ক্ষত
——-
শ্যামাপ্রসাদ সরকার
…’আচ্ছা দাদা আপনি ঠিক এখানে কোন বাড়ীটা খুঁজছেন বলুন তো?’
এতক্ষণ ধরে গোটা পাড়াটা যেন অচেনা লাগছে। লাল লাল রঙের সব কটা বাড়ীগুলোতে ইদানীং অন্য ফ্যাকাশে রঙের পোঁচ পড়েছে।
এমনকি সামনের ফাঁকা জায়গাটায় আর আগের মত ক্রিকেট বা লুকোচুরি খেলেনা বাচ্চারা।
বাবার হাতে পোঁতা সেই ঝাঁকড়া জবাগাছটাও উধাও। এখন সেখানে একটা অতি বিসদৃশ বেঞ্চ পাতা।
দূর থেকে একবার ঐ জানলার দিকে চোখ চলে গেল। সেইখানে বহুযুগের প্রত্যাশী নয়নজোড়াও আজ আর নেই।
এই বিশ’বছরে সবটাই বদলে যাবে এটাই স্বাভাবিক। আসলে সবকিছু বদলে দিয়েছে মহাকাল। ও হাঁটতে হাঁটতে একজায়গায় এসে খানিক থমকে যায় ।
সেখানে ফ্যাকাশে রঙের ভিতর থেকে উঁকি দিচ্ছে সেই লাল দেওয়াল এর একটি রংচাপা অংশ।
ভারী ক্রিকেটের বল লেগে একটা ছোট্ট চোকলা সেদিন উঠে এসেছিল বোলারের বুকে কালবৈশাখীর মত সেই পৌরুষকে সম্মান জানিয়ে।
মুহূর্তে বিশ’বছর আগের এই ক্ষতটি যেন বিশ’বছর পরের বুকের ভেতর জমে থাকা ওর ক্ষতটিকে চিনতে পারল।
যদিও সময় সব বদলে দিতে পারে..কিন্তু কখনো কখনো কিছু দাগ….ক্ষতকে বেশ চিনতেও পারে। আবার সেখানে হাত রাখে..ভালো ও বাসে।
নাঃ, এরপর আর কী-ই বা চাইতে পারে সেই নবীন কিশোর? ভুবনডাঙার মেঘলা আকাশের নীচে তার মাথার চুলেও তো একটু একটু পাক ধরেছে এখন।
—oooXXooo—