‘আর কত পথ হাঁটলে পথিক হওয়া যায়’, আর কত মৃত্যু হলে’….. কতজনে আরও কত কী বলে! এতদিন এভাবেই চলছিল মাথা নত করে!
এক বৃদ্ধ বিছানায় শুয়ে শুয়ে হা-হুতাশ করে অবশেষে চলে গেলেন! বলে গেলেন- ‘তিলোত্তমা’, এই ঘুমন্ত দেশলাই কাঠিতে বারুদ ছুঁয়ে দিলাম, মশাল হয়ে জ্বলে উঠো নগর ও প্রান্তরে”!
‘তিলোত্তমা’ কথা রেখেছে, জ্বলছে দাবানল হয়ে, ছড়িয়ে পড়েছে নলদেহারি থেকে বাকিংহাম প্যালেসের অন্দরে, প্রতিটি অন্তর থেকে বন্দরে!
দখল হয়েছে রাত, শক্ত হয়েছে হাত, মাটি কামড়ে পড়ে আছে আশি থেকে আট! ওরা কেঁপেছে নির্ঘাত!
কিন্তু বিচার???
সে-ও কি দখল হয়ে যাবে! না কি দখল নিতে হবে! অরিজিৎ বলছে- ‘আর কবে’?
আমরা আশা ছাড়িনি, এখনও হারিনি, হেঁটে চলেছি গড়িয়া থেকে শ্যামবাজার, মন্দির থেকে সিঙ্গুরের মাজার!
আমি ‘তিলোত্তমা’র বাবা, আমি ‘তিলোত্তমা’র মা। আমি ছিলাম ওর ভাই, ও ছিল ‘নির্ভয়া’র বোন।
আমরা গোটা পরিবার এগিয়ে চলেছি এইট-বি’র দিকে, রাগ আর দুখে! ভাঙা বুকের ভিতরে আস্ত একটা আওয়াজ- ‘তিলোত্তমা’র বিচার চাই’…..
হঠাৎ ঘুরে দেখি- আমারই ঠিক পিছনে ঐ ছেলেটি! না, ঐ মেয়েটি! এটাও ঠিক বলিনি, আসলে ও এক তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ! না মহিলা, না পুরুষ! শুধুই মানুষ! কোনও এক মায়ের সন্তান! ওঁর তো তা-ও নেই! তবুও ও আছে মিছিলে!
ওঁকে এভাবে বিচার চাইতে দেখে আমরা ‘গর্বিত বাবা’রা খানিক কুঁকড়ে গেলাম!