মরে যাও। ছেলের জন্য এটুকু করতে পারবে না।সব বাবাই ছেলের জন্য করে। তুমি তাহলে মরে যাও প্লিজ। ছেলের সরকারী চাকরী হলে বিয়েটা হবে। আর তোমার জীবন তো কেটেই গেছে বলো”।
এই হল ধর্ম পত্নী। ফুলশয্যার ঘরে যাকে দেখে আহ্লাদে গদগদ হয়েছিল ননীগোপাল আজ তার প্রকৃত রূপ দেখলে। হাসছে দেখো। যেন রামায়ণের চেরী। খুব মনখারাপ হয়ে গেল ননীগোপাল এর। তার এ কী হাল গো।