ভারতবর্ষের ১৪৫ কোটি মানুষের মধ্যে ১৩৫ কোটিই অশিক্ষিত। তার মধ্যে আমিও পড়ি। ক্লাস ইনফ্যান্ট ফার্স্ট টার্মিনাল ফেল। এদের মধ্যে ১০ কোটি পশ্চিমবঙ্গে বাস করে। এরা যখন জ্ঞান দেয়, হাসি পায়। নিজেকে অশিক্ষিতের চরম মনে হয়। প্রচন্ড হতাশ লাগে। মনে হয় থুথু ফেলে ডুবে মরি। মানে চুল্লু ভর পাণিমে ডুবে মরা যাকে বলে। এই সহজ সরল সত্যটা ছোটবেলায় যদি গুরুজনেরা মাথায় ইনজেক্ট করে দিতো। তাহলে এই দিন দেখতে হোতো না। আমিও এক অশিক্ষিত যে কখনও কখনও নিজের অন্তাতেই দাবি করে ফেলি, আমি শিক্ষিত। কিন্তু খেয়াল থাকে না যে আমি বাংলার ওই ১০-১২ কোটি মূর্খের মধ্যে পড়ি যারা দিনরাত এককরে প্রমাণ করে চলেছে, আমি শিক্ষিত/জ্ঞানী / সবজান্তা গামছাওয়ালা। দুঃখের বিষয় হলো এই ১০-১২ কোটি বাংলাবাসী যখন সর্বত্র জ্ঞান বিতরণের একটা ফেক প্রচেষ্টা চালায় তখন তাদের জন্য বড়ো করুণা হয়। মায়া লাগে। মনে হয়, এইরে আবার উঠে পড়ে লেগেছে, নিজেকে জাহির করার জন্য। বাঙালি নাকি চিরকালই জ্ঞানী। তার নমুনা তো চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি, অহঃরাত্র। হ্যাঁ, এটা সত্যি যে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, স্যার আশুতোষ মুখার্জি, আচার্য্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়, মেঘনাদ সাহা, সত্যেন্দ্রনাথ বোস, আচার্য্য জগদীশ চন্দ্র বোস, রবিঠাকুর, শরৎচন্দ্র, বঙ্কিমচন্দ্র বাঙালি ছিলেন। তারমানে এটা প্রমাণ করে না যে বর্তমানে তাঁদের উত্তরসূরীরা ওনাদের মতো পন্ডিত বিদগ্ধ ব্যক্তিত্ব। ওই বাঙালি মানুষগুলোর মেরুদণ্ড বলে একটা বস্তু ছিলো যা ওনারা কোনদিনই বিক্রি করেন নি। জীবনে যে কটা দিন বেঁচে ছিলেন কোনো অন্যায়কামী শক্তির কাছে মাথা নত করেন নি। ঠিক এই কারণেই বর্তমান ১০-১২ কোটি বাংলাবাসীকে দেখে মনে হয় যে ওই মানুষগুলো বাংলা বা ভারতে জন্মগ্রহণ করে ভুল করেছিলেন।
একটা ভুল, আরেকটা ভুলকে টেনে আনে। শেষ পর্যন্ত তাইই হবে। ভুলে ভরা বাংলা হয়ে যাবে। আর হ্যাঁ, তারজন্য আমিও এক ইনফ্যান্ট ফার্স্ট টার্মিনাল ফেল নিজেকে দায়ী করতে বাধ্য হবো।