“জীবে প্রেম করে যেই জনজন সেই জন সেবিছে ঈশ্বর” এই আদর্শবাণীটি স্মরণে রেখে কত লোক অসহায় মানুষের পাশে থেকে সেবার মাধ্যমে পায় বড্ড পরম তৃপ্তি।মানুষ মানুষের জন্য।বাস্তবেই কিছু কিছু মানুষের সন্ধান পাওয়া যায়,যারা “দিন আনে দিন খায়”।কোন দিন বা উপার্জনের অভাবে থাকতে হয় অর্ধাহারে তবুও তারা সুযোগ পেলেই এগিয়ে আসে দুস্থ মানুষের সেবায়।প্রকৃত সেবাই যাদের মূল লক্ষ্য তাদের আর্থিক সামর্থ্য না থাকলেও শ্রম দিয়ে সেবা করার প্রচেষ্টায় থাকে সজাগ ও সচেষ্ট।জীবনের পড়ন্ত বেলায় পৌঁছে খুঁজে পেয়েছি এমন কিছু মানুষের সন্ধান।নিজের প্রবল ইচ্ছা থাকলেও ব্যক্তিগতভাবে আমি তেমন কিছু করতে না পারলেও মনে মনে করি তাঁদের সব সময়ে শ্রদ্ধা।কারণ আজকের স্বার্থান্বেষী এই সভ্য সমাজে সত্যিকারে এই ধরনের সজ্জন ব্যক্তিদের বড্ড অভাব। আমরা প্রায়ই বাস্তবে দেখতে পাই অনেক অর্থশালী ব্যক্তিরা দুস্থ অসহায় মানুষের সেবায় কোন কিছু দান করলেই প্রচার করে তার থেকে বেশি।আবার এমন মানুষেরাও আমাদের মাঝে আছেন যাঁরা প্রচারের অন্তরালে থেকেও অবিরত করে চলেছেন দুস্থ মানুষের সেবা।তাঁরা চিরকালই প্রচার বিমুখ।নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গিতে সেই সব সজ্জন ব্যক্তিদের সেবামূলক এমন কার্যপ্রণালী প্রত্যক্ষ করার পরেও স্থান কাল পাত্র বিশেষে ঐসব প্রচারের মাঝে চলে পক্ষপাতিত্ব।অনেক সময় আপন পছন্দের সৎ ও সজ্জন ব্যক্তির এমন মহান মানবিকতার মহিমা প্রচারের কথা শুনলেই কিছু কিছু ঈর্ষান্বিত ব্যক্তি সমর্থনে দেখায় কার্পণ্যে কাতরতা।কাখনো বা হয়ে ওঠে তাদের গাত্রদাহ-। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মানুষের সংস্পর্শে এসে অতি সহজেই উপলব্ধি করেছি বিভিন্ন মানুষের প্রকৃত চরিত্র।আমি সর্বদাই সম মনোভাবাপন্ন ব্যক্তিদের প্রতি হই আকৃষ্ট আর তার বিপরীত ধর্মী হলে হই বিকর্ষিত। সৎ নীতির সজ্জন ব্যক্তিদের সাথে সদ্ভাব গড়ে তোলার চেষ্টা করি।মানুষ হয়ে জন্ম নিয়ে মানুষের জন্য কিছু সৎকর্ম করে যাবার মনের ইচ্ছা থাকলেও সব সময়ে তা সম্ভব হয়ে ওঠেনা।বর্তমান যুগে বেশিরভাগ কাজ করতে গেলেই আগে চাই অর্থ।অর্থ না থাকলে সব কাজ সঠিকভাবে সুসম্পন্ন হয় না।কিছু কিছু ক্ষেত্রে তেমন আর্থিক অনুদানের অসমর্থে নিরব দর্শক হয়ে মনে মনে পেয়েছি কষ্ট।আর যে সমস্ত কাজ কায়িক শ্রম দিয়ে সার্থক করে তোলা যায় আমি হই তার নিত্য সঙ্গী।এমন ক্ষেত্রে বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন সচ্ছল ও সজ্জন ব্যক্তিদের কাছ থেকে পেয়েছি সৎ উপদেশ।হয়েছি তাঁদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা দেখে উৎসাহিত।আজ তেমনি এক সজ্জন ব্যক্তি সম্পর্কে যতটুকু জানতে পেরেছি সেই সম্পর্কে সামান্য কিছু আলোকপাত করছি।দীর্ঘদিন ফেসবুকের বন্ধু হওয়ার সুবাদেও প্রথমে অনেক কিছুই জানতে পারিনি।প্রথম সামনাসামনি সাক্ষাৎ হয় মুরারি পুকুরে এক বিশেষ সেবামূলক আলোচনা সভায়।উক্ত সভায় ২৫ জনের মত সদস্য উপস্থিত ছিলেন।সেই সভায় উপস্থিত থাকার একান্ত অনুরোধ পেয়ে সেখানেই খুঁজে পেলাম শ্রদ্ধেয় এই গৌতম কুন্ডু মহাশয়কে।যাঁর সম্পর্কে আজ দু চার কথা লিখে তৃপ্তি পেতে মন চাইছে। পেশায় গৌতম বাবু একজন ম্যাটাডোর ড্রাইভার। থাকেন কলকাতার পাইকপাড়ায়।স্বামী স্ত্রী আর এক ছেলেকে নিয়েই তাঁর সংসার।ছেলেবেলা থেকেই “জীবে প্রেম করে যেই জন সেই জন সেবিছে ঈশ্বর” এই দীক্ষায় হয়ে ওঠেন অনুপ্রাণিত।দুস্থ অসহায় মানুষের সেবায় মন হয়ে উঠতো বড্ড ব্যতিব্যস্ত।স্বল্প উপার্জনের বেশির ভাগটাই ব্যয় করতেন দুস্থদের সেবায়।দুস্থ মানুষের দুঃখ কষ্ট দেখলেই তাঁর মন কেঁদে উঠত।তাঁর আর্থিক স্বচ্ছলতা কিন্তু ততটা ভালো ছিল না। ১৯৮৭ থেকে ১৯৯৮ এই ১১ টি বছর অতি সাধারণ একটা ব্যবসায়ে যুক্ত থেকে করেছেন দিনানিপাত।ওই সময়ে নিজের একখানা সাইকেলে করে এলাকা ভিত্তিক বিভিন্ন চায়ের দোকানে দোকানে মাদার ডেয়ারি দুধ বিক্রি করতেন।দিনে দিনে এই ব্যবসার অগ্রগতিতে মাসিক আয়ও একটু আধটু বাড়তে থাকে।কঠোর পরিশ্রমে কস্টার্জিত এই পয়সায় সংসার প্রতিপালনের মাঝে মাঝে করেছেন দুস্থ মানুষের সেবা।এই সেবাকেই তিনি মনেপ্রাণে বেছে নিয়েছিলেন!এই ব্যবসা চলাকালীন ১৯৯৩ সালে তিনি বিবাহ সূত্রে আবদ্ধ হওয়ার পর সংসার প্রতিপালনের দায়িত্ব গেল আরও বেড়ে।যথেষ্ট কর্মঠ এবং পরিশ্রমী ব্যক্তি হিসেবে তাঁর যথেষ্ট সুনাম ছিল।এই সুবাদে সাফল্যের দিকে এগিয়ে যেতে যথেষ্ট সাহায্য করেছে। সংসার জীবনের বন্ধনে আবদ্ধ হবার পর ১৯৯৫ সালের জানুয়ারিতে সংসারে ঘটলো নতুন অতিথির আবির্ভাব।গৃহলক্ষীর কোল জোড়া করে এলো পুত্র সন্তান।সবাই খুব খুশি।ধীরে ধীরে ছেলেও বড় হতে লাগলো।শুরু হলো লেখাপড়া।স্কুলে নিয়ে যাওয়া- নিয়ে আসা সবই করতে হয় খোকার মাকে।আর খোকার বাবা সাংসারিক খরচাদি হোম মিনিস্টারের হাতে তুলে দিয়েই যেন দায় মুক্ত।এই সময়ে ১৯৯৯ সালের নভেম্বরে তিনি কিনলেন একটা ম্যাটাডোর। সেই গাড়ির ড্রাইভার তিনি নিজেই।শুরু করলেন ট্রান্সপোর্টের ব্যবসা।তবুও ইতিমধ্যে তিনি যে বিভিন্ন সেবামূলক সামাজিক কাজের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে পড়েছেন তাই ষ্টান্ডে সব সময়ে উপস্থিত থেকে পরিবহনে সঠিকভাবে পরিসেবা দিতে পারেননি।প্রথম প্রথম রেডিমেড বস্ত্র ব্যবসায়ে জড়িত ব্যবসায়ীদের মালপত্র নিয়ে হরিসাহা হাট এবং হাওড়া মঙ্গলাহাটে পরিবহনের পরিষেবা দিয়েছেন।কিন্তু অনেক সময় এই নির্দিষ্ট হাটের দিনেও সেবামূলক অনুষ্ঠান থাকায় তিনি হাটে উপস্থিত হতে পারতেন না।ফলে নির্দিষ্ট ওই সব বস্ত্র ব্যবসায়ীদের সাময়িক অসুবিধার সম্মুখীন হতে হতো।এই পরিস্থিতির মধ্যে তিনি হাটের এই পরিবহনের পরিষেবা থেকে বেরিয়ে আসেন।এবং নিজে স্বাধীন মত ম্যাটাডোর ষ্টান্ড থেকে পরিষেবা প্রদান করা শুরু করেন।তবুও যখন বিভিন্ন ক্যাম্পে সেবামূলক অনুষ্ঠান থাকতো তখন তিনি আর ষ্টান্ডে পরিষেবা দিতে যেতেন না।এইভাবে চলতে থাকে দিনগুলি।ঠিক এই অবস্থার মধ্যে নিজের সন্তানকে স্কুলে নিয়ে যাওয়া -নিয়ে আসা তিনি করতে না পারায় তা করতে হয়েছে ছেলের মাকে।তাই অনেক সময় বিভিন্ন কাজের চাপে নিজের পক্ষে সবদিকে সামলানো কষ্টকর হয়ে পড়াতে সে কখনও হয়ে পড়েছে ক্ষণিকের জন্য অসন্তুষ্ট।তবুও ক্ষোভ সামলিয়ে মানিয়ে নিতে হয়েছে।কারণ ইতিমধ্যেই সে বুঝে গেছে তার পতিদেবতা সংসারের থেকেও মানবসেবাকেই দিয়ে ফেলেছে অগ্রাধিকার।যে যাকে নিয়ে সংসার করে সেই বুঝতে পারে তার প্রকৃত পছন্দ-অপছন্দ।বিবাহিত জীবনে প্রবেশ করে প্রথম প্রথম এমন সেবামূলক কাজে সম্পূর্ণ সন্তুষ্ট না হলেও পরবর্তীতে তা মনে প্রানে মেনে নিয়েছে।এমনই সেবা মূলক কাজে বিভিন্ন সময়ে তিনি গিয়েছেন ডোমজুড়ের দক্ষিণ বাড়ি রাজাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।সেখানে অনুষ্ঠিত হয় প্রতিমাসের প্রথম ও তৃতীয় রবিবারে মেডিকেল ক্যাম্প।এই ক্যাম্পে ভারত সেবাশ্রম সংঘের অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে হোমিওপ্যাথিক এবং এলোপ্যাথিক চিকিৎসার পরিসেবা দেওয়া হয়।সেখানে চিকিৎসার সাথে প্রদান করা হয় বিভিন্ন রকমের ওষুধ।মূলত এই সেবামূলক মেডিকেল ক্যাম্পের তত্ত্বাবধানে থাকেন দক্ষিণ কলকাতার সুদীপ্তবাবু।মানুষ মানুষের জন্য এই কথাটিকে স্মরণে রেখে সেবামূলক এই প্রচেষ্টার জন্য উনাকে অনেকেই যথেষ্ট শ্রদ্ধা করেন।এই মেডিকেল ক্যাম্পের সঙ্গে যুক্ত সকলেই এমন পরিষেবায় পান মানসিক পরম পরিতৃপ্তি।এছাড়াও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার গোবিন্দপুর আবাদ আরশিনগর জোৎস্নাময়ী বিদ্যাপীঠে চলে মাঝেমধ্যেই সেবামূলক অনুষ্ঠান।সেখানকার আরশিনগর অরিওম সেবাশ্রমের আচার্য প্রতুনু ভট্টাচার্য মহাশয় এই আশ্রমটি পরিচালনা করেন।ছোট ছোট দুস্থ শিশুদের মাঝে যথার্থ শিক্ষা প্রদান করে তিনি করে চলেছেন প্রতিনিয়ত সেবা।তাতেই পান তিনি পরম পরিতৃপ্তি!এছাড়াও গৌতম বাবু অন্যান্য সেবকদের সাথে নিয়ে বিভিন্ন সময়ে চলে যান বাঁকুড়ার ছাতনা ব্লকের প্রত্যন্ত ফুলবেড়িয়া গ্রামে,আলিপুরদুয়ারের প্রত্যন্ত অঞ্চল টোট পাড়ায়।সেখানে কম্বল সহ শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়।সেই সঙ্গে শিশুদের জন্য শিক্ষার সামগ্রীসহ নর নারায়ন সেবার ব্যবস্থাও করা হয়।এই সমস্ত সেবামূলক কাজে সংগৃহীত অর্থ ও জামাকাপড় অনেক সময়ে অনেকেই দান করেন।সেই সমস্ত সামগ্রী সংগ্রহ করে সকলে মিলে পৌঁছে দিয়েছেন তথাকথিত প্রত্যন্ত অঞ্চলের অসহায় দরিদ্র মানুষের মাঝে।আজ বার বার মনে পড়ছে একটা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন-“আমি এই কাজগুলি করি জাস্ট একজন পিওনের মত হয়ে।অনেক ব্যক্তি আছেন যাঁরা সাহায্য করলেও এমন প্রত্যন্ত অঞ্চলে উপস্থিত হতে পারেন না।তাই তাঁদের হয়ে আমি এই সেবামূলক কাজ করে পরম তৃপ্তি পাই বলেই বারেবারে ছুটে আসি মানুষের সেবায়”।কেউ কিছু করে শুধু স্বার্থে আর কেউবা করে নিঃস্বার্থে।আজকের সমাজে স্বার্থান্বেষী মানুষের সংখ্যাই বেশি পরিলক্ষিত হয়।সমাজে নিঃস্বার্থে কাজ করা মানুষের সংখ্যা অনেক কম।প্রাথমিকভাবে আমি এ ব্যাপারে নানা রকম খবর নেওয়া শুরু করলাম। যখন জানতে পারি বহুদিন ধরেই তিনি চক্ষুদানের ব্যাপারে মানুষকে অনুপ্রাণিত করার জন্য বিভিন্ন সময়ে নিয়েছেন বিভিন্ন উদ্যোগ কিন্তু তাতেও তেমন সাড়া না পাওয়ায় তিনি পিছিয়ে যাননি।অন্ধ মানুষের চোখে দৃষ্টি ফিরিয়ে আনার জন্য মনেপ্রাণে চালিয়ে গেছেন নানান প্রচেষ্টা কিন্তু সমাজের অনেক শিক্ষিত ব্যক্তিরাও এমন মহৎ কাজের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেও অনেক সময়ে অনিহা দেখিয়ে করেছেন বিরুদ্ধচারণ।অনেকেই থেকেছে নিরুত্তর।কারও কারও স্পষ্ট বক্তব্য শুনতে হয়েছে- “মৃত ব্যক্তির চক্ষুদান করলে পরবর্তীতে ওই ব্যক্তির যখন জন্ম হবে তখন সে অন্ধ হয়ে জন্মাবে”।ভাবতেও অবাক লাগে একবিংশ শতাব্দীতে বিজ্ঞানের জয়যাত্রায় কিছু শিক্ষিত মানুষও এমন কুসংস্কারে আজও জড়িয়ে রয়েছে।আবার ওই মৃত ব্যক্তির দান করা চোখ দিয়ে যখন একজন অন্ধ ব্যক্তি ফিরে পায় দৃষ্টি তখন তার থেকে তার কাছে আর কিইবা হতে পারে পরমপ্রাপ্তি!তথাকথিত ওই কুসংস্কারাচ্ছন্ন ব্যক্তিরা চাক্ষুষ এই দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাওয়া দেখেও থেকে যায় নিরব নির্লিপ্ত।ভাবতেও অবাক লাগে বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে আমরা দিনে দিনে শিক্ষিত হলেও এ কোন শিক্ষায় আমরা আচ্ছন্ন হয়ে আছি।আমাদের ভেতর থেকে আজও কেন এই অন্ধ কুসংস্কার দূর করতে পারছি না।মানব সেবার দীক্ষায় দীক্ষিত হয়ে এমন পরিস্থিতিতে তিনি প্রচন্ড বিচলিত হয়ে পড়লেন।মনে মনে ব্যথা পেলেও তিনি কিন্তু পিছিয়ে থাকেননি।ঠিক এমনই সময়ে তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন-যে পরিবারের সিদ্ধান্তে মৃত ব্যক্তির চক্ষুদানে সম্মত হবেন সেই মৃত ব্যক্তির অন্তিম যাত্রায় পরিবহনে ম্যাটাডোর ভাড়া একটি পয়সাও তিনি নেবেন না।এমন প্রস্তাবে কোন পরিবার রাজি হলে তিনি ব্যক্তিগতভাবে নিজের স্বার্থ ত্যাগ করে বিনা পারিশ্রমিকে সেই মৃত ব্যক্তির শব পরিবহন করে নিঃস্বার্থ পরিষেবা দিয়েছেন।কত বড় মানবিক মানসিকতা থাকলে এমনটা করতে পারেন ভাবলেও বুক ভরে ওঠে!কিন্তু দুঃখ লাগে সমাজে এমন চাক্ষুষ নিদর্শন দেখেও অন্যেরা পারেনা এই ধরনের শিক্ষা নিতে।গৌতম বাবুর ম্যাটাডোরের সম্মুখেই লিখে দিয়েছেন SERVICE TO MAN – SERVICE TO GOD “মরণোত্তর চক্ষুদান করুন”।ম্যাটাডোরের গায়ে লেখা বাংলা হরফে জ্বলজ্বল করছে-“মরণোত্তর চক্ষুদান করে দৃষ্টিহীনকে পৃথিবীর আলো দেখিয়ে অমরত্ব লাভ করুন।চক্ষুদানকারীর অন্তিম যাত্রায় বিনা খরচে পরিবহন পরিষেবা দেওয়া হয়।”এমন উদ্যোগ দেখে গৌতমবাবুর আড়ালে আবডালে অনেকে খুঁজে পাবার চেষ্টা করেছে এমন ফ্রী পরিসেবা দেওয়ায় তার কি লাভ?নিঃস্বার্থে এমন পরিসেবায় দীর্ঘদিন ধরে গৌতমবাবুর এমন মহৎ কর্ম দেখে ব্যারাকপুরের “দিশা আই হসপিটাল প্রাইভেট” এর তরফ থেকে প্রভা ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ডাঃ রানী বিশ্বাস তাঁকে বিশেষ সার্টিফিকেট সহ সুন্দর একটি সম্মাননা স্মারক দিয়ে সম্বর্ধিত করেন।দীর্ঘদিনের এই পরিষেবার মাঝে এমন সম্মর্ধনা পেয়ে তিনি হয়ে উঠলেন আরও অনুপ্রাণিত।মরণোত্তর চক্ষুদানে অনিচ্ছুক ব্যাক্তিদের মাঝে জাগিয়ে তুলতে থাকেন এই চক্ষুদান সম্পর্কে সচেতনতা।দিশা আই ব্যাংকের সাথে সাথে তিনিও প্রচার করতে থাকেন- “মৃত্যু তো থাকবেই তবুও মৃত্যুর মাঝে থাকে জীবনের জয় গান।মৃত্যুর পর চোখ দুটি দান করুন,রেখে যান আপনার সামাজিক উত্তরাধিকার- -” আসুন আমরাও কোনরকম পক্ষপাতে পরাস্ত না হয়ে নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গিতে মহান মানব সেবার এই আদর্শকে আঙ্গুল তুলে দেখিয়ে জেগে ঘুমানো স্বার্থান্বেষী ব্যাক্তিদের সজাগ করায় সচেষ্ট হয়ে উঠি—–।